somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মোবাইল কোম্পপনিগুলো যেভাবে আপনার আমার টাকা চুরি করছে .......

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ওরা উপকার করছে না- তা বলছি না। তবে চুরি করছে। একই কোম্পানী ক’দিন পরপরই মহাধুমধানে তাক লাগানো অফার দিচ্ছে। যেন গ্রহকদের সাথে মশকরা শুরু করেছে। যে কোন অফার দেখার সাথে সাথে মনে হবে, সবকিছু যেন মাগনা মাগনা দিচ্ছে। তারপর একটু নিচে খুবই ছোট ছোট অক্ষরে (ফোন্ট) অফারের আসল কথাগুলো ব্যাখ্যা করা থাকে। সেগুলো পড়লে দেখা যাবে মাগনা তো দূরের কথা পকেটমারের চেয়েও বড় ডাকাত এরা। প্রিয় বন্ধুগণ সাবধান ! ওদের কোন
অফারেরই খুশি হওয়ার তেমন কিছু নেই। অফারগুলো বুঝাও সবার পক্ষে খুব একটা সহজ নয়। পুরোপুরি চিট বলতে যা বুঝায়-তাই। যে দেশে খুব সাধারণ এবং অর্ধশিক্ষিত, অশিক্ষিত মানুষ বাস করে, সে দেশে এভাবে ধোকা দিয়ে মানুষের পকেট কেটে টাকা চুরি করছে তা থেকে জনগণকে রক্ষা করার দায়িত্ব কি সরকারের নেই ? তবে সে দায়িত্ব পালন করছে না কেন ? কেন মোবাইল কোম্পানিগুলোকে একটা নিয়মের আওতায় নিয়ে আসছে না ? অফারগুলোকে খুব সহজ সরল করতে বাধ্য করছে না কেন ? এতো ঘনঘন অফার দিচ্ছে যে, গ্রাহকদের দিশেহারা করে তুলছে। অথচ সবই ধোকাবাজী।


ওরা যে যেভাবে টাকা চুরি করছে :
১। কল করার পর ১ বা ২ সেকেন্ড পর নেটওয়াক খারাপ। হঠাৎ লাইন কেটে গেল। দেখা গেল ১মিনিটের টাকা কাটা নিয়েছে। কেন নেবে ? নেটওয়ার্ক খারাপ-এটা তো তাদের দোষ। এক্ষেত্রে তাদের দোষে গ্রাহকের টাকা কাটবে কেন ?
২। প্রায়ই দেখা যাচ্ছে ২২২২, ২০০৫, ৪৮৪৮, ৫৮৫৮, ৪৬৩৬, ৭৮৯ প্রভূতি এধরনের নাম্বার থেকে দু’এক দিন পরপরই কল আসে। রিসিভ করলে কি কি সব কথা শোনা যায়। অথচ ব্যলান্স চেক করলে দেখা যায় প্রতি মিনিট প্রায় ৫.০০ হারে টাকা কেটে নিয়েছে। এই টাকা কে কেটে নিল ? নিঃশ্চয় কোম্পানি। কারণ-যে কোন গ্রাহকের, যে কোন কারণেই ব্যালান্স কাটা যাক না কেন তা প্রকারন্তরে কোম্পানির তহবিলেই জমা হয়। প্রত্যেক গ্রাহক যদি ভুল করে জীবনে একবার এই নাম্বারগুলোর কল রিসিভ করে তবে কমপক্ষে ৫.০০ টাকা হারাবে। এখন কোন কোম্পানির যদি ১ কোটি গ্রাহক হয় আর প্রত্যেক গ্রাহক একবার রিসিভ করে তবে কোম্পানির চুরি করা টাকার পরিমাণ হয় ৫০০০০০০০.০০ (পাঁচ কোটি)। এভাবে কোটি কোটি টাকা চুরি করছে আমাদের পকেট থেকে। দেখার কেউ নেই।

৩। গ্রামীনের একটা ইন্টারনেট প্যাকেজ দিচ্ছে। ৯.০০ টাকায় ৩ মেগাবাইট, মেয়াদ ৭ দিন। ব্যালান্স শেষ হলে ০.০০১/কিলোবাইট হার প্রযোজ্য হবে। এখানেই হলো আসল মারপ্যাঁচ। মাত্র ৩ মেগাবাইট কয়েক মুর্হূতেই শেষ হয়ে যায় ৭ দিন তো দূরের কথা। আর শেষ হওয়ার সাথে সাথে ০.০০১/কিলোবাইট হারে টাকা কাটতে থাকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তা জানতেও পারেন না। সিমে যদি বেশি টাকা থাকে তবে দেখা যাবে কিছু সময়ের মধ্যেই প্রায় ১০০/= বা তারও বেশি টাকা কেটে নিয়েছে। আমার একদিন অন্য একটা প্যাকেজে ১৫০/= টাকারও বেশি হারিয়ে গেছে।

