somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গো হোম, ইউ আর ড্রাঙ্ক!

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত কয়েকদিন ধরেই অনলাইন দুনিয়া তোলপাড় হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আভ্যন্তরীণ কিছু ঘটনা নিয়ে। শুরুটা হয়েছিল জনৈক অখ্যাত মাহবুব হাসানের একটা পোস্ট থেকে, যেখানে তিনি এক নির্যাতিতা ছোট বোনের আকুতি তুলে ধরেছেন, বোনটিকে নাকি ক্যাম্পাসের নরপশুরা র‍্যাগিং এর নামে শারীরিক নির্যাতন করছে, যৌন নিপীড়ন চালাচ্ছে। মাহবুব সাহেবের লেখার হাত খুবই ভালো বলতে হবে, কেননা তার লেখাটা পড়ে আমার মনটাই কষ্টে ভরে গিয়েছিল। আহারে, আমার ক্যাম্পাসেরই তো ছোটবোন, না জানি কেমন মানসিক কষ্টে আছে। সাথে সাথে খোঁজ লাগালাম যেটুকু তথ্য ওই পোস্টে পাওয়া গেলো তার থেকেই। আমার মনে হয় পোস্টটা যাদেরই চোখে পড়েছে তাদের সবাইই একই কাজ করেছেন। যাইহোক, ইতিমধ্যে মাহবুব সাহেবের পোস্ট শেয়ার হতে হতে একাকার, প্রচুর পেজ এডমিনরাও নিজেদের পেজের স্ট্যাটাস হিসেবে কপি করেছেন সেটা। ব্যাস, পোস্ট ছড়িয়ে গেলো সারা বিশ্বে, মাহবুব সাহেব হয়ে গেলেন ফেসবুক কিংবদন্তী, একালের রবিনহুড। আর আমরা যারা ভার্সিটির বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্র, যাদের কেউ কেউ হয়তোবা কিঞ্চিত লেখালেখির সাথেও জড়িত, তারা হয়ে গেলাম ভিলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে গেল ভিলেন। প্রত্যেকটা পোস্টে হাজারো মানুষ আমাদের এবং আমাদের ক্যাম্পাস নিয়ে মুখে যা আসে তাই বলতে লাগলো, ইন-বক্স ভরে গেলো মেসেজের পর মেসেজে। কেউ কেউ জাহাঙ্গীরনগরকে বেশ্যালয় বানিয়ে দিলো, কেউ কেউ ক্যাম্পাসের কোনও মেয়ের ভার্জিনিটি নেই বলে জোর গলায় দাবি জানালো। মোট কথায় শ্লীলতার সীমা ছাড়িয়ে গেলো প্রায় সবাইই। প্রতিবাদ করেছি অনেক পোস্টেই, ভদ্র এবং শ্লীল ভাষায়, যুক্তিযুক্ত প্রতিবাদ। কে শুনে কার কথা! যুক্তিতে হেরে তাদের সবার মুখেই একই কথা, আমাদের নাকি “চোরের মায়ের বড় গলা”!!!
