somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লন্ডনের একটি পথোৎসব [একটি ছবিব্লগ ]

০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দীর্ঘ বিরতি শেষে আবার লিখতে বসলাম।অনেক দিন পর ব্লগে আসতে পেরে ভালই লাগছে।
পথোৎসব,শব্দটিই যেন কেমন,শব্দটি শুনলে অনেক দিন আগের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে যায়।আমি যেই ছোট মফস্বল শহরে বেড়ে উঠেছিলাম সেখানে প্রতি বৈশাখ মাসে ৩ দিন ব্যাপী মেলা বসতো,রাস্তার উপরে বসা সেই মেলা দেখতে দূর দুরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসতো,ছোট ছোট বাচ্চাদের পদভারে মুখরিত থাকতো মেলা প্রাঙ্গন।সেই ছোট ছোট চোখে ছিল অনেক আবদার,কারো আবদার পূরণ হতো কারোটা হতো না।জিলাপি,মিস্টি তথা নানা রকম হাতে বানানো সন্দেশের গন্ধে মৌ মৌ করত বাতাস,ছিল ছোট খাট সার্কাস সহ নানা রকম মনোরঞ্জনের ব্যবস্থাও।পথোৎসবের সাথে এভাবেই আমার পরিচয়।

আমি লন্ডনে ক্যালেডোনিয়ান রোডে থাকি।প্রতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে এখানে পথোৎসব হয় যেখানে ক্যালেডোনিয়ান রোডের সকল বাসিন্দারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহন করেন।নানা রঙ্গে,নানা সাজে সেদিন ক্যালেডোনিয়ান রোডকে সাজানো হয়।হরেক রকম খাবারের ঘ্রাণ,মিষ্টি পানীয়,রকমারি ফলাদি বাদ ছিল না কিছুই,অনেকটা আমাদের বাংলাদেশের মেলার মতই,হয়তোবা উপস্থাপনের মধ্যে কিছুটা ভিন্নতা ছিল। আমার আজকের পোস্টে আমি এই ক্যালেডোনিয়ান রোড ফেস্টিভ্যাল এর কিছু ছবি তুলে ধরবো.........

ক্যালেডোনিয়ান রোড ফেস্টিভ্যাল এর অফিসিয়াল পোস্টার।

বাচ্চাদের মধ্যে কাগজ দিয়ে বানানো হস্তশিল্পের প্রতিযোগিতা চলছে।

কাঠের হাঁস।

মুখোশ ।

এটি একটি জ্যামাইকান রেস্টুর‍্যান্ট,নাচ গান করে এরা মেলায় আগত দর্শনার্থীদের ভালই মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল।


গান বাজনা ।

খাবারের দোকান।

দর্শনার্থীদের ভিড়,এরা প্রায় সবাই ক্যালেডোনিয়ান রোডের বাসিন্দা।

খুদে দোকানীরা।

ছবি,ছবিগুলো বাস্তবে আরও সুন্দর, এমন আরও অনেক ছবি ছিল কিন্তু হারিয়ে ফেলেছি :( :( :(

দেখেই বুঝতে পারছেন যে,স্প্রে করে এই ছবিটা বানানো হয়েছে।

শারীরিক কতসরত,অনেকটা আমার ছোটবেলায় দেখা মেলার মতই।

আরও একটা ছবি দিতে মন চাইলো,তাই দিলাম।

এটি ভায়োলিনের দোকান,এই মহিলা সবার সামনেই ভায়লিন বানিয়ে বিক্রি করছিলেন।

বাজনা বাদকের দল,চাইলে যে কেউ ওদের সাথে গিয়ে বাজাতে পারত।

রাস্তার মোড়ে মোড়ে এভাবেই বাদকের দল দাঁড়িয়ে বাজনা বাজাচ্ছিল।

মহিলা রেস্লার,ঘুসি খাইলে খবর আছে :P :P :P

আমার বন্ধু বক্সিং রিঙ্গের সামনে,বাচ্চদেরকে লাইভ বক্সিং শেখানো হচ্ছিলো।

পরিশেষে,নিজের একখান ছবি না দিলে কেমন কেমন জানি লাগে......... ;) ;) ;)

পরিশেষে কিছু কথা না বলে পারছি না।আমার ৭বছরের ঢাকার জীবনে ভাড়াটিয়া হবার সুবাদে আমি খিলগাঁও,রামপুরা,মোহাম্মাদপুরের ৫-৬ টি বাসায় ভাড়া থেকেছি।একই রোড,পাড়া কিংবা মহল্লার কাউকে চেনা তো দূরের কথা পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদেরকেও ঠিকমত চিনতাম না।আমি নিজে যে মানুষটা এরকম সেটা কিন্তু না,নিষ্ঠুর ঢাকা শহরের নিষ্ঠুর সম্পর্কগুলোই আমাকে এরকম করতে বাধ্য করেছিল।ইট-কাঠের শহরের সম্পর্কগুলো কেবল প্রয়োজন বুঝে আবর্তিত হত। আবেগ,ভালোবাসা,প্রতিবেশীর সাথে সু-সম্পর্ক এখানে মূল্যহীন।মানুষ মানুষের জন্য,জীবন জীবনের জন্য এই কথাগুলো এখানে কেবল বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ,বাস্তবে এর কোন অস্তিত্ব নেই।অথচ ভাবতে কষ্ট হয়,আমি ছোটবেলায় এমন পরিবেশে বড় হয়েছি যেখানে প্রতিবেশিদের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান হলে আনন্দে আমাদের ঘুম হারাম হয়ে যেত,আমাদের হিন্দু প্রতিবেশিদের পূজার প্রসাদ না খেলে মনে হত ভাত হজম হবে না।এখন প্রশ্ন হচ্ছে দোষটা কি ঢাকা শহরের নাকি শহরের মানুষের ?আমার মনে হয় দোষটা আমাদের,আমরা কি পারি না পরস্পরের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে,আমারা কি পারি না এমন একটি পথোৎসবে একই রোডের সব বাসিন্দারা মিলিত হতে ??? "আশে-পাশের মানুষের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করলে আনন্দ দ্বিগুণ হয় আর দুঃখ ভাগাভাগি করলে অর্ধেক হয়" আমরা কি পারি না এই মন্ত্রে দীক্ষিত হতে ????
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:২৪
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×