somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেয়েটা যখন ভালবেসেছিলো

২০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেয়েটা আমার প্রেমে পড়েছিলো, জানিনা কিভাবে বা কি কারনে! এতো মানুষ পৃথিবীতে অবশিষ্ট থাকতে আমাকেইবা কেনো! সবাই বলে, আর আমিও বেশ ভালো করে জানি, প্রেমে পরতে কোন কারন লাগেনা। মানুষ প্রেমে আচমকাই পরে। প্রেমে পরতে কোন ধন-সম্পদ,সুন্দর চেহারা, সুঠাম দেহ লাগেনা; লাগেনা সোনালী অতীত কিংবা সুবর্ণ ভবিষ্যত। ঘণীভূত মেঘ থেকে যেমন বৃষ্টির ফোটা গুলোর পৃথিবীতে পরা ছাড়া আর কোন উপায় থাকেনা, তেমনি মেয়েটারও বোধহয় আর কোন উপায় ছিলোনা। আমি আসলে এসব প্রেম ভালোবাসার জন্য কখনই যোগ্য ছিলাম না, তাই ওর প্রেমে পরাটা আমার যোগ্যতা নয়, বরং তার উদারতা। ও শুধু ভালবেসেই গেলো, বিনিময়ে কখনো কিছুই চাইলোনা। ও যখন আমার ছন্নছাড়া জীবনের অনিয়মগুলো দেখে উদ্বিগ্ন হতো, আমি তখন তার প্রতি আরও উদাসীন হয়েছি। ও যখন তার অতীত জীবনের কষ্টগুলো বলে শান্তি খুঁজতে চেয়েছে, আমার কাছে মনে মনে শান্তনা প্রত্যাশা করেছে, আমি তখন অন্যদিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হেসেছি, সে হাসি নির্লজ্জের হাসি। সে যখন আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো, আমি তখন তার চোখে তাকিয়েছিলাম,কি উজ্জ্বল আর আনন্দ মাখা ছিলো সে চোখ, সে চোখে ছিলো আমার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস,কোথায় সে এতো বিশ্বাস পেলো জানিনা, কিন্তু আমি তো তার হাত ধরতে পারিনি, কেনো জানি আড়ষ্ঠ হয়ে গিয়েছিলো আমার হাত, বাড়িয়ে দেওয়ার সাহসটুকু পাইনি। হাত আমার পকেটেই ঢুকানো ছিলো, আর ঠোঁটে ছিলো সেই নি্লজ্জের হাসি। সে হাত ফিরিয়ে নিয়েছিলো, তখন আমি তার চোখের দিকে তাকাতে পারিনি, কোন মানুষ ওই অবস্থায় তার চোখের দিকে তাকাতে পারতো বলে আমার মনে হয়না। কিছুক্ষন নিরবতা, তারপর আবার সেই আগের মতো ব্যাবহার, কেমন করে সে পারে এতো তাড়াতাড়ি সব কিছু ভুলে যেতে আমি নিজেও জানিনা। আমার সংগে বেশি সময় কাটাবে বলে, রিক্সাতে না উঠে সে হেটে যাওয়ার জিদ করতো। বুঝতে পারতাম, তার হাটতে অনেক কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু তারপরো তাকে কিছুতেই রিক্সায় উঠতে রাজি করাতে পারতামনা। সামান্য কিছু বলার কারনে, কতোদিন সে রাগ করে না খেয়ে থেকেছে। অথচ, আমি যদি ব্যাস্ততার কারনে কখনো দেরি করে খেতাম তাহলেও তার সে কি চেঁচামেচি, কতো অভিযোগ, কতো অনুযোগ। ও যখন আমার পাশে হাটতো, কিছুক্ষন গল্প করেই আমি আর কথা বাড়ানোর কোন প্রসঙ্গ খুঁজে পেতাম না। তখন ও কোথা থেকে সব গল্প নিয়ে এসে জোগাড় করতো, আর নিজে নিজেই সেই গল্প বলে যেতো, আমি শুধু মাঝে মাঝে হ্যা-না বলতাম। কখনও ও নিজের গল্প শুনে নিজেই হেসে অজ্ঞান। ইন্টারনেটে চ্যাট এর সময়ে যখন সে ব্যাস্ত থাকতো অন্য কোন কাজে, অথবা ইন্টারনেট স্পীড স্লো থাকতো, তখন সাথে সাথে ফোন করে রাগ করতে নিষেধ করতো। আশ্চর্য, এতকিছুর পরেও আমি ওর উপর রাগ করি কি করে!





