
২০১০ সালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসংকট মোকাবিলার কথা বলে দুই বছরের জন্য আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছিল। সেটা ছিল টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রথম আমল। এরপর চার দফায় এই আইনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ২০১২ সালে ২ বছর, ২০১৪ সালে ৪ বছর, ২০১৮ সালে ৩ বছর এবং সর্বশেষ ২০২১ সালে ৫ বছরের জন্য আইনটির মেয়াদ বাড়ানো হয়। এর ফলে ২০২৬ সাল পর্যন্ত আইনটি কার্যকর থাকার কথা।
‘আদালত, ইত্যাদির এখতিয়ার রহিতকরণ’ উপশিরোনামে আইনটির ৯ ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই আইনের অধীন কৃত বা কৃত বলিয়া বিবেচিত কোনো কার্য, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশের বৈধতা সম্পর্কে কোনো আদালতের নিকট প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।’ ‘সরল বিশ্বাসে কৃত কাজকর্ম রক্ষণ’ উপশিরোনামে ১০ ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি, সাধারণ বা বিশেষ আদেশের অধীন দায়িত্ব পালনকালে সরল বিশ্বাসে কৃত বা কৃত বলিয়া বিবেচিত কোনো কার্যেও জন্য কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা বা অন্য কোনো প্রকার আইনগত কার্যধারা গ্রহণ করা যাইবে না।’ ‘এই আইনের অধীন গৃহীত কাজের হেফাজত’ উপশিরোনামে ১৪ ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই আইনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও, এই আইনের অধীন কৃত কাজকর্ম বা গৃহীত ব্যবস্থা এমনভাবে অব্যাহত থাকিবে ও পরিচালিত হইবে যেন এই আইনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়নি।’
এ আইন থেকে স্পষ্ট যে বিদ্যুতের জন্য জ্বালানি আমদানি অথবা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন অথবা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অন্য কোনো কার্যক্রম, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, আদেশ বা নির্দেশের বৈধতা সম্পর্কে কোনো আদালতের কাছে প্রশ্ন উপস্থাপন করা যাবে না। অভিযোগ রয়েছে, এ আইনের আওতায় বিনা দরপত্রে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ ক্রয়, দফায় দফায় অতিরিক্ত মূল্যে চুক্তি নবায়ন, অতি উচ্চমূল্যের এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানি, বিনা দরপত্রে গ্যাস-বিদ্যুতের সঞ্চালন ও বিতরণ, অবকাঠামো নির্মাণ করার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু এ আইন অনুসারে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসংক্রান্ত কেনাকাটার সঙ্গে যুক্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনা যাবে না। এসব বৈশিষ্ট্যের কারণে এ আইনকে অনেকে যুক্তিসংগতভাবেই ‘দায়মুক্তি’ আইন বলে অভিহিত করেন।
আলোচিত এই অধ্যাদেশ ও আইন থেকে এটা বোঝা যায়, দায়মুক্তি কোনো সাধারণ বা নিরীহ বিষয় নয়। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখেছি, বড় ধরনের কোনো অপরাধকে ধামাচাপা দিতে এবং এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি না করার কৌশল হিসেবেই দায়মুক্তি অধ্যাদেশ ও আইন ব্যবহৃত হয়েছে।
বিস্তারিত : এখানে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ১২:৩৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