যাই হক, বেশ কিছু স্বনামধন্য অনলাইন এক্টিভিস্ট এবং আমার মতো যারা কর্তব্যের খাতিরে এই বিষয়টা নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছি, তার থেকে বেরিয়ে আসলো ঘটনাটা পুরোপুরি বানোয়াট এবং মিথ্যা।(Click This Link)
সস্তা জনপ্রিয়তার অভিপ্রায়ে মাহবুব হাসান গংরা এই হীন কাজটি করেছিলেন, তবে অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকলেও থাকতে পারে! তবে তাদের প্রোপাগান্ডায় তারা পুরোপুরি সফল। মাহবুব সাহেব তার ঐ স্ট্যাটাস এখনও বহাল রেখেছেন,(Click This Link) যদিও নিচে একটা কমেন্টে ছোট করে আপডেট দিয়েছেন, ঘটনাটা পুরোপুরি ভ্রান্ত বলে, এবং সবার কাছে দুঃখও প্রকাশ করেছেন, ব্যস এটুকুই। জাহাঙ্গীরনগরের বিরুদ্ধে বিষেদাগার তখন চলছে পুরো-দমে, ফুল ভলিউমে। নতুন এই ঘটনা ভুয়া প্রমাণিত হবার পর তারা খুঁজে বের করলেন সেই আদি ও অকৃত্রিম পুরনো কাসুন্দি, সেঞ্চুরি মানিক প্রসঙ্গ। মানিক এই ভার্সিটির স্টুডেন্ট ছিল, তাই ক্যাম্পাসের প্রাক্তন, বর্তমান এবং অনাগত সব শিক্ষার্থীই অপরাধী, তাদের বক্তব্যের সারমর্ম এটাই।
ভাই থামেন। মানিক প্রসঙ্গে আমারও কিছু বলার আছে। আমি বলবো না মানিক নিষ্পাপ ছিলো, দুধের খোকা ছিল। সে প্রচুর অপরাধের হোতা ছিল ক্যাম্পাসে, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকার কারণে এইসব অপরাধ করার মতো সুযোগও সে পেয়েছিল। ক্যাম্পাসের কিছু মেয়ের সম্ভ্রম সে হরণ করেছে, এটাও মিথ্যা না। কিন্তু তাই বলে যারা মনে করে থাকেন শখানেক মেয়েকে রেপ করার পরে মানিক সেঞ্চুরি পালন করেছিল উৎসব করে, তাদের বলবো, গো হোম, ইউ আর ড্রাঙ্ক! জাহাঙ্গীরনগরের মেয়েরা ছেলের হাতের মোয়া না! এই ভ্রান্ত তথ্যটি গণমাধ্যমে সেই সময় চাউর করার কৃতিত্ব সেসময়ে ক্যাম্পাসে অবস্থানকারী জামাত-শিবিরের পা চাটা কিছু ছাগু সাংবাদিকের, যারা কিনা শুধুমাত্র নিজেদের এবং নিজেদের সংগঠনের স্বার্থসিদ্ধির হীন উদ্দেশ্যে মানিকের সেঞ্চুরি পালনের গাঁজাখুরি সংবাদ পরিবেশন করেছিল, সেসময়ের ছাগু পত্রিকাগুলো ফলাও করে সেসব নিউজ ছাপিয়েছে, সম্পাদকীয় লেখা হয়েছে কলামের পর কলাম। একবারের জন্যেও তারা ক্যাম্পাসের হাজারো ছাত্রছাত্রীর দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে নি। সেসময়ের কত অভিভাবক যে মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে বিপত্তিতে পড়েছেন শুধুমাত্র মেয়েটা জাহাঙ্গীরনগরে পড়ার কারণে, কত ছেলের দিকে মানুষজন তাদের বাঁকা আঙ্গুল তাক করে বলেছে, ‘তুমি জাহাঙ্গীরনগরে পড়ো, তুমিও এসব করো’ ইত্যাদি ইত্যাদি, তার কথা শুধু ভুক্তভোগীই জানে। হায়রে, এত কিছুর বিচার হয় এদেশে, এই সব সাংবাদিক নামের কলঙ্কদের বিচার হয় না ক্যান?? ক্যাম্পাসের ছাত্রছাত্রীদের এখন পর্যন্ত বলি হতে হচ্ছে সেই হলুদ সাংবাদিকতার যূপকাষ্ঠে। আমার কথা হল, যদি ঘটনাটা আসলেই ঘটে থাকে, তবে এই সাংবাদিকেরা