আমি আগে মুসলমান পরে বাঙালি না আগে বাঙালি পরে মুসলমান এই নিয়ে রশি টানাটানি অনেক দিনের। লাবনী আপা ব্যবসায়ী মানুষ , তিনি এসবের মধ্যে নাই , তিনি যোগ দিয়েছেন দুই দলেই -একই রেস্টুরেন্টে নাম দিয়েছেন দুইটা। আপনি যদি গুগলে সার্চ দেন হালাল রেস্টুরেন্ট ইন সানফ্রান্সিকো বে এরিয়া তাহলে পাবেন ভন এক্সপ্রেস হালাল - সার্টিফাইড জাবিহা হালাল , রেটিং ও ভালো ফাইভ ষ্টার এর কাছাকাছি। আবার যদি সার্চ দেন বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট বা ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট তাহলে পাবেন লাবনী'স কিচেন , রেটিং একই। রেস্টুরেন্ট এ গেলেই দেখা যায় ক্যাশ এ দাঁড়িয়ে আছেন লাবনী আপা। মোটা সোটা মানুষ , মুখে সব সময় হাসি লেপ্টে আছে। প্রথম দিন গিয়েছিলাম এক সিনিয়র ভাই এর সাথে , সিঙ্গারা খাওয়ার জন্য , খেয়ে বেশ ভালো লাগলো। কিছু দিন পর আবার গেলাম সিঙ্গারা খেতে। আপা বললেন ভাই সিঙ্গারা খাচ্ছেন খান তবে আমার স্পেশাল আইটেম কিন্তু চিকেন ফ্রাই। আপনাকে টাকা দিতে হবে না প্রথম দিন আপনার জন্য ফ্রি স্যাম্পল দিচ্ছি।
সিঙ্গারা অর্ডার দিয়েছি চার টা তার মধ্যে আবার দু'টা ঢাউস সাইজের কলিজি সিঙ্গারা। বললাম আপা চারটা সিঙ্গারা খেয়ে তো চিকেন ফ্রাই খেতে পারবোনা মনে হচ্ছে , আরেক দিন ফ্রী খেতে আসবো। আপা পীড়াপীড়ি করলেন না , আমি আবার গেলাম চিকেন ফ্রাই খেতে ফ্রি তে না অবশ্য। ফ্রাই এর কয়েকটি ভ্যারাইটিজ আছে লাবনী আপার কাছে। আমি ঝাল খেতে পারিনা তাই হানী চিকেন উইংস এন্ড লেগ্স এটা নিলাম। খেতে বেশ মজা। সবচেয়ে ভালো লাগে আপার আন্তরিক ব্যবহার , সার্ভ করার পর এসে জিজ্ঞাসা করবেন ভাই ঠিক হয়েছে তো , খেতে পারছেন তো। অনেকটা যেন বাসায় মেহমান খাওয়াচ্ছেন।
কিছু দিন পূর্বে এক মেক্সিকান ফ্রেন্ড কে নিয়ে গেলাম বাংলাদেশী খাবার খাওয়ানোর জন্য। তো এরাবিয়ান, আমেরিকান , মেক্সিকান এরা কেন জানি ল্যাম্ব পছন্দ করে বেশি। আপা কে বললাম ল্যাম্ব বিরিয়ানি আর স্পাইসি চিকেন দিতে। আপা বললেন ভাই ল্যাম্ব তো নাই মাটন আছে , বাংলাদেশী ইন্ডিয়ান লোকজন তো সবাই মাটন খায়। শুনে মেক্সিকান বন্ধু একটু ইতস্ততঃ করছিলো, আমি বললাম খেয়ে দেখোনা কেমন লাগে। খেয়ে তো সে পুরা কুপোকাত , টোগো করে বাসায় নিয়ে গেলো। জয়তু লাবনী আপু।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১০:৪০