" নাসরিন ! তুমি এখনই তো এলে,
আর একটু বসো, পরনে সালোয়ার
কামিজ, ঘন কালো বসনে রাঙা শরীরে,
রহস্যময়ী, লাজুক চোখ তুলে চায়,
চোখের তারায় দেখি আমার ছবি।
হাতে রাখি হাত, আঙ্গুলে আঙ্গুল
জড়ায়, ছূঁয়ে থাকে ভালোবাসা।
নির্জন এই শীতের বিকেল বেলায়,
মেঘনার পারে বৃদ্ধ বট গাছের ছায়ায়।
পাল তুলে নৌকো ভেসে যায় দূরে ঐ মেঘনায়,
ডানা মেলে আকাশে উড়ে গেল
এক ঝাঁক বক গোধূলী মায়াবী আলোয়
আলোকিত নাসরিনের মুখ সুখের আবেশে,
হিমেল বাতাসে এই শীতের আসন্ন সন্ধ্যায়
শুধু পরস্পের দিকে চেয়ে মুখমুখি বসে থাকা।
এই ঠান্ডায় উষ্ণতার খোঁজে
শরীর শরীরের খুব কাছে আসে।
ব্যাকুল পরস্পরের হৃদয়ের গুন গুন স্পন্দন
ঘণ আলিঙ্গনে শুনি আমরা দুজন।
রাতে অন্ধকারে তারাদের আলোয়
আমাদের আবাসে ফিরে যাওয়ার সময়,
অতর্কিতে প্রচন্ড ককটেল বোমার শব্দে
কেঁপে ওঠে আমার নাসরিন,
দু-দলের জমিন দখলের তালে বোমাবাজি,
আতঙ্কে ভয়ানক ভয়ে নাসরিন থরথরিয়ে
কাঁপছে আমায় গভীর আলিঙ্গণে জড়িয়ে ।
নীল আকাশ ঢেকে যায় বিস্ফোরণের
ধোঁয়ায়, চারপাশে দাউ দাউ জ্বলে ওঠে
আগুন, বোমা আর বারুদের বিষাক্ত কটু গন্ধে
নাসরিনের শ্বাস নিতে ভারী কস্ট হচ্ছে।
পানি আনতে ছুটে যাই, অকস্মাৎ দূর থেকে
একটা গুলি এসে নাসরিনের বুকে, আর্তনাদ
করে লুটিয়ে পড়ে আমার আদরের নাসরিন।
ছুটে ফিরে এসে বুকে তুলে নিয়ে তাকিয়ে
দেখি, শেষ নিঃশ্বাস ফেলছে হাস্যজ্জল মুখে
অস্পুষ্ট স্বরে বলে, " আমি ভালোবাসি তোমাকে " !
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:২৮