somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন গুরুতর আহত মানুষ, শারীরিক লাঞ্ছনা এবং...

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অন্তর্জাল এবং ডিজিটাল মিডিয়ার কল্যাণে মোটামুটি সবাই এখন অবগত আসিফ মহিউদ্দিনের ঘটনা সম্পর্কে। আমাদের ব্লগগুলো এবং ফেসবুক দুনিয়া প্রচুর পোস্টে সয়লাব, ক্ষণে ক্ষণে আপডেট জানাচ্ছেন তার কাছের মানুষেরা, আমরা যারা দুরের মানুষ, তারা এইসব আপডেটেড পোস্টগুলি থেকেই জানতে পারছি, তার কি অবস্থা বর্তমানে। এই সুবাদে তার পক্ষে বিপক্ষে লেখাও কম হচ্ছে না। এই অধমও কী বোর্ডের সামনে বসে গেলো তাই ঝটপট দু’কলম লেখতে।
আসিফ ভাইয়ের আহত হবার খবর প্রথমে পাই একজনের ফোনকলে। রাত তখন এগারটা। জানার পর প্রথমেই ঢুকলাম ফেসবুকে, এবুং একচোট হতাশ হলাম। পোস্টগুলি থেকে বিশদভাবে তেমন কিছু জানা যাচ্ছিল না, শুধু এটুকু জানলাম, তিনি ছুরিকাহত, উত্তরার একটি হাসপাতালে আছেন। বুহলাম, এখান থেকে আর ডিটেইল জানা যাবে না। এলাম সামু’তে।সামু’তে পেলাম একটা ‘আপডেট পোস্ট’। এই পোস্টে ঢুকে এর নমুনা দেখে রীতিমতো বিস্মিত এবং প্রচন্ড অবাক হলাম। পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে আসিফ মহিউদ্দিন “শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত” হয়েছেন। WTF?? একটা মানুষকে ছুরিকাঘাতে মূমুর্ষু করে ফেলা হল, আর সেটা সামু’র ভাষায় হয়ে গেল শারীরিক লাঞ্ছনা?? পরে অন্য একটা ব্লগে গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জেনেছি, কিন্তু কথা হল, এ ধরনের ভন্ডামির মানে কি?? এ ধরনের জলজ্যান্ত একটা ঘটনাকে লুকানোর অপপ্রয়াশ কেন?
আইহোক, কিছুক্ষন পরেই সামুতলীয় এবং ফেসবুকীয় ব্লগারদের পোস্টের বন্যা শুরু হয়ে গেল। ধৈর্যধরে কিছু পোস্ট ও তার নিচের কমেন্টগুলো পড়লাম। হায়রে দুনিয়া!! যাদের সাথে আসিফ ভাইয়ের ব্যক্তিগত দন্দ ছিল, তারা বলতে গেলে আনন্দে মিস্টি বিতরনের সমকক্ষ কিছু লেখা প্রসব করেছেন।আর তাদের অনুসারীরা যথারীতি তাল মিলিয়ে খিস্তিখেঊড় চালিয়ে গেছেন সোল্লাসে। চলেছে আস্তিক-নাস্তিক বিতর্ক, ছাগু মানসিকতার লোকজন গলা মিলিয়ে গেয়ে চলেছেন সময়োপযোগী কীর্তন। অথচ এইসব পোস্টপ্রসবা মানুষদেরই আমরা তথাকথিত মুক্তমনা হিসেবে জানি, আমরা কূপমন্ডুকেরা উদারমনা হবার গোপন রেসিপি জানতে হানা দেই তাদের ব্লগগুলো কিংবা ফেসবুক ওয়ালে। এদের অনেকেই দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার তাদের শানিত কলম নিয়ে, অথচ এই রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরাও কিন্তু বিরোধী পক্ষের লোকজনের অসুস্থতা কিংবা দুর্গতিতে সহমর্মিতা প্রকাশ করেন, সমবেদনার বার্তা পাঠান, যতই তা লোক দেখানো হোক না কেন। তবে কি ধরে নেব আমাদের মুক্তমনারা দেশের দুর্নীতিগ্রস্থ রাজনৈতিকদের থেকেও নিচু স্তরে নেমে গেছেন যে, একজন গুরুতর আহত লোকের প্রতি সহজাত সহমর্মিতাটুকু প্রকাশ করার মতো স্বাভাবিক শিষ্ঠাচারবোধটিও হারিয়ে গেছে তাদের মধ্য থেকে???
ভালো লেখা যে আসেনি একেবারে তা নয়। কিন্তু সেগুলো পরিমানে অতি নগন্য এবং কমেন্টগুলিতে আসিফবিরোধী লোকজন তাদের নেতিবাচক বাক্যালাপ অব্যাহত রেখেছেন।
আসিফ মহিউদ্দিনের সাথে সবার মত না-ই মিলতে পারে, মতপার্থক্য থাকবেই। কিন্তু এটা তো ভুলে গেলে চলবেনা যে তিনিও একজন ব্লগার, ব্লগ জগতের সাথে সংশ্লিস্ট সবার সহকর্মী। আজ যারা তার এ দুর্দশায় খুশি হয়ে নৃত্য করছেন, দু’দিন পরে যে তাদের উপরেও হামলা আসবে না, তার নিশ্চয়তা কি? সেদিন হয়তোবা নিজেদের আহত, জ্ঞ্যানশুন্য দেহটিকে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়ার মতো লোক খুঁজে পাওয়া দুস্কর হয়ে পড়বে। সচেতন হবার সময় এখনই।
যাইহোক, অনেক হয়েছে চর্বিত চর্বন। আমরা হুমায়ুন আজাদের মতো আর কোন উদাহরন দেখতে চাইনা এদেশে। আসিফ ভাই সুস্থ হয়ে উঠুন, ফিরে আসুন তার প্রিয়, পরিচিত ব্লগ জগতে। তার জন্যে এক গুচ্ছ শুভকামনা।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×