রিচার্ড ডকিন্সের "The Greatest (!!!) Show on Earth" লেকচার ভিডিওতে এক মহিলা প্রশ্ন করেছেন,
"Even given the billions of years that you say were available for evolution, I simply can not believe it is possible to go from a single cell to a complicated human body."
এর জবাবে অন্য একজনের কথাকে উদ্ধৃত করে রিচার্ড ডকিন্স বলেছেন,
"But madam you did it yourself, and it only took you nine months."
অর্থাৎ সরল একটি অণুজীব থেকে বিবর্তন শুরু হয়ে হাতি-জিরাফ-তিমি ও মানুষের মতো জটিল সব প্রাণী ধাপে ধাপে কীভাবে বিবর্তিত হওয়া সম্ভব – এমনকি বিলিয়ন বিলিয়ন বছর সময়ও যদি দেয়া হয়। রিচার্ড ডকিন্সের জবাব হচ্ছে একজন নারী মাত্র নয় মাসেই তা করে! কীভাবে? ওয়েল, শুক্রাণু-ডিম্বাণুর মিলন থেকে শুরু করে মাত্র নয় মাসেই নারীর গর্ভে মানুষের মতো জটিল প্রাণী বিবর্তিত হয়!
পাঠকরা কি রিচার্ড ডকিন্সের প্রতারণা ধরতে পেরেছেন? উনি কীভাবে তার অন্ধ মুরিদদেরকে ঘোল খাইয়েছেন তা ভাবতেও অবাক লাগে! পশ্চিমা নাস্তিকের ঘোল বলে কথা – দুধের মতো সাদা! অথচ সেই ডকিন্সের-ই কিছু অন্ধ মুরিদ হাঁটুতে বুদ্ধি নিয়ে বিভিন্ন ছদ্মনিকে জাকির নায়েক আর হারুন ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে এমনভাবে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে যা শুনলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও হেসে দেবে।
"একজন নারীর গর্ভে শুক্রাণু-ডিম্বাণুর মিলন থেকে শুরু করে মাত্র নয় মাসে মানুষের মতো জটিল প্রাণীর উদ্ভব"
আর,
"এককোষী একটি অণুজীব থেকে বিবর্তন শুরু হয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষের মতো জটিল প্রাণীর বিবর্তন"
উপরের বিষয় দুটি সদৃশ তো নয়-ই বরঞ্চ পুরোপুরি আলাদা। কারণগুলো নিম্নরূপ:
প্রথমত, নারীর গর্ভে শুক্রাণু-ডিম্বাণুর মিলন থেকে শুরু করে যে পূর্ণাঙ্গ মানুষ বা প্রাণী বিবর্তিত হয় তা নির্দিষ্ট একটি প্রাণীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ, এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীতে বিবর্তন নয়। যেমন একজন মানুষের পেট থেকে মানুষ-ই হয়, সেই মানুষের পেট থেকে আবার মানুষ-ই হয়, এভাবে চলতে থাকে। অনুরূপভাবে, জিরাফের পেট থেকে জিরাফ-ই হয়, সেই জিরাফের পেট থেকে আবার জিরাফ-ই হয়। অন্যদিকে বিবর্তনবাদী পীরদের দাবি অনুযায়ী সরল একটি অণুজীব থেকে বিবর্তন শুরু হয়ে এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে সামান্য উন্নত ও পূর্ণাঙ্গ প্রজাতি বিবর্তিত হয়েছে। সেই উন্নত প্রজাতি থেকে আবার এলোমেলো পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে তার চেয়ে অধিকতর উন্নত ও পূর্ণাঙ্গ প্রজাতি বিবর্তিত হয়েছে। এরূপ বিবর্তনে লক্ষ লক্ষ বা মিলিয়ন মিলিয়ন বছর সময় লেগেছে। এভাবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধাপে ধাপে অনুন্নত থেকে অধিকর উন্নত হতে হতে হাতি-জিরাফ-তিমি ও বিবর্তনবাদীদের মতো জটিল সব প্রাণীর উদ্ভব হয়েছে! এর মধ্যে আবার পুরো উদ্ভিদজগতও বিবর্তিত হয়েছে!
দ্বিতীয়ত, শুক্রাণু-ডিম্বাণুর মধ্যে একটি নির্দিষ্ট প্রাণীর সকল প্রকার বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকে। অন্যদিকে বিবর্তনবাদীদের দাবি অনুযায়ী যে এককোষী অণুজীব থেকে বিবর্তন শুরু হয়েছে সেই অণুজীবের মধ্যে বর্তমান প্রাণীদের তেমন কোনো বৈশিষ্ট্যই বিদ্যমান ছিল না, থাকার কথাও নয়।
তৃতীয়ত, একটি প্রাণী পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় আসার আগে যদি পেট থেকে ধাপে ধাপে বের করা হয় তাহলে সেই ধাপগুলোতে প্রাণী যে অবস্থায় থাকে সেই অবস্থায় বাঁচতেই পারবে না, বংশবৃদ্ধি করা তো দূরে থাক।
চতুর্থত, শুক্রাণু ও ডিম্বাণু খোলা জায়গায় রেখে দিলে অল্প সময়ের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য শুক্রাণু-ডিম্বাণুর মিলন থেকে একটি প্রাণী বিবর্তিত হতে হলে অত্যন্ত সফিস্টিকেটেড একটি আধার দরকার হয়। এই সফিস্টিকেটেড আধার কী করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ধাপে ধাপে বিবর্তিত হওয়া সম্ভব – সেটাও একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন!
তাহলে দেখা যাচ্ছে বিবর্তনবাদের গাঁজাখোরী-মার্কা কল্পকাহিনীর সাথে সম্পূর্ণ অ-সদৃশ ও দিনের আলোর মতো সত্য একটি বিষয়ের 'মিল' দেখিয়ে অন্ধ মুরিদদেরকে বোকা বানানো হয়েছে!
বিবর্তনবাদী মোল্লাদের পীর রিচার্ড ডকিন্সের লেকচার (কবিতা আবৃতি)
আরো পড়ুন:
হারুন ইয়াহিয়ার লেখার জবাবে রিচার্ড ডকিন্সের ভাঁড়ামি
বিবর্তনবাদী মোল্লাদের প্রতি কিছু প্রশ্ন
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:১৬