কেনো মানিকের সেঞ্চুরির জন্যে অপেক্ষা করছিলেন??? সে যখন দশ-বিশটা মেয়ের সাথে ঐ কাজ করেছে তখন তারা ছিলেন কোথায়? নাকি মানিক সাহেব একদিনেই ঐ কাজ সমাধা করে ফেলেছিলেন? (কস্কি মমিন! ক্যাম্নে কি!!!) ব্যাপারটা আপাতদৃষ্টিতে এমন, মানিক যখন একের পর এক রেপ করে বেড়াচ্ছেন তখন এসব সাংবাদিকেরা নাকে তেল দিয়ে ঘুমচ্ছিলেন। যেই না মানিক সেঞ্চুরি করার পরে পার্টিতে তাদের দাওয়াত দিলো, অমনি তাদের ঘুম ভাংসে, আর কাছা-টাছা খুইলা নাইমা পড়ছেন সাংবাদিকতার মহান দায়িত্বে। তাই নয় কি? কিউরিয়াস মাইন্ড ওয়ান্টস টু নো।
আর যারা এখন এই পুরান গু, মানিকের ইয়ে হাতে নিয়া কচলায়া সুখ পাইতেছেন, তাদেরও বলি, এই মানিকরে কিন্তু আমরা ছাত্রছাত্রীরাই আন্দোলন কইরা ক্যাম্পাস ছাড়া করসিলাম। আপনাদের মতো বাল্মার্কা সুশীলরা বাইরে থেকে উইড়া আইসা করেন নাই কাজটা। সানীর বিরুদ্ধে আন্দোলনেও আমরাই মাঠে নামছি, কবি-বুদ্ধিজীবী আইনা খাড়া করতে হয়নাই। আমাদের শিক্ষকরাও আমাদের পাশেই ছিলেন সবসময়ই, অন্যায়ের প্রতিবাদ কি করে করতে হয় এ শিক্ষা আমরা তাদের থেকেই পাই।
প্রসঙ্গত আলোচনায় আসে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় গত প্রায় দুই দশক ধরে শিবির-মুক্ত। এই একটা ব্যাপারে সম্ভবত আমরা পুরা দেশে ইউনিক, জাহাঙ্গীরনগরে জামাত শিবিরের প্রবেশাধিকার নাই, তাদের লেঞ্জার খোঁজ পাইলেও সেইটারে গলাধাক্কা দিয়া বাইর করা দেয়া হয়। আর এ কারণে জামাত-শিবির এবং তাদের পা-চাটা সম্মিলিত ছাগুসমাজ এই ক্যাম্পাসের উপরে বরাবরই ক্ষ্যাপা। তাদের ছিদ্রান্বেষী মন সবসময়ই সুযোগ খুঁজে, কি করে এই ভার্সিটিরে পচানো যায়। এইবারও ব্যতিক্রম হয়নি তার। পোস্টের পর পোস্টে ভরিয়ে ফেলেছেন হোম পেজ, লিখেছেন ব্লগের পর ব্লগ। বিভিন্ন পোস্ট লিঙ্ক সহ কমেন্ট করেছেন সোৎসাহে। তাদের ঈদ লেগেছে। এই সুবাদে কিছু ফেসবুক স্টার, কবি সাহিত্যিকের ছাগু মুখোশও উন্মোচিত হয়েছে। তাদের নাম উল্লেখ করার প্রয়োজন নাই, তবে আমরা খুশী। যত বেশী ছাগু চিনহিত করা যায় ততই ভালো। কোন কোন পেজ ছাগুরা চালায় সেটাও বেরিয়ে এসেছে। আমরা আবারো খুশী। অনেকদিন কাচ্চি খাইনা!!!
একটা পেজের স্ট্যাটাসে জাহাঙ্গীরনগরের র‍্যাগের রগরগে বর্ণনা দেখলাম। পড়ে মনে হচ্ছিল আবু গারিব কারাগারের প্রতিবেদন পড়ছি বুঝি!!! জুনিয়রদেরকে নাকি নগ্ন করে গ্রুপ সেক্স করতে বাধ্য করা হয়!!! ভাইরে, কই পান আপনারা এসব খবর?? আমার বাড়ির খবর আমিই জানিনা, জানে পাশের পাড়ার আব্দুলে!! যিনি এই গালগল্পটি রচনা করেছেন, তার বোঝা উচিত ছিল, আষাঢ়ে গল্পের একটা লিমিট থাকে। সবাই কাঁঠাল-পাতা ভক্ত না, সবাই ঘাস খায় না।
