“ঋকি… … তুই আইজ রাইতে ঘুমা… তোরে নিয়ে আমি MMS স্ক্যান্ডাল বানামু”- এই ছবিটা ক্যাপচার করার অপরাধে আমাকে হুমকিটি শুনতে হয়েছিল। তবে ছবিটা যুগান্তকারী। ছবিটা আমার এক বন্ধুর, তুলেছিলাম গনরুমে থাকা কালীন সময়ে। যদি ছবিটির বিশেষত্ত্ব না খুজে পান, তবে ছবির বুকের দিকটায় তাকান। ওর লুংগিটা ওখানেই অবস্থান করছে… তাহলে নিচে কি আছে ?? হা হা হা । সেটাই তো মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন … কিন্তু ভাই মজা নেওয়ার কিছু নেই। আপনি যত বীরপ্রুশই হন না কেন, এমন অবস্থা আপ্নাকেও ফেস করতে হয়েছে , আমি ড্যাম শিউর। যাই হোক, আমারে নিয়া কোন স্ক্যান্ডাল বানাই নাই, ওরে বুঝাইছিলাম যে মামা তোর মুখ তো আর ছবিতে বোঝা যাচ্ছেনা… সমস্যা কি ???
এই পোশাকটার বিড়ম্বনায় আছি সেই ছোট থেকে … বড় হয়ে গেলাম, কত কিছু শুধরে গেল। কিন্তু এটা শোধরানো গেল না। শুরুর বয়সে যখন লুংগি পরা শুরু করলাম তখন লুংগির গিট্টুর মিস ট্রিগার হইলেও তেমন আহামরি সমস্যা ছিল না। তবু লজ্জা লজ্জা করত … কিন্তু বয়েস বাড়ার সাথে সাথে লজ্জা বাড়ল, সুপুরুষ হলাম…ক্লাস সেভেন কি এইটে পড়ি। কিন্তু রাতের বেলায় পরাস্ত হইতাম এই ব্যাটা লুংগির কাছে। শীতের সকালে এমন কোন দিন ছিল না যেদিন স্বাভাবিক অবস্থায় ঘুম থেকে উঠতে পারতাম । ঘুমোতে যাইতাম আমি একা … কিন্তু ঘুম থেকে উঠতাম দুজন। একজন আমি … আরেকজন আমার লুংগি। দুজনই দুজন থেকে আলাদা অবস্থায় উঠতাম। কোন কোন দিন কাথার মধ্যে সেটাকে পাওয়া যেত, কোন কোন দিন খাটের নিচে খুজতে হইতো। মদ্দাকথা, ঘুমানোর আগে এই টেনশানই কাজ করত যে সকালে কি অবস্থায় উঠব।
বিছানা গুলোনোর ব্যাপারে আমি বরাবরই খুব অলস ছিলাম, আম্মু সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠাতো। তো এক সময় আম্মুকে মানা করেই দিলাম আমাকে ঘুম থেকে ওঠানোর জন্য, নিজে নিজে বিছানা গোছাতে শুরু করলাম। কারন আমার ফ্রেন্ড এর কাছে এক গল্প শুনি … শুনে ভীষন ভয় পায়। একবার ও ঘুমের থেকে উঠে আবিষ্কার করল ওর গায়ে লুংগি নেই … ওতেমন অবাক হয়নি। কারন এমনটা প্রায়শই হয়, কিন্তু ও খেয়াল করল যে ওর কম্বলের ভিত্রেও লুঙ্গিটা নেই। কোন রকমে খাটের নিচটা খুজল … উহু, সেখানেও নেই। ব্যাচারা পরে অন্য কিছু গায়ে নিয়ে বাইরে গিয়ে দেখে ওর লুংগি বাইরে রোদে শুখোচ্ছে। ও প্রশ্ন করল
-আম্মু … … লুংগি এখানে আসল কিভাবে ?
-নবাবের বাচ্চা, বারোটা পর্যন্ত ঘুমোবা … নিজের কাপড় গুলো নিজে কেচে নিবানা। আবার রাগ দেখাচ্ছ ? খাটের নিচে পড়ে ছিল, কাচতে দিয়ে দিছি !!!!
এর পর থেকে সকালে আম্মুকে আর আসতে দিতাম না, আমি উঠে নিজেই বাধ্য বালকের মত বিছানা গুছিয়ে নিতাম রোজ।
এতো গেল শীতকালের গল্প। গরমকাল যে খুব একটা সুবিধার এমন কিন্তু মোটেও না … মাথার উপরে যখন এত্ত স্পীডে ফ্যান চলে সেখানে লুংগি সামলে রাখা বড্ড কষ্টকর ছিল। শুয়ে শুয়ে ফেসবুক চালাচ্ছি … হঠাৎ দেখা গেল বাতাস এসে লুংগি ফুলিয়ে প্যারাসুটের মত বানিয়ে দিচ্ছে, হুড়মুড় করে ঠিক করে ফেললে দেখা যায় … কিছুক্ষন পর আবার যা তাহাই।
এক বন্ধু একবার পরামর্শ দিয়েছিল লুংগির নিচের দিকেও একটা গিট্টু বেধে রাখার, এপ্লাই করেছিলাম সেই প্লান। পরে খেয়াল করলাম গিট্টু যেহেতু নীচে, তাই নিচে প্রচুর টান পড়ে নড়াচড়া করতে গেলে … সেই টানাটানিতে কোমরের গিট্টু টা আবার খুলে যায়। আল্টীমেটলি লাভ কিছুই হইল না। কিন্তু বাসায় নিজের রুম ছিল, এক্সিডেন্ট হলেও তেমন ঝামেলা হইতো না। কিন্তু বিপদে পড়লাম ভার্সিটিতে আইসা। গনরুমে প্রায় ২০ জনের সামনে যদি সকালে উঠে দেখেন আপনার লুংগি দিয়ে পর্দা বানানো হয়েছে … কেমন লাগবে ?? গনরুমের গল্প আরেকদিন বলব।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪১