somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগে প্রথম পোস্ট এবং বিলেত ফেরত বন্ধুর সাথে নিঝুম দ্বীপ ভ্রমন

২৪ শে মে, ২০১২ রাত ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি অনেক আগে থেকেই ব্লগ পড়তাম,কিন্তু কখনও লিখার ইচ্ছে জাগে নাই । নিজেকে যতটুকু চিনি তাতে মনে হয় আমার মধ্যে সৃজনশীলতার অভাব নতুবা আলসেমি। আজকে হুট করে ভাবলাম কিছু একটা লিখি । অমনি মাথায় চলে আসলো শেষ ট্যুর এর কথা ।সুতরাং নিঝুম দ্বীপ দিয়েই শুরু করছি আমার যাত্রা ।

আমি ছোট বেলা থেকেই ভ্রমন প্রিয়,যদিও ইন্টারমিডিয়েটের আগে কোথাও যাওয়ার সুযোগ হয়ে উঠে নাই । যাই হোক, আমার বিলেত প্রবাসী বন্ধু অজয় এই জানুয়ারী মাসে দেশে বেড়াতে আসে এবং ও সেখান থেকে আসার আগেই বলে দেয় যে এবার একসাথে ট্যুর দিতে হবে। আমিও আমার মৌন সম্মতি দেই, কিন্তু মনে মনে যাওয়ার যায়গা খুজতেছিলাম।এরই মধ্যে অজয় হঠাৎ করে বলল যে চল,হাতিয়া থেকে ঘুরে আসি,ওখানে দিদিদের বাড়ী আছে । বলা বাহুল্য যে,দিদি হচ্ছেন অজয়ের বড় বোন এবং উনারা হাতিয়াতে থাকেন । আমি শর্ত দিলাম যে,যদি হাতিয়া যাই তাহলে নিঝুম দ্বীপ ঘুরতে হবে,বন্ধু মহাশয় প্রস্তাবটিকে সানন্দে গ্রহন করে।

আমার কাছে ভ্রমণ হচ্ছে আনন্দ তথা উপলব্ধি।এই উপলব্ধি লুকিয়ে থাকে স্রষ্টার সুনিপুণ হাতে গড়া প্রতিটি সৃষ্টিকে নিজ চোখে দেখার মধ্যে।নিঝুম দ্বীপের হরিণের পাল,উড়ে বেড়ানো পাখিদের দল আমাকে বাধ্য করেছিল নিজের মধ্যে ডুব দিতে,আমার বিষণ্ণতা তথা হতাশাগুলু সেই উড়ে বেড়ানো পাখিদের মতই হারিয়ে গিয়েছিল অজানায়।নিঝুম দ্বীপের জেলেদের মাছ ধরা দেখে শিখেছি,জীবন সংগ্রামের কোন অন্ত নেই,মানুষের হারানোর কিছু নেই,প্রতি মুহূর্তে বুক ভরে শ্বাস নেয়াটাই এক অপার বিস্ময়।নিঝুম দ্বীপের মৌমাছিগুলো আমার কানে কানে বলে গিয়েছিল ''বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর,সবার আমি ছাত্র।''


প্রথমেই বলে রাখি নিঝুম দ্বীপ হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত একটি প্রতন্ত দ্বীপ যেখানের অধিবাসীরা প্রতিনিয়ত দারিদ্রের সাথে বসবাস করে এবং তাদের প্রধান পেশা হচ্ছে মাছ ধরা।নিঝুম দ্বীপে গিয়ে একটি জিনিস খুব সহজেই আঁচ করা যায় ,সেটা হল দুর্বল অবকাঠামো।যারা নিঝুম দ্বীপে গিয়েছেন তারা নিশ্চয়ই আমার সাথে একমত হবেন যে, সরকার একটু আন্তরিক হয়ে নিঝুম দ্বিপের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করলে এটি সহজেই ভ্রমন পিপাসুদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু থাকতো।
বনের ভেতরে।

যাই হোক,মুল কথায় আসি,আমরা নিঝুম দ্বীপে গিয়েছিলাম চাঁদপুর থেকে,আমাদের প্রথম গন্তব্য ছিল চেয়ারম্যান ঘাট যেখান থেকে নিঝুম দ্বীপের লঞ্চ ছাড়ে,আমরা সেখানে গিয়ে পৌঁছাই বেলা বারোটার দিকে,রোদে প্রান যায় যায় অবস্থা।লঞ্চ আসতে তখনো প্রায় এক ঘণ্টা দেরি কারণ লঞ্চ জোয়ার ভাটা হিসেব করে ঘাটে আসে।আমাদের জন্য দিদিরা আগে থেকেই ঘাটে অপেক্ষা করছিলেন,আমরা গিয়ে চায়ের দোকানে বসলাম এবং চা খেতে খেতে লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম । কিছুক্ষণ পর লঞ্চ আসলো এবং আমরা তাতে ছড়ে বসলাম। লঞ্চের প্রসঙ্গে একটি কথা বলে রাখি,যারা ঢাকা থেকে নোয়াখালী হয়ে নিঝুম দ্বীপ যেতে চান তারা দয়া করে লঞ্চে আরাম আয়েশ করে বসার কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিবেন কারন এই রুটে মাত্র দুটি লঞ্চ(তন্মদ্ধে একটি সী ট্রাক)।নোয়াখালী থেকে হাতিয়াতে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ যাওয়া আসা করায় লঞ্ছগুলু কানায় কানায় পূর্ণ থাকে,আক্ষরিক অর্থে বলতে গেলে মানুষ প্রানের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে।সুতরাং,আপনার ট্যুর প্ল্যানে এটা অবশ্যই মাথায় রাখবেন ।
এটি সুবর্ণচর এলাকার একটি ব্রিজ থেকে তোলা,সূর্য মামা তখন স্বরুপে আবির্ভূত হয়েছিল।

এই ছবিটি চেয়ারম্যান ঘাট থেকে তোলা ।

আমরা প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে হাতিয়া গিয়ে পৌছাই,সাধারণত নাকি দুই ঘণ্টা লাগে কিন্তু স্রোতের প্রতিকূলে যাওয়াতে আমাদের একটু সময় বেশি লেগেছিল।

এটি হচ্ছে হাতিয়া ঘাট,নদী ভাঙ্গনে জর্জরিত এই জনপদ দেখলেই বোঝা যায়, মেঘনার উম্মাত্ততা এদের নিত্য দিনের সঙ্গী।উম্মাতাল মেঘনা কেবল এই জনপদটিকে মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা করেই ক্ষান্ত হয় নি,সাথে সাথে কেঁড়ে নিয়েছে মাথা গুজার শেষ ঠাইটুকুও ।স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে শুনেছি,এই ঘাট নাকি আরও দুই কি.মি. সামনে ছিল যেটা কিনা এখন নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে।

আজ আসি,হাত ব্যথা করছে কিন্তু খুব দ্রুতই ফিরে আসবো। (চলবে)
৯টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×