somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিয়েতে যখন এতই ঝামেলা তবে লিভটুগেদারই ভালো..!!

২৬ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

“এই বয়েসে বিয়ে..!! কি সাংঘাতিক..!! ছেলের বয়সতো সবে মাত্র ২৪-২৫ হলো। এখোনো পড়ালেখা শেষ হলো না, স্ট্যাব্লিশ(প্রতিষ্ঠিত) হলো না..!! মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই ভাবনা বয়স মাত্র ২১ কি ২২ এখনতো সে অনেক ছোটো..!! তাছাড়া অন্তত্য অনার্স-মাস্টার্সটা কমপ্লিট না হলে কি চলে..?? স্ট্যাটাস বলে কথা..!!”



আমাদের সমাজে অধিকাংশ পিতা-মাতা তাদের ছেলে-মেয়েদের প্রাপ্ত বয়েস হলেও বিয়ে দিতে ভিষণভাবে অনাগ্রহী। এর প্রধান কারণ আল্লাহর উপর আস্থাহীন তথাকথিত পুঁজিবাদি ধ্যানধারণা। একইসাথে সমাজে বিয়ে নিয়ে একধরণের ভিতি ছড়ানো হয়েছে যে, বিয়ে মানেই হলো কত কত টাকা; ফলেও একটা ছেলেকে বিয়ের কথা ভাবতে গেলেই চোখে-মুখে দুঃস্বপ্নের মত আতঙ্ক ভেসে ওঠে। তরুনদেরকে স্ট্যাব্লিশমেন্টের নামে বসে বসে বুড়ো হয়ে জীবনী শক্তি হারাতে হচ্ছে। তাছাড়া সমাজের অধিকাংশ পরিবারগুলোর প্রতিটা মা-বাবাই কম বেশি জানেন তাদের ছেলে-মেয়েরা বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক অর্থাৎ প্রেম করছে। এমনকি অনেক ছেলে-মেয়ে যারা বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড এর সম্পর্ক থেকে আর একটু এগিয়ে বিয়ে বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কে জড়াতেও দ্বিধা করছে না। বরং এটা এখন অনেকের কাছে হাল আমলের তথাকথিত যৌনস্বাধীনতা বা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে এবং এমন আদর্শ যারা লালন করে তাদের একটা বেশ বড় গোষ্টিও ইতোমধ্যে তৈরী হয়ে গেছে। অথচ এত সব কিছু জানার পরও বাবা-মায়েরা কিছুটা লোক দেখানো কনসার্ন বা উদ্বিগ্ন হলেও বাস্তবে এই সিস্টেমের কাছেই মাথা পেতে নিচ্ছেন বা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। অথচ এর টেকসই কোনো সমাধান কেউ খুঁজে পাচ্ছে না, এমনকি চেষ্টাও করছেন না।

অথচ এর সহজ সমাধান রয়েছে ছেলে-মেয়েদের একটু দ্বায়িত্ব নিয়ে বিয়েটাকে সহজ করার মাধ্যমে। অনেকে হয়তো ভাবেন, এই বয়েসে বিয়ে..!! কি সাংঘাতিক..!! ছেলের বয়সতো সবে মাত্র ২৪-২৫ হলো। এখোনো পড়ালেখা শেষ হলো না, স্ট্যাব্লিশ(প্রতিষ্ঠিত) হলো না..!! আল্লাহর প্রতি আস্থা হারিয়ে রিজিকের সমস্ত চিন্তা নিজেদের উপর চাপিয়ে নিচ্ছে। অথচ আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, তোমরা যদি তাকওয়া অবলম্বন করে চল তাহলে তোমাদের রিজিকের ব্যবস্থা কিভাবে হবে তোমরা তো কল্পনাও করতে পারবে না। এর মানে এই নয় যে আমি স্ট্যাব্লিশমেন্টের বিরুদ্ধে!

