বাংলাদেশের কোন এক আঞ্চলিক এলাকায় একটি শব্দ প্রচলিত রয়েছে আর তা হলো "মোয়াফ"। স্বাভাবিক ভাবে যারা এই শব্দের সাথে পরিচিত নয়, তাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, "মোয়াফ" !! এইটা আবার কি জিনিস ??
স্থানীয় ধারণা অনুসারে মনে করা হয়, যে সকল সাদা বিড়াল রাতের বেলা গৃহস্থের মুরগী ধরে খেয়ে ফেলে সেই বিড়াল গুলো আস্তে আস্তে কালো বর্ণ ধারন করে, স্থানীয়দের ভাষায় এই কালো বিড়াল গুলোকে তখন "মোয়াফ" সম্বোধন করা হয়।
মোয়াফ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর সাধারণের কাছে দিনের আলোতে তাই সাদা বিড়াল আর কালো বিড়াল মানে মোয়াফ আলাদা করা খুব কঠিন কিছু হয় না, এবং মোয়াফ গুলোকে সার্বক্ষনিক কেমন যেনো ভীত তটস্থ বলে মনে হয়। তাই সামনে পড়লে এই চিহ্নিত মোয়াফ গুলোকে ছোট বাচ্চারা, পড়শীরা কিংবা যেকোন কেউ ঢিল মারতে দেরি করে না।
আমাদের দেশের রাজনীতিতে এই রকম "মোয়াফ" প্রচুর রয়েছে। দুঃখের বিষয় এই যে, এই সকল মোয়াফ রাজনীতিবিদ ব্যাপক হারে গৃহস্থের মুরগী খেয়ে ফেললেও এদের বর্ণ কালো রূপ ধারণ করে না। দুই-এক জন হাতে নাতে ধরা পরার পর আমরা বুঝতে পারি অমুক রাঘব বোয়াল একজন ''মোয়াফ'' বা কালো বিড়াল। তথাপি ধরা পরার পরও এই মোয়াফদের বাঁচাতে অনেকে তার স্বপক্ষে সাফাই গায়তে শুরু করে। কিন্তু প্রশ্ন হল এই হাতে গোনা দুই-এক জন ছাড়াও যে অসংখ্য ''মোয়াফ" বাজারে ঘোরাফেরা করছে তাদের আমরা প্রকাশ্যে মোয়াফ বলে ডাকব কবে, ঢিল মারবো কবে ??
এমন কোন ব্যবস্থা কি নেওয়া যায় না যাতে করে দেশের অভ্যন্তরে অভিজাত এলাকায় যারা হঠাৎ করে সুউচ্চ আলিশান ইমারত নির্মাণ করছে, যারা চৌ-রাস্তার মোড়ে কয়েক স্তর বিশিষ্ট বিশাল শপিং-মল নির্মাণ করছে, জেলা-উপজেলায়, মফস্বল শহরে, গ্রামে-গঞ্জে যত দূর দৃষ্টি যায় তারও চেয়ে প্রশস্ত জমি-জিরাতের অধিপতি হচ্ছে কিংবা অর্ধ হাজার কোটি টাকার লাইসেন্সে নেওয়া মানুষের পুঁজি রাখার কূপ(ব্যাংক) তৈরি করছে অথবা ভিনদেশে করছে তাদের ভবিষ্যতের নতুন আস্তানা তাদের গায়ের সাদা সোয়েটারের সঠিক ভাবে ব্যবচ্ছেদ করা যাবে ?? তাদের সাদা উর্দির নিচে লুকিয়ে থাকা কালো মোয়াফটাকে টেনে বের করে আনা যাবে ??
আরো যে সব মোয়াফ লুকিয়ে আছে উর্দির তলে আমরা তাদের দেখতে চাই। আমরা জানতে চাই, মোয়াফ তুমি মুরগী খেয়েছে কত?? আমরা প্রকাশ্যে তাদের ঢিল মারতে চাই।।
অতঃপর মোয়াফ ধরুন, ঢিল মারুন ।।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৫:০২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



