somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প লেখার শখ

১২ ই মার্চ, ২০১০ রাত ১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লেখকরা কেমন করে মনের কথাটা লিখে ফেলেন ভাবতে অবাক লাগে। পড়তে পড়তে দেখা যায় আরে আমি তো ভেবেছিলাম এই কথাটা শুধু আমিই ভাবি। অর্থাৎ কোন একটা ব্যাপার তাঁরা কিভাবে যেন পাঠকের মন মত করেই প্রকাশ করে ফেলেন। হতে পারে আমি একটা জিনিস যেভাবে ভাবি সেই জিনিসটাকে অনেকেই সেভাবেই ভাবে। কিন্তু প্রকাশটা সবাই করতে পারে না, পারেন আমার হাতে যেই বই তার লেখক। Aristotle এর ধারণা fiction লেখার আগে পুরো প্লট সাজিয়ে নিয়ে বসতে হয়। আসলেই কি তাই? আমি ঠিক জানি না। কেউ কেউ তো হঠাৎ করেই খুব চমৎকার একটা উপন্যাস বা গল্প বা কবিতাকে রূপ দিয়ে ফেলতে পারেন। তেমন চিন্তাভাবনা ছাড়াই। সারাজীবনে আমি কতবার চেষ্টা করেছি কিন্তু কিছুতেই পারি না। কেউ কেউ বলে সবাইকে দিয়ে সব কাজ হয় না। আবার কেউ কেউ বলে চেষ্টা করলে সবই হয়। ছোটকালে বেশ চেষ্টা চরিত্র করতাম, গল্প শেষও করতাম লিখে। কিন্তু পড়লেই বুঝে যেতাম প্রায় এই গল্পটাই কিছুদিন আগে কোথায় যেন পড়েছি। আবার বড়কালে খুব উৎসাহ নিয়ে যেই গল্পটা লিখতে শুরু করেছিলাম সেটা ছিল এমন...বছর চল্লিশেক বয়সের এক নারী স্বামীর সঙ্গে দেশের বাইরে থাকে। দু’জন সন্তান আছে তার। তার জীবনের একমাত্র প্রেমটা ব্যর্থ হয়। একদিন সে খালি বাসায় বসে দেশে ফেলে আসা পুরনো দিনের নানা কথা ভাবছে। বিশেষ করে এই পর্যন্ত যতজন পুরুষকে সে কাছ থেকে দেখেছে তাদের কথা। কারো জন্যই সে কোন টান অনুভব করে না এখন। জীবনে কি কি না পাওয়া আছে তাও ভাবছে। হঠাৎ করেই প্রাইমারিতে পড়ার সময়কার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কথা মনে পড়ে যায়। শান্তশিষ্ট ধরণের একটা ছেলে যে খুব কম বয়সে মারা যায়। ছেলেটা মেয়েটার জন্য অনেক সময় নিয়ে একটা উপহার তৈরি করছিল। বলেছিল তার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুকে সে একটা বিশাল সারপ্রাইজ দিবে। মেয়েটারও অধীর অপেক্ষা। এর মাঝেই ছেলেটা অসুখে পড়ে, কিছুদিন পর মারা যায়। বড় হতে হতে মৃত বন্ধুর কথা দিনে দিনে সে ভুলেই যায় অনেকটা। আজকে হঠাৎ করেই তার মনে হয় এত দামী ঘরবাড়ি গোছানো সংসার সব কিছু বৃথা। কখনোই জানা হবে না সেই সারপ্রাইজটা কি ছিল। সে প্রচন্ড অস্থির অনুভব করতে থাকে সেই উপহারটা হাতে পাওয়ার জন্য...এইরকম ছিল আমার গল্পটা যেটাকে কিছুতেই চেহারা দিতে পারিনি। দুই পৃষ্ঠা এগিয়েই শেষ।

এলেবেলে টাইপের কয়েকটা কবিতার কথা বাদ দিলে সারাজীবনে পেপারের দোর পর্যন্ত একটা গল্পই নিয়ে যেতে পেরেছিলাম। দুঃখ ছিল যে সেখানে নিজের নামের আগে “সংগ্রহ” শব্দটা জুড়ে দিতে হয়েছে কারণ সেটা গ্রামে গিয়ে শোনা কাহিনীর লৈখিক রূপ, মৌলিক কিছু না। আমার হলদে রঙের খাতাটা হারিয়ে গিয়ে আমার টুকটাক ছড়া-গল্প লেখার নেশাটাকে মাটিচাপা দিয়ে দিয়েছে। এখন হাজার কলম ঘষলেও এমনি এমনি বলা ছন্নছাড়া কথা ছাড়া আর কিছুই বেরিয়ে আসে না, যদিও এতে দুঃখ হয় না মোটেই। সেই বাচ্চাকালে কবি লেখক জাতীয় কিছু হবার বাসনা ছিল। অনেককাল পর ইচ্ছাটা আবার ফিরে এসেছে। এখন তাই মাথার মধ্য গুমরে মরছে একটা মেয়ের গল্প যে নিজের আর অন্যের সৃষ্ট প্যাঁচে বারবার আটকে যায়; একটা ছেলের গল্প যে অনেক অনেক কিছু পেয়েও সুখ হারিয়ে ফেলে; একটা বাচ্চার গল্প যার খুব একটা প্রাণঘাতী অসুখ; এক প্রৌঢ়ার গল্প, ঘর সাফ করতে গিয়ে একটা পুরানো চিঠি পেয়ে যার সব হিসাব এলোমেলো হয়ে গেল; এক বৃদ্ধের গল্প যাকে শৈশব ফিরিয়ে দেয়ার পরও জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলটা স্বেচ্ছায় আবার করে।

গল্প লেখার শখ হয়ত পূরণ করতে পারব না। অন্য কোন শখ পূরণ করে নেয়ার চেষ্টা করব নাহয় এর বদলে।

৩৫টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×