একইভাবে মেয়েদের ক্ষেত্রেও একই ভাবনা বয়স মাত্র ২১ কি ২২ এখনতো সে অনেক ছোটো..!! তাছাড়া অন্তত্য অনার্স-মাস্টার্সটা কমপ্লিট না হলে কি চলে..?? স্ট্যাটাস বলে কথা..!! তদের উদ্দেশে বলবো, আরে ভাই আপনি যাদের ছোটো ভাবছেন, আপনি কি জনেন? এই বয়সে আপনার ছেলে বা মেয়ে কতোটি প্রেম করেছে? বা এই মূহুর্তে কততম প্রেম করছে? কতজনকে সে বউ বা হ্যাজবেন্ট ভেবে স্বপ্নে বিভোর থেকে রাতে কাটিয়েছে? যারা এই বয়েস ৪-৫ প্রেম করতে পারে তারা বিয়ে করতে পারবে না বা এখনো ম্যাচিউরড হয় নি, এমন চিন্তা আপনাদের মাথায় আসে কিভাবে? তাছাড়া বিয়ে করলে পড়ালেখা হবে না বা ব্যাঘাত ঘটবে এমটি যারা ভাবেন তাদেরকেও বলি, তাই যদি হয় তাহলে ছেলে-মেয়েরা এতোগুলো প্রেম করে কিভাবে পড়ালেখা করছে? বরং এতেতো তাদের মানষিক চাপ আরও বেশি থাকে। কারণ সব সময় তাদের এই চিন্তা করতে হয়, কেউ দেখলো কি না; এই বুঝি ধরা খেয়ে গেলাম, জানতে পারলে আব্বু আম্মুর বকুনি; সমাজের কে কি ভাবে? এমন নানান টেনশন তাদের সবসময় তাড়া করে বেড়ায়। তাছাড়া দিন-রাত ফোন কথা বলে সময় নষ্ট; দুজনের মধ্যে ঝগড়া-ঝাটিতো লেগেই থাকে। এর পাশাপাশি রয়েছে পরস্পরের মধ্যে বিশ্বাসের ঘাটতি জনিত দ্বন্দ। অনাকাঙ্খিত মান-অভিমান; ভুল-বোঝাবুঝি ও তার পর একসময় ব্রেকআপ। খুব কম সংখ্যকেরই সম্পর্ক পূর্ণতা পায়। ফলে যা হচ্ছে তা হলো: নারী-পুরুষ পরস্পরের মাঝে একটি বিশ্বাসহীন, সম্মানহীন, দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রজন্ম গড়ে উঠছে; বেড়ে যাচ্ছে অনাচার(ব্যাভিচার)। ধীরে ধীরে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে বিয়ের প্রতি একটি অনিহা তৈরি হচ্ছে। অথচ বিয়ের প্রতি অনিহা সৃষ্টি হলেও মানবিক চাহিদাতো আর কমে যায় না। ফলে আশ্চর্য হলেও সত্য লিভটুগেদারকেই নিরাপদ পন্থা হিসেবে বেছে নিচ্ছে অনেকেই।

পরবর্তীতে ফ্যামিলিগত সিদ্ধান্তে বিয়ে হলেও তারা আর কখনো একে অপরের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে সংসার জীবন পরিচালনা করতে পারে না। ফলে তৈরি হচ্ছে ভয়াবহ পারিবারিক অস্থিরতা; বেড়ে যাচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদ; ভেঙ্গে যাচ্ছে পরিবার প্রথা।

এমন অনেক উদাহরণ আমরা আমদের চারপাশে প্রতিনিয়তই দেখছি। সুতরাং আসুন আমরা ছেলে-মেয়েদের তাড়াতাড়ি ও সহজে বিয়ের ব্যাপারকে ট্যাবু নিষিদ্ধের মত না দেখে এটিকে সহজ করি; প্রতিষ্ঠিত করি।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০১৫ রাত ১১:৫২
৮টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের সংগ্রামী জনতার স্লুইস গেট আক্রমণ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২১


(ছবির লাল দাগ দেয়া জায়গাটিতে গর্ত করা হয়েছিল)

শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

২৩শে এপ্রিল পাক সেনারা ফুলছড়ি থানা দখল করে। পাক সেনা এলাকায় প্রবেশ করায় মানুষের মধ্যে ভীতিভাব চলে আসে। কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×