একটা জিনিস খেয়াল করার মতো, যারাই কিনা জাহাঙ্গীরনগরের বিরুদ্ধে বিষেদাগার করছেন, র‍্যাগিং এর নামে আজেবাজে গল্প ছড়াচ্ছেন, তারা কেউই এ ভার্সিটির স্টুডেন্ট না। হয় বেড়াতে আসছিলেন, নইলে তিনি ক্যাম্পাসে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে চান্স না পাওয়া পাবলিক। অন্য ভার্সিটিগুলোর তুলনায় আমাদের ক্যাম্পাসের মেয়েরা অনেক বেশি স্বাধীন, মুক্ত। তাদের বিচরণও তাই অনেক বেশী, ক্যাম্পাসের সর্বত্রই। নারী পুরুষের বৈষম্যও খুব একটা প্রকট না এখানে, আর তাই রাত দশটা এগারোটা পর্যন্তও দেখা যায় ছেলে মেয়েদের বাইরে আড্ডা দিতে। এদের মাঝে কিছু কাপল আছে, থাকবেই, কিন্তু বেশিরভাগই আড্ডাবাজ বন্ধুবান্ধব। বাইরে থেকে ঘুরতে আসা কূপমণ্ডূকদের অনভ্যস্ত চোখে এই জিনিষটাই লাগে বেশী, তারাই বাইরে গিয়ে নানারকম গালগল্প ছড়ায় ক্যাম্পাস নিয়ে। এই গল্পগুলো বিবর্তিত হতে হতে এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে বাইরের অনেক মানুষের ধারনা এই ক্যাম্পাসের ছেলেমেয়েরা বোধহয় গাছতলাতেই রাত কাটায়!!! আর যেসব হতভাগারা পরীক্ষা দিয়েও ভার্সিটিতে ভর্তি হবার সুযোগটা পায়নি, তারা তাদের মনের অবদমিত ক্ষোভ মেটায় ভার্সিটির বদনাম করে, ক্যাম্পাসে র‍্যাগ হয়, র‍্যাগের নামে যৌন নিপীড়ন হয় ক্যাম্পাসে দৈত্য আছে, ডাইনী বুড়ী আছে ব্লা ব্লা ব্লা টাইপ রূপকথা। আমি বলবো না ক্যাম্পাসে র‍্যাগিং হয় না বা ছিল না। কিছু সাইকো সব যুগে, সবখানেই থাকে। তাদের কারনেই ক্যাম্পাসে প্রশাসনের এত কড়াকড়ি, কিছুদূর পর পর র‍্যাগিং বিরোধী পোস্টার। বিগত বছরগুলোতে কিছু ছাত্রকে বহিষ্কারের ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু তাই বলে র‍্যাগিং এর নামে যেসব রগরগে জ্বালাময়ী বর্ণনা দিচ্ছেন একেকজন সেগুলো পুরোপুরি মিথ্যাচার এবং গাঁজাখুরি গল্প মাত্র। যৌন-বিকৃত মানসিকতার ব্যক্তি হলেই কেবল মানুষ এ ধরনের গল্প বানাতে পারে। জাহাঙ্গীরনগর থেকে পাশ করা কাউকেই আজ পর্যন্ত ক্যাম্পাস নিয়ে এ ধরনের কোন নিন্দা করতে শুনলাম না। কেন? তবে কি ধরে নেব যে গত ৪১ বছরে এই ক্যাম্পাসে কোন মুক্তমনা লোক পয়দা হয়নি, যিনি কিনা নিজের ভার্সিটির বিভিন্ন অনাচার, বিশেষ করে র‍্যাগিং এর মতো তথাকথিত অনাচারের বিরুদ্ধে দু’কলম লেখার মতো সৎ সাহস রাখেন? সব সুশীলরাই কি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে পয়দা হয়? নাহ, তা হয় না। বরং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে বের হওয়া লোকজনই এসব ব্যাপারে এগিয়ে, অনলাইনেই বলুন আর বাস্তবে বলুন। এসব ঘটনা যদি সত্যিই ঘটে থাকত তবে তাদের লেখনীর মাধ্যমে মানুষজন এতদিনে জানত সেগুলো। বাইরের মানুষের থেকে শোনা কথায় বিশ্বাস করা লাগতো না, সাংবাদিকের রেফারেন্সও দরকার হত না।
