কবে যে প্রথম স্কুল থেকে পলায়ন করি তা আজ সঠিক মনে নেই। তবে ক্লাস টুতে স্কুল থেকে পালানোর ঘটনা আজও ভুলতে পারি নি। ঐদিন ছিল স্কুলে গনিত পরীক্ষা। পরীক্ষা দেওয়ার জন্য স্কু্লে যাই। আমার সাথে পড়ত আমার এক কাজিন। আমার ঐ কাজিন এর আব্বা আম্মা সহ সবাই যাবে তাদের খালার বাড়িতে বেড়াতে। আমার ঐ কাজিনও যাবে তার খালার বাড়িতে। আমাকে বলল তার সাথে যাবে কিনা? আমি এক বাক্যে রাজি হয়ে গেলাম। তখন শুধু এত টুকু বুঝতাম বেড়াতে যাওয়া মানে ভালো খাওয়া দাওয়া মানে পো্লাও মুরগির রোস্ট তাই লো্ভ টা সামলাতে পারলাম না। পরীক্ষা না দিয়ে চলে গেলাম কাজিন এর সাথে তার খালার বাড়িতে। দুপুরে ভালই খাওয়া দাওয়া হল। খেয়ে বিকাল বেলা বাড়িতে চলে আসলাম। বাড়ির কেউ জানতেও পারনি যে আমি পরীক্ষা দিই নাই । আমিও বেমালুম ভুলে গেলাম পরীক্ষা না দেওয়ার বিষয়টি। প্রায় দুই মাস পরে যখন পরিক্ষার খাতা দিচ্ছিল তখন আমি অধির আগ্রহে বসে আছি কখন আমার খাতা দিবে। অপেক্ষা পালার শেষ হয়ে গেল কিন্তু আমার খাতা পেলাম না। পরে স্যারের কাছে গেলাম আমার খাতার জন্য। স্যারও আমার খাতা খুজতে লাগলেন কোথাও হারিয়ে ফেললেন কিনা। আমিও নাছোড়বান্দা আমার খাতার জন্য। স্যারও পড়লেন বিপদে আমার খাতার না দিতে পেরে। গ্রামের স্কুলে অধিকাংশ শিক্ষকই নিজেরা খাতা কাটেন না। স্যার নিজেও খাতা কাটতেন না, স্যারের বড় ছেলে খাতা কেটে দিত। খাতা না পেয়ে আমি তখন আফসুস করতেছি। আফসুস করার কারন আমি গনিতে বরাবরই ভালো ছিলাম এবং প্রায় সবসময় সর্বোচ্চ নম্বর পেতাম। হঠাৎ আমার মনে পড়ল যে আমি পরীক্ষা না দিয়ে বেড়াতে গিয়ে ছিলাম তখ্ন একদম চুপ হয়ে গেলাম এই নিয়ে আর উচ্চ বাচ্য করিনি। সে দিন যদি স্যার যদি জানতে পারত আমি পরীক্ষা দেই নাই তাহলে পিঠের ছাল আস্ত থাকত না।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৭