ডারউইনবাদীদের দাবি অনুযায়ী বিবর্তন তত্ত্ব যেহেতু 'আদম-হাওয়া মিথ'-কে ভুল প্রমাণ করেছে সেহেতু জুদায়ো-খ্রীষ্টান ও ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীরা নাকি এই তত্ত্বকে মেনে নেয় না। বিবর্তন তত্ত্বকে সত্য প্রমাণ করার জন্য এটি তাদের একটি মোক্ষম অস্ত্র, যদিও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ উপস্থাপন করতে বলা হলে পিছলাইয়া যাওয়া হয়। তাদের দাবি যে নিতান্তই হাস্যকর ও মিথ্যা – তা এক্ষুণি প্রমাণ করে দেয়া হবে। কু-তর্কের খ্যাতিরে ধরেই নেয়া যাক যে বিবর্তন তত্ত্ব যেহেতু 'আদম-হাওয়া মিথ'-কে ভুল প্রমাণ করেছে – অর্থাৎ বানর জাতীয় লেজওয়ালা প্রজাতি থেকে লেজবিহীন মানুষ বিবর্তিত হয়েছে – সেহেতু জুদায়ো-খ্রীষ্টান ও ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীরা এই তত্ত্বকে মেনে নেয় না।
ভাল কথা। কিন্তু মানুষ ব্যতীত আরো মিলিয়ন মিলিয়ন প্রজাতির ক্ষেত্রে ডারউইনবাদীরা কী বলবেন? যেমন তারা যদি মাছ থেকে সরীসৃপ হয়ে পাখির বিবর্তন, এক কীট-পতঙ্গ থেকে অন্য কীট-পতঙ্গের বিবর্তন, এক উদ্ভিদ থেকে অন্য উদ্ভিদের বিবর্তন, চতুষ্পদ কোনো জন্তু থেকে তিমির বিবর্তন, অস্তন্যপায়ী প্রজাতি থেকে স্তন্যপায়ী প্রজাতির বিবর্তন, ইত্যদি প্রমাণ করতে পারেন সেক্ষেত্রে কিন্তু ইসলামে বিশ্বাসীদের মেনে নিতে কোনোই সমস্যা নেই। অন্যদিকে ডারউইনবাদীরা যদি এগুলোর কোনো একটিও প্রমাণ করতে ব্যর্থ হন তাহলে কিন্তু বিবর্তন তত্ত্বকেই ভুল হিসেবে স্বীকার করতে হবে। তাহলে দেখা যাচ্ছে শুধুমাত্র মানুষের বিবর্তন ছাড়া অন্যান্য সকল প্রজাতির ক্ষেত্রে ইসলামে বিশ্বাসীরা পুরোপুরি নিরপেক্ষ হতে পারেন। অন্যদিকে ডারউইনবাদীরা কোনো একটি ক্ষেত্রেও নিরপেক্ষ হতে পারবেন না। প্রমাণ দেখাতে না পারলেও বিশ্বাস করতেই হবে! অথচ উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে বিজ্ঞানের নামে গলাবাজি আর মিথ্যাচার করা হচ্ছে।
বাস্তবতা হচ্ছে বিবর্তন তত্ত্বের ক্ষেত্রে ইসলামে বিশ্বাসীরাই নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে যাচাই করতে পারেন, যেটি ডারউইনবাদীদের পক্ষে সম্ভব নয়। ইসলামে বিশ্বাসীরা বিবর্তন তত্ত্বকে বিজ্ঞানের নামে বিশ্বাস করেন না এজন্য যে, এই তত্ত্ব পুরোপুরি কল্পকাহিনী আর হাস্যকর কিছু অনুমানের উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে। এ-যুগে চিপা-চাপি দিয়ে ও চাপাবাজি করে আর যা-ই করা যাক – বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষকে অন্তত বোকার স্বর্গে ঘুমিয়ে রাখা সম্ভব নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৩২