কিছু কিছু মানুষের কর্মকাণ্ড দেখলে শত দুঃখের মাঝেও হাসি পায়! বিভিন্ন পাবলিক ভার্সিটির অনেক সুশীলের পোস্ট-কমেন্ট চোখে পড়েছে ফেসবুকে। জাহাঙ্গীরনগরকে গালাগাল দিতে দিতে যাদের মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে। যখন তীরটা তাদের দিকেও কিঞ্চিত আসে তখনই তারা আবার জোর গলায় দাবি জানান, আমাদের ক্যাম্পাস পাক-পবিত্র, কাবা শরীফের মতো, এখানে কিছুই হয় না!!! ঢাবির এক সুশীল, যিনি কিনা আবার ফেসবুক স্টার, তার স্ট্যাটাস দেখলাম, তিনি দাবি তুলেছেন, র‍্যাগিং এর নামে সকল প্রকার যৌন নিপীড়ন বন্ধ হক। আহা মধু মধু! এরই সাথে তিনি তিনটা ভার্সিটির নাম উল্লেখ করে উদার আহ্বান জানিয়েছেন, এই তিন ভার্সিটিতে পড়ুয়া কেউ থেকে থাকলে তার সাথে মুক্ত আলোচনায় যোগ দিতে! ভালো কথা, কমেন্টাইতে গিয়ে দেখলাম তার স্ট্যাটাসে কমেন্ট ব্লক করা!!! মুক্ত আলোচনার এই নমুনা? মাইরালা আমারে মাইরালা! অন্য ভার্সিটির কথা জানিনা, কিন্তু ঢাবি, বুয়েট, শাহজালালের কিছু সুশীলের কমেন্ট চোখে পড়েছে আমার, যাদের সবার বক্তব্য প্রায় এরকমই। ভাই, থামেন। আমাদেরও প্রচুর বন্ধু-বান্ধব আছে এসব জায়গায়, নানা প্রয়োজনে এসব ক্যাম্পাসে গিয়ে থাকতেও হয়েছে এসব ক্যাম্পাসে। তাই সবারই হাড়ির খবর মোটামুটি আসে আমাদের কাছে। কিন্তু তাই বলে আমরা যেখানে সেখানে আরেকটা পাবলিক ভার্সিটির মান-সম্মান নিয়ে টানা-হেঁচড়া করতে ইচ্ছুক না। একটা ইউনিভার্সিটি নিয়ে মন্তব্য করার আগে সেটা নিয়া যাচাই বাছাই করা উচিত। গুটি কয়েক অপরাধীর দোষ পুরো ভার্সিটির হাজার হাজার শিক্ষার্থীর উপর চাপিয়ে দেয়াটা কোনরকম মুক্তমনের পরিচায়ক না।
যাইহোক, বহুত হইসে আজাইরা প্যাঁচাল। তবে এই প্রোপাগান্ডার একটা পজিটিভ সাইড, গত তিন দিনে বহুত মানুষ চিনছি। বহুত সুশীলের ঘোমটা খুইলা গেছে চোখের সামনে। আবার বন্ধুর পথের সহযাত্রীও পেয়েছি অনেক। ধন্যবাদ ব্লগার শারমিন রেজোয়ানা আপুকে, তার ব্যস্ততার মাঝেও সময় করে আসল সত্যটা খুঁজে বের করার প্রয়াসের জন্য। অনুজ-প্রতিম ছোটভাই-বোন, যারা কিনা এইসব মিথ্যাচারের প্রতিবাদে ছিল অগ্রণী, তাদের অনেক ভালোবাসা। ফেসবুক কমিউনিটির ব্লগারদের একটা বড় অংশকেও ধন্যবাদ দিতে চাই, মাহবুব গংদের এই মিথ্যাচারের পেছনে জামাত-শিবিরের ষড়যন্ত্রের স্বরূপ উন্মোচনের জন্যে। আর নাম না জানা অনেকের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা, যারা পাশে ছিলেন, আশা করছি ভবিষ্যতেও পাশেই পাবো আপনাদের।
এবং সবশেষে, সব ভার্সিটিতেই র‍্যাগিং হয়, যৌন নিপীড়নও চলে, অপরাধ হয়। কিন্তু এ ধরনের স্পর্শকাতর অন্যায়গুলোর প্রতিবাদ হয় শুধুমাত্র জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। কোন প্রকার অন্যায় অনাচার আমরা মুখ বুজে সহ্য করি না, সে শিক্ষা আমাদেরকে দেয়া হয় না এখানে। আমাদের ভার্সিটি আমাদের প্রতিবাদের মঞ্চ, প্রতিবাদ আমাদের ঐতিহ্য। এ ঐতিহ্য বজায় থাকুক ক্যাম্পাসে, যুগ যুগ ধরে। আর কূপমণ্ডূক এবং ছাগুসমাজ, যারা জাহাঙ্গীরনগরের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে এনি হাউ, তাদের উদ্দেশ্যে একটা কথাই বলার আছে, গো হোম, ইউ আর ড্রাঙ্ক! জাহাঙ্গীরনগর তোমাদের জন্য না...

৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×