somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বের সবচাইতে বড় পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলো...

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আসুন ঘুরে দেখি পৃথিবীর সবচাইতে বড় হাইড্রোইলেট্রিক পাওয়ার প্ল্যান্ট আর তার সংগী বাঁধ গুলো…
১) থ্রী জর্জেস ড্যমঃ
পুরো দুনিয়ার সবচাইতে বেশি বিদ্যুৎ তৈরিকারী প্ল্যান্ট এর পেছনে সব চাইতে বড় অবদান এই বাধ এর, যা কিনা চায়নাতে অবস্থিত। ২০১১ সালে কার্যক্রম শুরু করা এই প্ল্যান্টের জন্য নির্মিত বাধের পুরো দৈর্ঘ ৬৬০ কিলোমিটার আর গড় পুরুত্ব প্রায় এক কিলোমিটার। ষাটটি আইফেল টাওয়ার গলিয়ে ফেললেও এই বাধের এর জন্য প্রয়োজনীয় ইস্পাত পাওয়া যাবেনা। পুরো নদীর বাধ ব্যাতীত শুধু প্ল্যান্টের জন্য বাধের যে অংশটুকু আছে তার দৈর্ঘ্য প্রায় আড়াই কিলোমিটারের কাছাকাছি আর উচ্চতা ১০০ মিটারের মতো। এই দৈত্যাকৃতির বাধ যেই উদ্দেশ্যে সেই প্লান্টের ক্ষমতা জেনে নিতে ইচ্ছা করছেনা ? মাত্র ১৭,৬০০ মেগাওয়াট।



২)ইতাইপু পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রঃ
“ইতাইপু” নামের অর্থ গান গাওয়া পাথর। সাধে কি আর এই নাম! মানুষের সুখের স্বার্থে একেবারে পর্বত সমান পাথরের স্তুপ দিয়ে বানানো হয়েছে ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে সীমান্তে অবস্থিত এই এর বাঁধ। এই বাঁধ বানাতে যে পরিমান কনক্রীট লেগেছে, তা দিয়ে ২১০টি ফুটবল স্টেডিয়াম বানানো যেতো আর যে পরিমান লোহা লেগেছে তা দিয়ে ৩৮০টি আইফেল টাওয়ার বানানো যেতো। এতো কিছু করেছে কি করে সেকথা ভাবছেন? তাহলে জেনে নিন, যে পরিমান শ্রম এর পেছনে লেগেছে, তা দিয়ে প্রতি ঘন্টায় একটা করে ২০ তলা ভবন বানানো যেতো। এই ৬৫ তলা ভবনের সমান উচু এই বাঁধটাই সাহায্য করেছে ১৪০০০ মেগাওয়াট এর বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে, যা কিনা প্রতিদিন ৪৩০০০ ব্যারেল তেল পোড়ানোর সমান শক্তি ।আর এই বিশাল পরিমানের বিদ্যুৎ গ্রাহকদের কাছে পৌছে দিতে ব্যাবহৃত হচ্ছে ৪,৩০৯ কিলোমিটার দৈর্ঘের বৈদ্যুতিক তার।



৩) গুরি ড্যাম পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রঃ
ভেনাজুয়েলাতে অবস্থিত এই প্ল্যান্ট ১০,২৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ তৈরি করতে সক্ষম, যা কিনা দেশের মোট প্রয়োজনের ৪০ শতাংশ। প্রায় ৬০তলা সমান উঁচু এই বাঁধটি ১৩০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এর কনক্রীট দিয়ে প্রায় ১০০টি ফুটবল স্টেডিয়াম বানানো যেতো। আর তেল সমৃদ্ধ দেশ হওয়া সত্বেও বলিভিয়া পানিবিদ্যুৎ কে বেছে নিয়েছে, সেই কারনে তারা প্রায় ২.৭ মিলিওন ব্যারেল তেল বেশি রপ্তানি করতে পারছে।যদি তারা এই পরিমান বিদ্যুৎ পেট্রোলিয়াম চালিত কোন প্লান্ট থেকে করতে চাইতো তাহলে শুধু সেই প্লান্ট থেকেই ২০ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি হতো প্রতি বছর।



৪) টিউচুরি ড্যাম পাওয়ার প্ল্যান্টঃ
ব্রাজিলিয়ানরা শুধু চর্মগোলক নিয়েই খেলাধুলায় পারদর্শী না, তারা বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়েও খেলা করে। ব্রাজিলের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্লান্টটি পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে যায়গা দখল করে আছে। এই বাঁধ থেকে যে পরিমান পানি বিদ্যুৎ উতপাদনে ব্যাবহার করা হয় তা পুরো পৃথিবীর যেকোন প্ল্যান্টের চেয়ে বেশি। প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১২০০০ টি হাতির ওজনের সমান পানি টার্বাইনে এসে পড়ে। ১৯৮৪ সালে তৈরিকৃত এই প্ল্যান্টটির উৎপাদন ক্ষমতা ৮৩৭০ মেগাওয়াট।



৫) গ্র্যান্ড কোউলি ড্যাম পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রঃ
এটি যুক্তরাষ্ট্র এর বৃহত্তম পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই প্ল্যান্ট এর বাধ এর উচ্চতা প্রায় পঞ্চাশ তলা উচু বিল্ডিং এর সমান। আর দৈর্ঘ প্রায় দেড় কিলোমিটার। বাধ থেকে টার্বাইন পর্যন্ত প্রতি মিনিটে আটাশ হাজার ঘনমিটার পর্যন্ত পানি নিয়ে যাওয়ার ব্যাবস্থা রাখা হয়েছে এই পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রে।নায়াগ্রা ফলসে যদি টার্বাইন বসানো হয় তাহলে উচ্চতার কারনে যে পরিমান শক্তি পাওয়া যেতো এখানেও ঠিক সেই পরিমান শক্তি পাওয়া যায়। এই প্লান্টে কি পরিমান বিদ্যুৎ তৈরি হয় জানেন ? মাত্র ৬৮০৯ মেগাওয়াট।




[[ বিদ্রঃ চার নং এর নামের সঠিক উচ্চারন নিয়ে দ্বিধা আছে। কেউ জানলে সংশোধন করে দিবেন। ]]
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৯
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×