somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভ্রান্তিবিলাস -the murphy`s law (প্রথম পর্ব )

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
MARPHY`S LAW : if anything can go wrong,it will . ...

ঘটনাটা ঘটেছিল ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে। আমেরিকার মিউরোক ফিল্ড এয়ার বেস-এ (Muroc Field Air Base) পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে তীব্রগতিতে দৌড়াতে-থাকা উড়োজাহাজে আকস্মিক ব্রেক প্রয়োগ করলে সেই প্রক্রিয়া-সঞ্জাত বল মানুষের পক্ষে কতদূর সহনীয় হতে পারে, সেটা নির্ধারণের জন্য। সেই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত ছিলেন একজন ডাক্তার, ক্যাপ্টেন জন পল স্টাপ (John Paul Stapp), আর একজন ইঞ্জিনিয়ার, ক্যাপ্টেন এডওয়ার্ড মারফি (Edward Murphy)। বলের ঠিকমতো পরিমাপের জন্য এডওয়ার্ড একজন সহকারীকে নির্দেশ দিলেন ব্রেকের clamp বা বন্ধনীর গায়ে একটা 'স্ট্রেন গেজ' (Strain Gauge) লাগাতে। এক শিম্পাঞ্জিকে সওয়ারি করে দ্রুত থামানোর একটা পরীক্ষাও করা হল, কিন্তু দেখা গেল পরিমাপ যন্ত্র কোন রিডিং-ই দেখাচ্ছে না। বোঝা গেল তারের সংযোগে সহকারীটি কিছু গোলমাল করে ফেলেছে। রাগ আর ক্ষোভে এডওয়ার্ড মারফি মন্তব্য করেছিলেন কোন কিছু ভুলভাবে করা যেতে পারলে ওই সহকারীটি তা করবেই। প্রকল্পের ম্যানেজার এডওয়ার্ড মারফির এই মন্তব্যকে 'মারফির সূত্র' বা Murphy's Law নাম দিয়ে নথিভুক্ত করে রাখলেন.



মারফির সুত্রের সাথে fatalism বা নিয়তিবাদ এর কিছুটা মিল আছে । আসলে মুখ্য ব্যাপার হল thermodynamics এর ২য় সুত্র বলে entrophy বৃদ্ধির কথা । অর্থাৎ জগতে বিশৃঙ্খলা বাড়তে থাকবে ,সেইদিক বিবেচনায় এই সুত্র সঠিক । আমরা জা কিছুই করি না কেন ,কিছু আপাত ভুল ঘটনা ঘটবেই ,এখানে আপাত বলছি কারন long run এ এটাই বৃহত্তর মঙ্গলের দিকে নিতে পারে । ..।
এখন আসি কিছু উদাহরনে ।পানশালা থেকে গভীর রাত্রে হোটেলে ফিরে তিনবন্ধু দেখে লিফট বন্ধ। তাদের ঘর নব্বুই তলায়। 'কুছ পরোয়া নেই, এক একজন তিরিশ পর্যন্ত গল্প বলতে বলতে পৌঁছে যাব' এই বলে তারা সিঁড়ি ভাঙতে লাগল। দুই বন্ধুর গল্প বলা শেষ, ষাটতলা অতিক্রান্ত, এবার তৃতীয় বন্ধুর গল্প বলার পালা। সে কিন্তু মুখ খোলে না। অন্য দুই বন্ধুর পীড়াপীড়িতে আর তিনতলা বাকি থাকতে সে গল্প বলতে শুরু করল। তিন বন্ধুর গল্প - যারা লিফট না-পেয়ে গল্প করতে করতেই নব্বুই তলা পাড়ি দিয়েছিল, কিন্তু গল্পের শেষটা নিতান্তই করুণ, কেননা ঘরের সামনে পৌঁছে তাদের মনে হল ঘরের চাবিটা রিসেপশন কাউন্টার থেকে নিয়ে আসতেই তারা ভুলে গেছে। এখানে অবশ্যই বলা যেতে পারে যে চাবিটা তো আর ইচ্ছে করে দুষ্টুমি করেনি, সে হয়তো রিসেপশন কাউন্টার থেকে চেঁচিয়ে বলতেই চেয়েছিল তাকে ছেড়ে যাওয়া হচ্ছে কেন। বরং ষাট কিংবা সত্তর তলায় ওঠার পর বেসামাল মালিকের হাত ফসকে রেলিং-এর ফাঁক দিয়ে একতলায় পড়ে গেলে সেটাকেই দুষ্টুমি বলা যেত। তবু একথা তো মানতেই হবে বন্ধুরা চাবিটা নিতে না-ভুলতেও তো পারত। আসল কথা হল, ভুল হবার সুযোগ ছিল, সেটা হল, আর তার সঙ্গে মারফির সূত্রও প্রমাণিত হল।


জড় পদার্থের দুষ্টুমির হাজার উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে, এবং সেগুলো সবই মারফির সূত্র অনুসারী। আপনি হয়তো অফিস বা পার্টিতে যাবার জন্যে তৈরি হচ্ছেন। পরিপাটি করে দাড়ি কামিয়ে গালে একটু আফটার-শেভ লোশন মাখতে গিয়ে শিশির ঢাকনাটা হাত থেকে পড়ে টক্কর খেয়ে পৌঁছে গেল খাটের তলায় একেবারে অন্যদিকের শেষ প্রান্তে। একটা লাঠি কিংবা ঝাঁটা জোগাড় করে মেঝেতে উপুড় হয়ে অনেক কষ্ট করে সেটাকে উদ্ধার করলেন। তারপর আলমারি থেকে জামা বার করে গায়ে দিয়ে বোতাম লাগাতে গিয়ে বুকের কাছের বোতামটি সুতোর বন্ধনমুক্ত হয়ে খসে পড়ল। আপনার হাঁকডাক শুনে আপনার গিন্নি রান্নাঘর ছেড়ে দৌড়ে এলেন, সেই অবসরে ঊনুনে চাপানো দুধ উথলে গিয়ে পোড়া গন্ধ ছড়াতে লাগল। আপনি এসব অগ্রাহ্য করে কিংবা সামলে নিয়ে রাস্তায় বেরোলেন। হঠাৎ আবিষ্কার করলেন তাড়াহুড়োতে মোবাইলটা সঙ্গে নিতে ভুলে গেছেন। আবার ফিরতিমুখো হয়ে বাড়ি গিয়ে দেখলেন সেটি টেবিলের উপর মিটমিট করে হাসছে।

শেষ করি মারফির মৃত্যুর ঘটনা দিয়ে । কথিত আছে যে গাড়ির পেট্রোল ফুরিয়ে যাওয়ায় তিনি সাদা পোশাক পরে সন্ধ্যার অন্ধকারে রাস্তার ডানধারে দাঁড়িয়ে যখন হিচহাইকিং-এর চেষ্টা করছিলেন তখন এক ব্রিটিশ ট্যুরিস্ট উলটো দিক থেকে গাড়ি চালিয়ে এসে তাঁকে ধাক্কা মারে। বলা বাহুল্য, ব্রিটেনের বাঁদিকে ঘেঁষে গাড়ি চালানো সঠিক আইন আমেরিকায় ভুল। আর, ভবিতব্যের মতো সেই ভুল সংঘটিত হল যেন ভুলের সূত্রের জনক মারফির মৃত্যু ঘটানোর জন্যেই।
(পরবর্তীতে মারফির প্রেমসুত্র ,তার... ময়না তদন্ত ,আর কিছু উদাহরন আর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নিয়ে লিখব :))
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×