আমি ধর্ম পালন করবো নাকি সংস্কৃতি, এক উদ্ভট বিতর্কের জন্ম দিয়েছে আজকের পহেলা বৈশাখ। বছরের শুরুই হচ্ছে বিতর্ক দিয়ে !!! আমি যে বাঙালী এটা কি মুছে ফেলতে পারবো নাকি আমি যে মুসলমান এটা বাদ দেয়া সম্ভব ?? এই দুটিই আমাদের অস্তিত্ব, অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। বাঙালী মুসলমানরা কি এতদিন সংস্কৃতি পালন করেনি... একজন বিচার বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল এই পার্থক্য অন্তত নির্ণয় করতে পারা উচিৎ।
আমার ধর্ম আমাকে আমার সংস্কৃতি পালনে বাধা দেয়না। ইসলাম আমাকে শিরক করতে কড়াভাবে মানা করেছে। সহজভাবে বললে এমন কিছু করা যাবে না যেটাতে আল্লাহ -এর সাথে কোন কিছুর ন্যূনতম শরিক হবার সুযোগ থাকে। যদি এমন কিছু করেন তাহলে আপনাকে নিজেকে মুসলিম না ভাবাটাই উচিৎ হবে। আপনার সৃষ্টিকর্তা আপনাকে যেটা করতে মানা করেছে সেটা কেন আপনাকে করতে হবে, তাহলে কিসের বিশ্বাস আপনার তার প্রতি। ব্রাজিলের সংস্কৃতি যদি হয় সাম্বা নাচ, লাস ভেগাসের জুয়ার আসর কিংবা আরবদের বেলি-ডান্স, ঘোড়-দৌড়ের প্রতিযোগিতা.... এখন সংস্কৃতির অংশ বলে তো এগুলো জায়েজ হয়ে যাবে না। ইসলামে এগুলো নিষিদ্ধই। মনে রাখবেন, আমাদের সংস্কৃতি পহেলা বৈশাখ শুধু রমনা বটমূল বা শহর কেন্দ্রিক কোন উৎসব না; এখনো গ্রাম গ্রাম-গঞ্জে পহেলা বৈশাখ ভালো মতই পালন করা হয়। বৈশাখী মেলা বসে, হাট গুলোতে এখনো হালখাতা করা হয়, বাড়ীতে নতুন চালের পায়েশ রান্না করে মা-বোনরা। এই দেশের অধিকাংশ মানুষ না জানে ভুভুজেলা কি জিনিস, পহেলা বৈশাখের সাথে ইলিশের কি সম্পর্ক। সমস্যা তৈরি করেছি আমরা ক'জন শহুরে, ফেসবুক দাপুটে বাঙালী নিজেদের সংস্কৃতিমনা আসল বাঙালী মনে করি তারা।
তবে ধর্মের বিষয়টা যখন বললামই একটা কথা না বললেই নয়... মাজারের নামে স্থাপনা গড়ে যে শিরক হচ্ছে বছরের ৩৬৫ দিনই, লাখ লাখ মানুষ প্রতারিত হচ্ছে; এর বিরুদ্ধে কেন আন্দলন হয় না, কোন প্রতিবাদও নেই। খোদ ঢাকা শহরেই কিন্তু এইরকম মাজার কেন্দ্রিক ব্যবসা বেশ রমরমাই বলতে হবে। আশা করি মুমিন বাঙালী এবার এই দিকেও নজর দিবে।