somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সম্পর্ক- ৪

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়ে বলতে গেলে আমার বন্ধুরা সবার আগে চলে আসবে। সম্পর্কের টানাপড়েনের অনবদ্য উদাহরন তো ওরাই। আমার জীবনে ওদের প্রভাবটা অনেক অনেক বেশি ছিল। আমার আনন্দঘন মুহূর্তে, আমার খারাপ সময়ে ওদের সহবস্থান আমার বন্ধুর পথকে অনেক মসৃণ করেছিল। ওদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ আমার এক জীবনে শেষ করা সম্ভব হবে না। আমি আমার এই বন্ধু গুলিকে আর আমার পেরিয়ে আসা সময় গুলোর শুন্যতা অনুভব করি হৃদয় থেকে। ওদের শুন্যতা অপূরণীয়। ওদের সাথে টানাপড়েনের জন্য আর কেউ নয় খোদ আমি নিজেই অনেকাংশে দায়ী। বন্ধুদের কথা বলতে গেলে সবার আগে মেয়েদের দিয়েই শুরু করতে হয়। আর আফরিন থাকবে সবার উপরে। এই মেয়েটা যে এত ভালো, আমি আমার জীবনে এত ভাল মানুষ দেখি নি। ওর সাথে সারাদিন ঝগড়া করতে করতে ভালো বন্ধুত্ব হয়েছিল। ওর সাথে বন্ধুত্তের ধরনটা এতটাই নিবিড় ছিল যে আমার মাথায় থাকত না যে ও ছেলে নাকি মেয়ে। আর সে জন্যই পারিপার্শ্বিকতার লোলুপ দৃষ্টি সবার আগে ওর উপরেই পরেছিল। যাকে মন প্রান দিয়ে ভালবাসতাম তার সন্দেহের তীর আমার এই বন্ধুটিকে আমার কাছ থেকে অনেক দূরে সরিয়ে নিয়েছে। ওকে দূরে ঠেলতে আজ থেকে কয়েক বছর আগে আমার মিথ্যা কথোপকথন যথেষ্ট ছিল। আমি জানি না আমাদের বন্ধুত্তের অবসানে ওর মনে কোন কষ্ট আছে কি না, কিন্তু এখনও আমি আমার এই বন্ধুর জন্য ভেতর থেকে শুন্যতা অনুভব করি। আমার অন্যায়ের প্রথম শিকার ও ছিল। আমাকে ও কোন দিন ক্ষমা করবে কিনা জানি না। সবচেয়ে বড় কথা ও আমাকে কি ক্ষমা করবে, আমি নিজেই তো নিজেকে ক্ষমা করতে পারি না। আমার স্বার্থপরতার সবচেয়ে কঠিন শিকারটা সম্ভবত সোহেল। স্কুল জীবনে আমার যত কাছের বন্ধু ছিল, সোহেল তাদের সবার থেকে একটু হলেও এগিয়ে ছিল। আমার ভাল কাজ, ফাজলামি, শয়তানি সব কিছুতেই নীরব সমর্থন ছিল ওর। ও আমার জন্য কি করে নি? মনে পড়ে এখনও, আব্বু যখন ক্রান্তি লগ্নে, ডাক্তার ঘন ঘন রক্ত দেয়ার কথা বলত, এমনও সময় গেছে শীতের সকালে আমার জন্য বাস স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করত। আমার সাথে হাসপাতালে গিয়ে রক্ত দেবে। আব্বু মারা যাওয়ার আগে যখন কোমায় ছিল, সারাটা রাত আমার পাশে ছিল। মারা যাওয়ার পর আব্বুর মরদেহ নিয়ে যখন গাড়িতে উঠলাম আমার পাশে সারাটা ক্ষণ ছিল। আব্বুকে গোসল করান থেকে কবরে নামানো পর্যন্ত আমার এই বন্ধুটা আমাকে এক মুহূর্তের জন্য ছেঁড়ে যায় নাই। আমার প্রতি নিঃস্বার্থ ছিল বলে হয়ত দ্বিতীয় কোপ হয়তো ওর ঘাড়েই পরেছিল। সোহেল নামটা আমার মাথার ভেতর যখন আসে, আমার ভেতরে অদ্ভুত একটা শুন্যতা অনুভব করতে থাকি। ওর কাছে ক্ষমা চাওয়ার ভাষা আমার কাছে নেই। শুধু সোহেলের কথা বললে ভুল হবে। আমার ঐ খারাপ সময়ে বাবু-বিপ্লব, খৈয়াম, অপু সবাই ছিল। আমি হয়তো স্বার্থপর হয়ে নিজের সুখের বিষয়টা ভেবে, মন প্রান দিয়ে যাকে ভালবাসতাম তার কথায় প্রভাবিত হয়ে আমি আমার সুখ গুলোকে বিসর্জন দিয়েছি। কাজেই আমার সুখী হওয়ার কোন অধিকার নেই। জীবনের পথে হাঁটতে গিয়ে খুব ভালো বন্ধু থেকে আমার ছোট বোন হয়ে গিয়েছিল মুনিয়া। ওকেও হারিয়ে ফেলেছিলাম, সেই সাথে হারিয়ে ফেলেছিলাম সবচেয়ে ভালো বন্ধু মাসুদকে। আল্লাহর অশেষ কৃপায় ওরা আমাকে হারাতে দেয় নি। হারানোর তালিকায় বাবু-বিপ্লব, খৈয়ামের কথা বলতে হয়। প্রত্যেককে হারানোর পেছনে ছোট ছোট অনেক গল্প রয়েছে। প্রত্যেককে হারানোর সাথে প্রত্যেকে পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত ছিল। কারন আমরা প্রত্যেকে ছিলাম প্রত্যেকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। প্রত্যেকটা বন্ধু ছিল আমার চলার পথে এক এক জন এক এক রকম অনুপ্রেরনা। আমি হৃদয় থেকে কোন দিন ওদের মুছতে পারব না। সম্পর্কের টানাপড়েনে আজ আমি হারিয়ে গেছি ওদের ভিড় থেকে। আমার বিশ্বাস আমি একদিন সবাইকে ফিরে পাব।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×