আমি সবসময় তার জিদের কাছে হেরেছি …… না না মিথ্যা কথা …… আমিও একবার জিতেছিলাম, তবে সেভাবে যেনো আর কেউ না জিতে, অমন একবার জেতার চাইতে লক্ষবার হারাও অনেক সুখের। তখন আমার লম্বা ছুটি, প্রায় বিয়াল্লিশ দিন। আমি বাড়ি যেতে চেয়েছিলাম, সব কিছু ঠিকঠাক। বিকেলে শেষ বারের মতো দেখা করতে আসলো ও আমার সাথে। দেখা করে, ওকে পৌছে দিয়ে, টিকেট কাটতে যাবো, পরদিন সকালেই ট্রেন। ও অনেক অনুরোধ করেছিলো থাকার জন্য। আমার বন্ধুদের সবাইকে অনুরোধ করেছিলো, আমাকে জোর করে হলেও যেনো যেতে না দেয়। কিন্তু তখনো আমার মুখে সেই নির্লজ্জের হাসি। কিছুতেই রাজি হইনি থাকার জন্য। যখন ওকে পৌছে দিতে যাই, রাস্তার মধ্যে অজস্রবার অনুরোধও আমার মন গলাতে পারেনি। তার চাওয়া বেশি কিছু ছিলোনা, সে শুধু চেয়েছিলো মাত্র দুইটি দিন। হায়!!! আমার বিয়াল্লিশ দিনের লম্বা আর বিরক্তিকর ছুটির মধ্যে সামান্য দুটি দিন কি তার জন্য খুব বেশি চাওয়া ছিলো। আর সেই দুটি দিন ও আমার হাত ধরে ঘুরতে চায়নি, চায়নি কোন দামী রেস্তোরায় বসে ডিনার করতে। শুধু চেয়েছিলো, আমি যেনো তার কাছে থেকে অন্তত দুই কিলোমিটার দূরের একটি রুমে থাকি, এতেই তার শান্তি। কিন্তু তাতেও আমি রাজি হইনি, সে প্রথম বারের মতো আমার জিদের কাছে হেরেছিল, আমি জিতেছিলাম। আচ্ছা, চোখের জল ছাড়া কি কাঁদা সম্ভব?? কান্না তো অন্তরের বিষয়, তার সাথে চোখের জলের কি সম্পর্ক!! ও বোধহয় সেদিন কেঁদেছিলো, আমি সেদিনো তার চোখের দিকে তাকানোর সাহস পাইনি। কান্না বললে তার কষ্টটাকে ছোট করে দেখা হবে, সেটা কান্নার চাইতেও বেশি ছিলো। রাতে ঘুমিয়েছিলো কিনা সেটাও আমাকে বলেনি।
কোথায় যেনো একটা উক্তি পড়েছিলাম “পৃথিবীর সবচাইতে কাপুরুষ ব্যাক্তি হলো সে, যে কিনা নিজে ভালবাসার কোন ইচ্ছা ছাড়াই কোন নারীর মনে ভালোবাসার সৃষ্টি করে।" উক্তিটা যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে আমি শুধু এই পৃথিবী নয় পুরো মহাবিশ্বের মধ্যে সবচাইতে কাপুরুষ ব্যাক্তি।
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×