হিসেবটা এ রকম-। যদি কেউ পি-৬ প্যাকেজ ব্যবহার করেন তবে ১ গেগা ব্যালান্স বা মেমোরি পান, মেয়াদ ১ মাস। তাতে হিসেব করে দেখা যায় ১ কিলোবাইটের দাম হয় ০.০০০৩ টাকা। আর উপরের উল্লেখিত ৩ মেগাবাইটের প্যাকেজ মেমোরি শেষ হলে যে হারে কাটে তাতে ১ কিলোবাইটের দাম হয় ০.০০১ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কিলোবাইটের দাম ৩.৪ গুণ (প্রায় সাড়ে তিন গুণ) বেড়ে যায়। এখন চিন্তা করে দেখুন। ওই ৩ মেগাবাইটের প্যাকেজ নিয়ে যদি কেউ ব্যবহার শুরু করে তবে কয়েক মুহূর্তে শেষ হবে এবং তারপর যদি একটি গানও ডাউনলোড করে তবে তার পকেট থেকে চুরি হয় ৪.০৯৬ টাকা (একটি অডিও গান মোটামুটি ৪ক্টমেগাবাইট অর্থাৎ ৪০৯৬ কিলোবাইট হয়)। এখন যদি এই অবস্থায় ওই গ্রাহক মনে করেন যে ওনি ৩ মেগাবাইটের প্যাকেজই ব্যবহার করছেন তবে তিনি ভুল করবেন কেননা ওটা শেষ হয়ে ইতোমধ্যেই ০.০০১/কিলোবাইট প্যাকেজে রূপান্তরিত হয়ে গেছে (প্যাকেজে অবশ্য ০.০১/১০ কিলোবাইট থাকে, যা ০.০০১/কিলোবাইট হারের সমান। বুঝার তুলনার সুবিধার জন্য এমন করা হয়েছে)। আর এটাই হলো ওদের তেলেসমাতি। কিভাবে আপনার আমার টাকা চুরি করছে তা বুঝা অনেকটা অসম্ভব ব্যাপার বটে। আমাদের দেশে যত সাধারণ মানুষ আর টিন এজার ছেলে-মেয়ে এ সকল প্যাকেজ গ্রহন করেন তাতে কোটি কোটি টাকা ওরা চুরি করেও সাধু সেজে আছে। এবং ওদের ধরার কেউ নেই। একজনের যদি ৫ বা ১০ টাকা চুরি করে তবে তার জন্য কে ওদের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাবে আদালতে। আর এই সুযোগটাই ওরা ব্যবহার করছে।

আর একটি ব্যাপার দেখুন-। মাত্র ৩ মেগাবাইটের জন্য মেয়াদ ৭ দিন। আর ১০২৪ মেগাবাইটের জন্য মেয়াদ ৩০ দিন (পি-৬ প্যাকেজ)। ৩ মেগা ৭ দিন হলে, ১০২৪ মেগা ২৩৮৯ দিন (৮০ মাস বা ৬.৬৪ বছর) মেয়াদ পাওয়ার কথা। অর্থাৎ ২৩৮৯ দিনে স্থানে দিচ্ছে মাত্র ৩০ দিন। ছোট ও বড় প্যাকেজের মধ্যে এতো পার্থক্য থাকা উচিত নয়। এখানে আছে আর এক তেলেসমাতি। একজন পি-৬ গ্রাহক যদি ভিডিও ডাউনলোড না করেন তবে ৩০ দিনে কোনভাবেই ১০২৪ মেগা ব্যবহার করে শেষ করা সম্ভব নয়। ফলে ৫০০ মেগাবাইটের কাছাকাছি ব্যবহার করতেই মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। আর ৩ মেগাবাইটের প্যাকেজে কেউ কেউ ৭ দিন মেয়াদ দেখে লোভনীয় অফার মনে করে গ্রহন করবেন। অর্থাৎ মেয়াদের মধ্যেও চুরি বাটাপারির একটা বিরাট ব্যাপার রয়ে গেছে।

আর চুরির কাহিনী আজকে লেখতে পারলাম না। অন্য একদিন এর পর থেকে লেখা শুরু করব।

আসি।।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৫০
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×