মানুষ খামোখা কেন চুনামাটির খনি দেখতে যায় বুঝি না।
এখানে এসে দেখি, বিশাল চকের মাঝে পুকুরের মতো কিছু গর্ত। তার মাঝে পানি জমে আছে। সেই পানি অবশ্য সবুজ-সেটা দেখতে ভালো লাগে। গর্তগুলোর চারদিকের দেয়াল সাদা। এটাই চুনামাটির খনি। তবে সেটা এতদুর ঘুরে গিয়ে দেখার মতো কিছু মনে হলো না। তবে কাছাকাছি একটা উচু টিলার উপরে একা একটা গাছ দাড়িয়ে আছে, তার ডালে উড়ে বেড়াচ্ছে কয়েকটা পাখি.... সেটা অবশ্য দেখে ভালো লাগল।
খিদেয় পেট চো চো করছে। কিন্তু আশেপাশৈ খাবারের কোন হোটেল নেই। রাস্তার পাশে একটা দোকান থেকে কলা খেলাম।
আমাদের চালক বলল, কয়েক কিলোমিটার দুরে একটা বড় গীর্জা আছে। সেটা দেখা যেতে পারে। তো, চললাম সেখানে।
জায়গাটার নাম মনচাপাড়া, এ্যাডভেন্টিস্ট চার্চ। বেশ অনেকটা জায়গা নিয়ে চার্চটা তৈরী হয়েছে। ভেতরে পুকুর, একটা হ্রদ, অনেক বাড়ি ঘর। আদিবাসী পরিবারের ছেলে মেয়েরা এখানে থেকে পড়ালেখা করে। ছেলে ও মেয়ে, উভয়ের পড়ালেখার ব্যবস্থা আছে। এই গহীন গ্রামের মধ্যেও চমৎকার একটা কো এডের পরিবেশ। ছেলে মেয়েদের মধ্যেকার সম্পর্কও স্বাভাবিক, এরকম একটা প্রত্যন্ত অঞ্চলে যা একটু কমই দেখা যায়।
প্রথমে তো আমাদের ঢুকতে দেবে না। অনেক ভাই বেরাদর বলে ভেতরে ঢুকলাম।
সেদিন আবার সেখানে পরিষ্কার দিবস। সবাই দিলে পুরো চার্চ ঝাড়ু দিচ্ছে, পরিষ্কার করছে। এর মধ্যেই ঘুরে ফিরে দেখলাম। টিলার উপর বসে একটু হাওয়া খেলাম।
ঘন্টাখানেক পর আবার মটরসাইকেলে করে বিরিশিরির পথে রওনা হলাম।
আসার থেকে চালক বলল, এখানের একটা বাসায় নাকি ভারতের ভালো মদ পাওয়া যায়। তো, গেলাম সেখানে। বিক্রেতা একজন মহিলা। তিনি বললেন, তার কাছে নাকি মাত্র একবোতল আছে। সেটার নাম টেঙ্গু। মেঘালয়ের কমলার জুস দিয়ে তৈরী। দাম দেড়শ টাকা্। (চালক জানাল, সবসময়েই নাকি তাদের কাছে এক বোতল থাকে। পুলিশের ভয়ে তারা এই কথা বলে।) সেটা কেনা হলো।
এই পরিচয় হলো টেঙ্গেুর সাথে।
নদীর আরেকটি অংশ দিয়ে এবার পাড় হয়ে আমাদের গেস্ট হাউজের কাছাকাছি পৌছে বাইক ছেড়ে দিলাম।
কাছাকাছি দেখলাম অনেকগুলো রেস্তোরা রয়েছে। তবে মিরাজ আর আমি সবসময়ে স্থানীয় খাবার ও রান্না খেতে চাই। তাই একটি গারো রেস্তোয়া ঢুকলাম। সেখানে রুইমাছ রান্না হয়েছে। বললেন তো যে এগুলো নাকি সোমেশ্বরী নদীর মাছ। নদীতে পানি নেই, মাছ কোথায় পায় কে জানে। যাই হোক, সেটাই খেলাম মজা করে। কারণ পেটে খিয়েয় চো চো করছিল।
খেয়ে দেয়ে রুমে গিয়ে দুই বন্ধু মিলে দিলাম ঘুম।