somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুকের ভেতর মৃত নদী (পর্ব তিন)

০৯ ই মে, ২০২০ রাত ১০:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আগের পর্ব এখানে

তিন
চাইলেই যে সবকিছু করা যায়না সেটা শ্রাবণীর জীবনে প্রমানিত হলো।প্রতিদিন সে ভাবে তুষারকে না করে দেবে কিন্ত তা আর করা হয় না।তুষারের সাথে ঘুরে বেড়াতে তার ভালও লাগে আবার ভবিষ্যৎ ভেবে শংকা হয়।কোনো কোনোদিন গভীর রাতে ঘুম ভেঙে যায়।মনে হয় এ সে কি করছে?তুষারের সাথে তার কল্পনার স্বপ্নের পুরুষের কোনো মিল নেই। আবার তার বাড়িতে কি এমন কাওকে মেনে নেবে যার সাথে ওকে মানাবে না! এইসব ভেবে ভেবে সে অনেক রাতের ঘুম নষ্ট করতে থাকে।


তার খুব কাছের বন্ধু রত্না।সেই মেয়ে আবার তুষারের ক্লাসমেট।সেইদিক থেকে সে দুজনেরই বন্ধু।রত্না একদিন ক্লাসের পর দুজনকে ঘুরে বেড়াতে দেখে পাকড়াও করল।তিনজনে গল্প করে বেশ সময় কাটলো এরপর হলে ফিরে সে শ্রাবণীকে বলল-ও একটা পাগল,তুই আরেকটা। কিভাবে কিভাবে মিলে গেছে তবে তুষার কিন্ত ছেলে খারাপ না।

শ্রাবণীর হলে তুষারের অন্য যে বান্ধবীরা ছিল তারাও মাঝে মাঝে তুষারের প্রশংসা করে তার কাছে।একজন একদিন এক টেবিলে বসে খেতে খেতে বলল তুষার কিন্ত আমাদের ক্লাসে অন্য ছেলেদের মত না।সে অনেক কিছু বোঝে।

এইসব কথা শুনে তার মনে একটু একটু সাহস আসে।তার দ্বিধা যদিও পুরোপুরি কাটে না।কারন শ্রাবণীর ক্ষেত্রে এটা মোটেও লাভ এট ফার্স্ট সাইট নয়।তার দেখা এবং বোঝার অনেক কিছু বাকি আছে।কাওকে ভালবাসা তো এত সহজ নয়।তবে পরের কয়েকটি দিনে কিছু ঘটনার কারনে তার মনে একটু একটু করে ভালবাসা জমতে শুরু করল।

একদিন কিছু জিনিস কেনার জন্য শ্রাবণী বাজারে যাবে।কয়েকটি কাজ নিয়ে তুষার আর তুষারের বন্ধু কায়েসও তার সাথে গেল।কায়েস তুষারের ক্লাসমেট এবং হলমেট।প্রথম থেকেই তুষার এবং কায়েসকে একসাথে দেখে আসছে সে। শ্রাবণীর একটা বড় সমস্যা হচ্ছে সে রাস্তা পার হতে বেশ আনাড়ি। বিশেষ করে বড় বড় রাস্তা পার হতে সে খুবই ভয় পায়।এমনি একটা রাস্তা ওপারে যাওয়ার জন্য সবাই দাঁড়িয়ে আছে,তখন শ্রাবণীর দ্বিধা দেখে তুষার তার হাতটা শক্ত করে ধরে নিয়ে রাস্তা পাড় করে দিল।কায়েস বেশ অবাক চোখে তাকিয়ে তা দেখল কিন্ত তুষার নির্বিকার। যেন এটা তার জন্মগত অধিকার।শ্রাবণীর মনে সেইদিন বেশ লজ্জামিশ্রিত একটু ভাললাগা তৈরি হলো।

এরপরে একদিন সন্ধ্যায় তারা দুজনে রিকশা নিয়ে কোথায় যেন যাচ্ছে।রিকশাওয়ালা মামা তুষারের পূর্বপরিচিত। পুরোটা পথ সেই রিকশাওয়ালা এই কথা সেই কথা বলতে বলতে একসময় বলল-'মামা মায়া লাগাইছেন দেইখা ভালাই লাগতাছে।' কথাটা শ্রাবণীর খুব মনে ধরল।কি সুন্দর কথা 'মায়া লাগানো '!আসলেই তো,সব তো মায়ারই বন্ধন।আচ্ছা লোকটা তাদের ব্যাপার বুঝলো কিভাবে?সে লক্ষ্য করেছে তাদের ব্যাপারটা সবাই কিভাবে যেন বুঝে যায়।তাদের দেখে তো সুইট কাপল বলে মনে হওয়ার কথা না তবুও!

আরেকদিন কি একটা প্রসঙ্গে তুষার শ্রাবণীকে 'আমার সন্তানের মা' বলে ডেকে বসল।সেই শুরু তারপর থেকে তুষার তাকে এইভাবেই ডাকতে লাগল।এই ডাকের কারনেই তার মন বেশ দূর্বল হয়ে গেল।অনেক বার শ্রাবণী নানা কারনে সম্পর্ক ভেঙে দিতে চেয়েছে কিন্ত এই ডাকের কারনেই সে শেষ পর্যন্ত যেতে পারেনি।

তুষারের ব্যাপারটা সে জানেনা(ছেলে মানুষের মনে কি আছে তা বোঝা খুব মুশকিল) তবে এভাবেই শ্রাবণী ধীরে ধীরে সম্পর্কটায় সত্যিকার অর্থে জড়িয়ে পড়তে লাগল।

(চলবে-)
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০২০ রাত ১০:০৭
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×