সরকার হিসেবে আওয়ামীলীগে অসংখ্য অনিয়ম রয়েছে। ছোট বড় অসংখ্য ব্যার্থতাও আছে। আছে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার। তবুও এই সরকার আছে বলে বাংলাদেশ এখনো ভাল কিছু স্বপ্ন দেখছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনার আবির্ভাব না হলে পঁচাত্তরের ঘাতক ও একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও দণ্ড দেওয়া সম্ভব হতো না। আওয়ামী লীগ বিভক্ত হতো, দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে থাকতে পারত না। সামরিক ও স্বৈরাচারী শাসন আরো দীর্ঘস্থায়ী হতো; বিএনপি-জামায়াতের শাসনে বাংলাদেশ আবার একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত হতো। তালেবান, আল-কায়েদার উত্থান প্রতিহত করা যেত না। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো বাংলাদেশও একটি কিলিং ফিল্ডে পরিণত হতো। আমেরিকা, ন্যাটো, এমনকি ভারত বাংলাদেশে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে সামরিক হস্তক্ষেপের সুযোগ পেত। গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসত না। অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটানো যেত না। ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা কয়েকটি সমস্যার সমাধান হতো না। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মান ও মর্যাদা বাড়ত না। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাংলাদেশ উন্নয়নের একটি মডেল কান্ট্রি হিসেবে বিবেচিত হতো না। সর্বোপরি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর স্বমর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করা যেত না।
উপমহাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ এক বিস্ময়কর ব্যতিক্রম, পাকিস্তানে মধ্যযুগীয় ধর্মান্ধতা শক্তিশালী হয়ে ওঠায় গৃহযুদ্ধ চলছে। মুসলমানদের হাতে মুসলমান নিহত হচ্ছে, মসজিদ-মাদরাসা ধ্বংস হচ্ছে। ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদ ক্ষমতা দখল করেছে। একমাত্র বাংলাদেশে এই ধর্মান্ধ ফ্যাসিবাদ সম্পূর্ণ নির্মূল করা না গেলেও তার উত্থান প্রতিহত করা গেছে। বাংলাদেশ যে তার অসাম্প্রদায়িক স্বাধীন সত্তা এখনো নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে টিকিয়ে রাখতে পেরেছে তার কৃতিত্ব শেখ হাসিনার। বাংলাদেশের এই অসাম্প্রদায়িক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই হাসিনা সরকারের আগামী নির্বাচনেও জয়ী হয়ে ক্ষমতায় থাকা উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১:১৯