somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্যাংগালুরের ঈদগাহ এবং একজন অটো ড্রাইভারের ঈদ মুবারক।

০৮ ই জুন, ২০১৯ সকাল ৯:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঈদের দিন সকাল। ব্যাংগালুরের উলসুর ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাত পড়ার প্ল্যান। সকাল ১০ টায় জামাত। আমরা চারজন দুইটা আলাদা আলাদা অটো নিলাম উবার দিয়ে। কিন্তু উবার ম্যাপে যে ঈদগাহের ঠিকানা ভুল থাকবে এটা জানা ছিল না আমাদের। এমন এক জায়গায় নামিয়ে দিল যেখানে রাস্তাই ক্লোজ। আমরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে আশেপাশে লোকজনদেরকে জিজ্ঞাসা করে জানলাম বেশ খানিকটা উলটো পথে হেঁটে ডানে বা বাম দিক দিয়ে ঈদগাহ এ যাওয়া যাবে।
আবার অটো নিয়ার চিন্তা বাদ দিয়ে আমরা হাঁটা শুরু করলাম।
এখানে বলে রাখা দরকার, এখানকার অটোগুলো আমাদের সি এন জি এর মতো, তবে জেলখানা বানানো হয়নি। তবে ডান পাশে আধা রেলিং দেয়া। সম্ভবত ডান পাশ দিয়ে যাত্রী নামানো বা উঠানো প্রতিরোধের জন্য।
পিছনে আমাদের সি এন জি অটো এর চেয়ে সামান্য কম জায়গা। তিন জন বসতে কষ্ট হয়। দুইজন আরাম করে যাওয়া যায়।
কিন্তু কোনভাবেই সামনে লোক নিবে না। সেরকম জায়গাও নেই, আবার হয়তো আইনেও নিষেধাজ্ঞা আছে সম্ভবত।
তাই একটা অটো দুইজনের যাতায়াতের জন্য পারফেক্ট, তিনজনের জন্য কষ্টসাধ্য যান।

তো ঈদের দিন উবার অটো আমাদের ভুল জায়গায় নামিয়ে দেয়ার পর যখন আমরা হাঁটা শুরু করলাম, তখনও গুগল ম্যাপে ঈদগাহ দেখাচ্ছিল না, বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞাসা করে করে যাচ্ছিলাম, আবার কতক্ষণ লাগবে সেটাও আন্দাজ করতে পারছিলাম না।
আমি আর আশফাক দুইজনই পাঞ্জাবী পরা ছিলাম, আমরা একটু জোরে হাঁটছিলাম, তাই মিজান ও রিজভী কিছুটা পিছনে পিছনে।
হাটঁতে হাটঁতে ততক্ষণে ৯:৫৫ বেজে গেছে। জামাত ধরতে পারবো কি-না সেই টেনশনে জোরে হাঁটতে লাগলাম।

হঠাৎ আমার আর আশফাকের পাশে একটা অটো জোরে ব্রেক কষলো। আর অটো ড্রাইভার আমাদের উদ্দেশ্যে জোরে জোরে বলছিলেন "ভাইসাব, টাইম নেহী হ্যায়, পাঁচ মিনিট হ্যায়, উঠ যাও, অটোমে উঠ যাও। জলদি করো।"
অটোর দিকে তাকিয়ে দেখি টুপি পাঞ্জাবী পরা এক অটো ড্রাইভার আমাদের উদ্দ্যেশে যখন এসব বলছে, তখন পিছনে টুপি পাঞ্জাবী পরা তিনজন হ্যাংলা পাতলা ছেলে/লোক বসে আছে। স্পষ্টতঃ তারাও ঈদের জামাত ধরতে যাচ্ছে।
প্রথম ভাবলাম আমরা তো চারজন, অটোতে অটি ড্রাইভার সহ চারজন আছে, তো কোনভাবেই আমাদের হবে নআ। কি করা উচিৎ!! কিন্তু অটো ড্রাইভার বারবার তাগাদা দিচ্ছিল, আর পিছনে বসা তিনজনে চেপে চুপে একে অপরের কোলে উঠে যায়গা করে দিল। ড্রাইভার আমাকে বললো তার পাশে বসতে, আর আশফাককে পিছনে। আগ পিছ না ভেবে উঠে বসা মাত্র মিজান আর রিজভী অটোর কাছে চলে আসলো।

কি করা যায় এটা চিন্তা করতে করতে ড্রাইভারের দিকে তাকালাম। দেখি উনি আগে থেকেই পিছনে বসে থাকা বাকীদেরকে কি যেন বললো। আর আমাদের বাকী দুইজনকেও বললো পিছনে উঠে যেতে। অটোতে আগে থেকে থাকা বাকী তিনজনের দিকে তাকানোর সুযোগ পেলাম না। ধারণা করে নিলাম, তারা একে অপরের কোলে উঠে বসেছে। আর আমাদের তিনজনের মধ্যেও একজনকে আরেকজনের কোলে বসতে হয়েছে। শুধু কনফার্ম হওয়া গেছে যে সবাই উঠেছে, আর তাতেই আল্লাহ ভরসা বলে অটো ড্রাইভার দিল অটো টান।
পিছনে ফিরে সবার অবস্থা চেক করা সম্ভব হয় নাই। তবে পিছনে বসা বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনজন সহকারি পরিচালকের হাসাহাসি শুনতে পাচ্ছিলাম। সাধারণত দুই জন যাত্রী বহনে সক্ষম অটো টা সাতজন যাত্রী নিয়ে ঈদ ময়দানের দিকে যাত্রা শুরু করলো।

কোথাও থেকে কোন এক আলো ঈদ নামাযের যাত্রীদেরকে কষ্টহীনভাবে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে উপায় করে দিল।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০১৯ সকাল ৯:৩৪
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×