somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনুভব (ছোটগল্প)

০৮ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বসুন্ধরার সামনেটায় সবসময় বাতাস পাওয়া যায় ।যান্ত্রিকতার চাপে পিষ্ট লোকজন একমুঠো হাওয়ার সন্ধানে রোদ কমতেই চলে আসে এখানে ।আমিও আজ তাদের দলে ।আশেপাশে প্রায় শ'দেড়েক ভাদাইম্যার মত হন্ঠনরত আকর্ষনীয়া বিপরীত লিঙ্গদের গলার নিচের আর হাটুঁর ওপরের মাংসের সৌন্দর্য্য দেখছিলাম ।টাইট লেগিংস কি নিদারুন ভাবেই না ফুটিয়ে তুলেছে শিল্প!সালভাদর দালি ফেইল ।

দেখতে দেখতে তেজপাতা টানছি ।দোকানে গিয়ে দেশি ব্ল্যাক বললেই দেয় ।পাচঁটাকা দাম ।বেনসন আর সহ্য হয়না বুড়ো ফুসফুসে ।ভাদাইম্যাগিরি করছি বলে ভাববেন না আমি বাস্তবিক ভাদাইম্যা ।একটা আইটি ফার্মে কনসালটেন্ট হিসেবে আছি ।বয়স ছেচল্লিশ ।সার্টিফিকেটে চুয়াল্লিশ । বউ আমার গত হয়েছে লিভার সিরোসিসে বছর তিনেক আগে।ভাদাইম্যাগিরির শুরু এখানেই ।

বারে গিয়ে স্ট্রিপ দেখা,নোংরা পাড়ায় ঢুঁ মারা,পিসিতে কালেকশান করা শুরু করলাম তারপর থেকে ।বয়স হলে নাকি ধর্মকর্মের দিকে মন যায় ।ধুর বাল!ঝুলে যাওয়া চামড়ার নিচে যেন আটকে পড়েছে টগবগে তরুনের মন ।আসলে সে বয়সে যা করার স্বপ্ন দেখতাম সাধ্যের অভাবে করতে পারিনি ।সেই অপ্রাপ্তিগুলোই এখন বিধেঁ ।জ্বলন্ত তেজপাতার ছ্যাকাঁ আঙ্গুলে লাগতেই হুশ ফিরে পেলাম যেন ।

পার্কিং লটে একটা প্রিমিও গাড়ি এসে থামল ।এক বেগুনরঙা শাড়ি পরিহিতা এক কোকের বোতল ফিগারের রমনীকে প্রসব করলো গাড়ির দরজা ।
একি!নীহারিকা! গাড়িওয়ালা স্বামী পেয়েছিলো জানতাম নাতো ।চামড়ায় সেই আগের কমনীয় টান ধরে রেখেছে দেখলাম ।চুলগুলো কি আরো শাইনী লাগছে?এত শুকালো কিভাবে ও!এই লোকারন্যেই জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে ইচ্ছে করছে ঐ গোলাপরাঙা ঠোটেঁ ।পিষে যদি স্যান্ডউইচ বানিয়ে ফেলতে পারতাম ঐ ফোলা ফোলা... উফফ!কামের তীব্র আবেগে আমি সচকিত হলাম ।

মাইক্রো ন্যানো সেকেন্ডের দ্রুততম ক্যালকুলেশন কিংবা আইনস্টাইনের কাল দীর্ঘায়ন সূত্রের বাস্তবতায় আমি পৌছেঁ গেলাম প্রায় বিশ বছর পেছনে ।ভার্সিটির ফোর্থ ইয়ারে পড়া ক্যাম্পাসকাপাঁনো পলিটিকাল দাদা আমি তখন ।জুনিয়রদের র্যাগ দিতে গিয়ে নীহারিকার উপর ক্রাশ খাওয়া ।অতঃপর হাতে হাত রেখে উত্তম সুচিত্রার মত এই পথ যদি শেষ না হয় গাওয়া ।যোগ্যতা অর্জন করলাম ।অভিভাবকদের সহ প্রস্তাব নিয়ে গেলাম তাদের বাড়ি ।কথা বলার পুরোটা সময় চ্যাগালাম সোফায় বসে বসে ।আর প্রায় পুরোটা সময় বাঁ হাতের আঙ্গুলের সাহায্যে ডেনিম প্যান্টের উপর দিয়ে গুহ্যদ্ধার চুলকানোর ব্যর্থ চেস্টা করলাম ।কথাবার্তা পাকা হবার চারদিন পর ফোনে তারা বললো পাইলসওয়ালা ছেলের কাছে নাকি মেয়ে দেবেনা ।আজব!পাইলস কি আজীবন থাকে নাকি?শালার পাইলস হবার আর সময় পেলনা ।নাকের জলে আর চোখের জলে ধানমন্ডি লেক বানিয়ে নীহারিকা ফোনে "তুমায় ছাড়া বাচঁবো না" বলতে বলতে ঝুলে পড়লো এক ডাক্তারের গলায় । হাসলাম আমি ।নিজের অদৃস্টের ওপর ।বিধাতার রোগ মন্ত্রনালয়ের কর্তার ওপর ।তারপর "ke ace gebone?" বলে জড়িপরীটাইপ একটাকে বেধেঁ নিলাম সাতপাঁকে ।

