সাধারন মানুষকে পরকালের আদালতে দাড়াতে হবে, তাই নেতাদের জন্য ইতিহাসের কাঠগড়া শব্দটি বহুশ্রূত। ইতিহাসের কোর্টে মহাকাল বিচারকের আসনে বসে রায় দিয়েছেন যে বিবাদী জিন্নাহ-মুজিব দোষী সাব্যাস্ত, তারা তো এখন ধরাছোয়ার বাইরে, তাই জেল-জরিমানার ভার তাদের পূজারী জনগনের উপর বর্তাইবে।
অদ্ভুদ লাগে যে ইসলামপন্থি অনেক পন্ডিতও জিন্নাহ কে সমর্থন করে থাকেন। আমার মতে এই হিন্দুস্তানে নিজেস্ব স্টাইলের আধুনিক সাম্প্রদায়িকতার জনক জিন্নাহ। ইতিহাসে শত শত বছর হিন্দু মুসলিম একসাথে পাশাপাশি বসবাস করে এসেছেন, কই 40 এর দশকের মত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তো দেখা যায়নি। 'জনগন নেতৃত্বেরই অনুসরন করে' কথাটির সত্যতায় জিন্নাহর সামপ্রদায়িকতার মন্ত্র হিন্দুস্তানের কানায় কানায় ছড়িয়ে পড়ল দ্রুত। মুসলিম শাসকরা 17 শতাব্দির প্রথম দিক থেকেই মদ্যপ, বিলাসী আর দুনিয়াবী হয়ে পড়লেন, সম্পত্তি-সন্তান-ঘরবাড়ি নিজে দেখে না রাখলে তো আশে পাশের লোকজন নিয়ে যাবেই। ইংরেজরা এসে তাই মুনাফেকীর শাস্তিটা সুদে আসলে বুঝিয়ে দিল মুসলমানদের। এটা তো আর জানাযার নামাজ না যে দোষ স্বীকার করবে, চতুর জিন্নাহ নিয়ে এলেন সর্বরোগ নিরাময়ী ট্যাবলেট--দ্বিজাতিতত্ত্ব অর্থাৎ two nations theory প্রচার মাত্রই সুপারহিট। আলতু ফালতু গানই তো সবসময় সুপার হিট হয়। তৎকালীন দেশে কোন শক্তিশালী ইসলামপন্থি দলও ছিল না অন্য কিছু বলার মত (এখনকার জামায়েতে ইসলামীর লাহান)। 'পাকিস্তানের অর্থ কি, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' এই শ্লোগানটি সৃষ্টি করল এক অভুতপূর্ব craze. মজার ব্যাপার হল পাকিস্তান আন্দোলনের পান্ডারা কেউ ইসলাম চর্চা করতেন না, জিন্নাহ কে কেউ নাকি কোনদিন নামাজ পড়তে দেখেনি। মদ তার প্রিয় বস্তু ছিল। আর এই লোকটি হলেন বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্রটির হেড! ইতিহাসের কি নির্মম রঙ্গ! হিন্দুস্তান ছিল the most precious jewel of the crown of the queen, সেই অন্চলে প্রতিবেশীদের খুনখারাবীতে 10 লাখ লোক মারা গেল, কোটি লোককে ঘরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হল, লুটপাট একটা উৎসব হয়ে উঠল। কুরআন-সুন্নাহএ দ্বিজাতিতত্ত্বের কোন সাপোর্ট নেই। আজকের কাশ্মীর সমস্যা ঘটনাক্রমে গজানো কোন বিষয় নয়, এরকম কোন কিছু না হওয়াটাই হত আশ্চর্য। বর্তমান ভারতের 15 কোটি মুসলমানের জীবনে চিরকালের মত নেমে এল অমানিশা।
End does not justify the means. কাজেই জিন্নাহ রাজনীতিতে ভন্ডামী, অসততা আর দুর্নীতির দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



