somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সংকোচ জড়ানো প্রথম লেখা

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি বেড়ে উঠেছি একটা ছোট গ্রামে । তখন কার গ্রাম আর এখনকার সেই গ্রামের পার্থক্য অনেক। আজ অনেক বছর হলো আর মাঠে কাজের লোকদের জন্য গামছাতে খাবার বেধে নিয়ে যাইনা আমার চাচাতো ভাইদের সাথে ।সেই পাকা ধানের ক্ষেত দেখিনা বহুদিন। সেই শরিষা ক্ষেতের গন্ধ, শীতের সকালে হলুদ ফুলে জমে থাকা শিশির গায়ে মাখা, পাশাপাশি দুই পরিনত উঁচু পাট ক্ষেতের মাঝখানের ছোট্ট আইল ধরে যাওয়ার সময় মনের ভিতরে লুকানো আতংক, ফাল্গুনে সেই ফাঁকা মাঠের মধ্যে কড়ই গাছের নিচে বসে মন হাল্কা করে দেওয়া বাতাস,এই সব কিছুকেই এখনো খুব অনুভব করি।


কপাল গুনে বাড়ি ছাড়লাম, কলেজ শিক্ষার উদ্দেশ্যে, একলাফে গ্রাম থেকে বিভাগীয় শহরে,তাও আবার এমন সময়ে যখন জেলা শহর দেখার সৌভাগ্য কিংবা দুঃসাহস কোনোটাই হয়ে ওঠেনি। এখন বাসায় যাই তবে আর সেই মাঠে যাওয়া হয়না। যে কয়েক দিন ছুটি পাই ফ্রেন্ডদের সাথে সময় কাটাই ।এখন সব কিছুই কেমন জানি বদলে গেছে, কোনোকিছুই আর আগের মত নেই। এখন ছেলেরা সারাদিন একগাদা বই আর টেলিভিশন নিয়ে দিন পার করে দেয়। অথচ আমরা শীতে পনেরো বিশ জন মিলে জমি থেকে কাটা ধানের গোড়া পরিষ্কার করতাম ক্রিকেটের মাঠ আর ক্রিজ বানাবো বলে, সারা বিকেলে কাজ করেও কারো মুখে একটুও অতৃপ্তি ছিলোনা। সকালে সেই কুয়াশার মধ্যে তীব্র বাতাস উপেক্ষা করে খেলতে আসা !!!জানি আর কখনোই ফিরে পাবোনা সেই দিন গুলি। কোনোদিন ভালো খেলোয়াড় ছিলাম না, তবে তাই বলে কেউ দল থেকে বের করে দিতোনা।

অন্য সব বিষয়ে অদক্ষ হওয়ার কারনেই কিনা জানিনা, বই পড়াটাই সব সময় পছন্দের বিষয় ছিলো। তবে আমাদের বাড়িতে পড়াশোনায় আগ্রহী লোকের সংখা কম থাকায় পড়ার মত বইও ছিলোনা। তবে যেটুকু পেয়েছি, পড়ার চেষ্টা করেছি। পরবর্তীতে স্কুলের বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই গুলো পড়ে অন্য এক জগতে প্রবেশ করলাম। আজও মনে সেই বই গুলোর কাহিনী ছবি হয়ে ভাসে। আব্বা সব সময় গল্প জাতীয় বই পড়াকে সাপোর্ট করতেন তাও না, কারণ ছিলো, এই সব বই পড়তে গিয়ে যদি পড়ালেখার ক্ষতি হয়! তবে আব্বা আমাকে এতই ভালবাসেন যে কোনোদিন সামনা সামনি নিষেধও করতে পারেননি। মনে পরে এস.এস.সি পরীক্ষার মধ্যেও ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে নিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে ‘চারমূর্তি’ বইটা পড়েছিলাম।

এখন আর সেই রকম বইও পড়া হয়না । আর লেখালেখিতো হয়ইনা। কে জানি বলেছিলো, ব্রিটিশরা আমাদেরকে ব্রিটিশ করতে পারেনি আবার বাঙ্গালীও রাখেনি। আমার দশা অনেকটা সেই রকম। এখন ভাগ্য চক্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, তাই ইংরেজিতে পড়াশোনা করতে হয়, আর বাংলা লিখাটাও হয়ে ওঠেনা ।অথচ, এতোদিনে ইংরেজী ভালোভাবে রপ্ত করতে পারিনি আর প্রিয় বাংলাটাকেও ছাড়তে পারিনি। একটা মাঝামাঝি পর্যায়ে ঝুলে আছি দুই বিষয়ে খাপছাড়া জ্ঞান নিয়ে।

প্রায় দুই বছর হলো ‘সামহোয়ার ইন……’ পড়ছি। ব্লগারদের পোস্ট দেখে বিস্মিত হই, অবাক হয়ে ভাবি এতো পড়া আর জানা কি করে সম্ভব? কমেন্ট করতে মন চায়। তাই অবশেষে খুলেই ফেললাম একাউন্ট, অল্প জ্ঞান নিয়ে। নিজে কিছু জানাতে পারবো কিনা জানিনা, কিন্তু অন্যদেরকে তো উৎসাহিত করতে পারবো! :) :) :)
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×