খুশিই হয়েছিলাম পরে। নীহারিকার চেয়ে কম রুপবতী ছিলনা আমার বউ ।প্রেমিকার কাছ থেকে অনেক কিছুই আদায় করে নেয়ার থাকে প্রেমিকের ।হা হা....আমি সফল ।উপরি পাওনা হিসেবেই নিয়েছিলাম নীহারিকার ভালবাসা বা অন্য কিছু ।
ভিড়ের ধাক্কায় আবার বাস্তবে ফিরে এলাম আমি ।মনের অজান্তেই আমি ওকে ফলো করে মলের ভেতর চলে এসেছি ।স্টার সিনেপ্লেক্সের কাউন্টারের সামনে দাড়িয়ে ব্যস্ত ভঙ্গিতে কাকে যেন ফোন দিচ্ছে নীহারিকা ।আহা!আমি যদি তার হাতের গ্যালাক্সি এস ফাইভ হতে পারতাম! সুন্দর আঙ্গুলের ছোয়াঁয় ধন্য হয়ে যাচ্ছে ফোনের ডিসপ্লে ।দেয়ালে হেলান দিয়ে দাড়িঁয়ে দেখছি আমি ।কিয়ত্‍ক্ষন পর এক মোটা মহিলা এসে আড়াল করল নীহারিকাকে আমার দৃষ্টিপথে ।ব্রাজিল আর্জেন্টিনার ম্যাচের চেয়ে শ্বাসরুদ্ধকর এই চোখ দিয়ে দেহ গেলার খেলায় বাধাঁ আমার অসহ্য লাগল ।পাশ ফিরে চলে গেলাম আরেক পাশে ।মহিলা তার হাতের ম্যাংগো জুসের বোতলটা নীহারিকার হাতে ধরিয়ে দিয়ে হ্যান্ডব্যাগ থেকে টিকেট বের করছে ।তিনি সোজা হয়ে দাড়াঁতেই ...কি বলব! সাকা চৌধুরীর ভাষায় আক্ষরিক অর্থেই চোদনা হয়ে গেলাম ।দুজনের চেহারায় কি অপূর্ব মিল!নাক, চোখ ,মুখ ,সিথিঁ যেন ছাপ দিয়ে বসিয়ে দেয়া হয়েছে আরেকজনের খোমায় । একজনের চামড়া টানটান ।আরেকজন চামড়ায় বুলডগের মত ভাজঁ ।একজনের উজ্জল কালো চুলে নাক ডুবিয়ে হিপনোটাইজড হতে ইচ্ছে করে ।আরেকজনের বয়স ঢাকার জন্য উত্‍কট খয়েরী চুল দেখে গা গোলায় ।ফিগারের কথা বলতে গেলে আধা লিটার কোকের বোতলের পাশে দু লিটার কোকের বোতল রাখলে যেমনটা হয় তেমন ।

হাসি পেল আমার ।নিজের সৌভাগ্যের ওপর হাসলাম আমি ।হাসলাম বিধাতার রসবোধের ওপর ।আমার বউ অল্প বয়সে মারা গিয়েই আমার স্মৃতিতে চিরযৌবনা হয়ে বেচেঁ থাকবে মেরিলিন মনরোর অনন্তযৌবনা তত্ত্বের মত ।ভাগ্যিস!নীহারিকাকে বিয়ে করতে পারিনি ।সৌন্দর্য্যের এই উত্‍কাট্য অসহ্য ঠেকত নিঃসন্দেহে আমার ।তবুও নীহারিকার মেয়ের মত একটা বারবি ডল থাকতো আমার ।যাকে এতক্ষন কল্পনায় শুধু বিছানাতেই কামনা করছিলাম !
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×