somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হুদাই মুসা ইব্রাহীমরে দুষ দেন ক্যা??

৩০ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৪:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুসা ইব্রাহীমের এভারেস্ট জয়ের পর থেকেই এ নিয়ে বিতর্কের শেষ নাই। কিছুদিন পর পর নতুন নতুন ছবি, ফটোশপ ছবি, ভিডিও, ফটোশপ ভিডিও দিয়ে ছয়লাভ হয়ে যায়। অনলাইন-অফলাইনের সেলিব্রেটি টাইপের মানুষেরা তর্ক করে করে হয়রান হয়। কখনো হিমু, তো কখনো ফিউসন ফাইভ। আর এ সবের সর্বশেষ সংযোজন হইল আমার ব্লগ, বোয়ান টাইপের প্রিন্ট মিডিয়া '৭১টিভি'র একটা রিপোর্ট। যদিও অনলাইনে লোকে অনেক আগেই দেখে ফেলছে জিনিসটা। মুসা'কে প্রতারক, জালিয়াতি, জাতীয় বেঈমান অনেক কিছুই বলা হইছে এবং হবে।

মুসা কি এভারেস্ট জয় করছে কি না এটা আজীবন একটা বিতর্কই মনে হয় থেকে যাবে। নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে আদৌ গিয়েছে কি না সেইটা নিয়েও কত লোকের সন্দেহ, আর এইটা তো বঙ্গভূমি'র মুসা।

আমাদের এই বঙ্গভূমি'র বুকে প্রতিটি আনাচে-কানাচে, অফিস-আদালতে, জনসভায়-রাজপথে, গ্রামে-শহরে, বেডরুমে-বাথরুমে কত কত প্রতারণা যে হয় তার কতটুকু নিয়ে আমরা সচেতনা দেখাই?

এই অতিসাম্প্রতিক কালে দেশের সোনার সন্তানরা ফেবু'র মাধ্যমে ফাস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিল। পরীক্ষার মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে প্রশ্ন ছাপিয়েও সোনার ছেলেদের দাবিয়ে রাখা যাচ্ছে না। ইন্‌সাল্লাহ্‌, ওরা আমাদের মুখ উজ্জ্বল করে এ-প্লাস নিয়েই আসবে। আবার এই ছাত্রদের যারা পড়াচ্ছেন, সেই শিক্ষকেরাও কম যান না। এই তো সেদিন দেখালাম এক শিক্ষকের পরিচিতি লেখা এস।এস।সি(ডাবল), এইচ।এস।সি(ডাবল)। আবার কেউ কেউ ছাত্রদের শর্ট সাজেশন দিয়ে পরীক্ষায় পাশ করিয়ে বাহবা পান। কেউ ছাত্রীদের সাথে পরিমলগিরি করেন।

আছে খুচরা ব্যবসা আর ধর্ম নিয়ে প্রতারণা। গুলিস্তান, ফার্মগেটের ফুটপাতে দশ টাকার জিনিস ধরিয়ে দিবে দু'শো টাকায়। আবার আখিরাতের লোভ দেখিয়ে আপনার কাছ থেকে মসজিদ নির্মাণের খরচ আদায় করবে। কেউ কেউ আবার মাজারে শিন্নি দিবে, পীর বাবা'র পায়ের কাছে পরে থাকবে, কিছু লোক বেহেস্তের লোভে "জিহাদে" ঝাঁপিয়ে পরবে। পত্রিকা, নিউজ চ্যানেলে চলবে প্রতারণা। নিজের মত করে একটা নিউজ করে সকলের বাহবা নিবে। আবার কারো সাথে বনিবনা না হলে তার নামে মনগড়া রিপোর্ট দিয়ে তাকে নিঃস্ব বানিয়ে ছেড়ে দিবে। আবার এক পত্রিকার সাথে আরেকটার বিরোধ হলে তো কথাই নেই। উনাদের কল্যাণে ডাক্তারের হাতে উঠে আসবে লাঠি। আবার সময়ে সেই ডাক্তার মানুষকে পথের ফকির বানিয়ে ছেড়ে দিবে, তবু রোগ ভালো হবে না।

একটা প্রতারণা তো আমরা প্রতি পাঁচ বছরে দেখি যেটা হল উন্নায়নের প্রতারণা। মানুষের ঘরে ঘরে পৌছে যাবে উন্নায়নের জোয়ারের আশ্বাস। কিন্তু একবার ভোটে জেতার পর আমরা পাব দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি, বিদ্যুত-বিভ্রাট, বিদ্যুত-তেল-গ্যাস-খনিজের দাম বৃদ্ধি, যানজট, যানজট কমাতে ফ্লাইওভারের জন্য আরো যানজট, ডিজিটাল দেশের ডিজিটাল ব্যান্ডউইথ ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভারতে রপ্তানী,--- এত সব কিছুর পর যখন পদ্মাসেতু নিয়ে চিল্লাচিল্লি হয় তখন আমরা জানতে পারি একটা না, দুই-দুই'টা পদ্মাসেতু হচ্ছে।

এরই মাঝে আমরা শুনতে পাই দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়ে গেছে! এত বিদ্যুৎ তারা রাখবে কোথায় তা-ই ভেবে পাচ্ছে না। শেষে সেই বিদ্যুৎ পাঠিয়ে দেয়া হয় রাস্তার লাইটনিং-এ, শাহজালাল বিমান বন্দরের "ওয়েলকাম" আর "থেংক ইউ"-এ, পুলিশ বক্সের ডিজিটাল ডিসপ্লেতে।

ডেসটিনি'র মত এমএলএম'গুলো প্রতারণা করে তরুন সমাজকে টাকার লালচ দেখিয়ে এটা-সেটা বিক্রি করে যায়। কখনো নাইজেলা তেল, কখনো পায়ের ব্যায়ামের যন্ত্র তো কখনো সর্বরোগের কুইক মহৌষধ-রুপে বিশেষ প্রকৃতির ব্রেসলেট। আর সেইসবের খবর আমাদের প্রশাসনের কানে পৌছায় প্রায় দশ বৎসর পরে। আর এদিকে সকলের নাকের ডগা দিয়ে চলে হলমার্কের কেলেংকারী।

এই সব প্রতারণার সর্বশেষ সংযোজন হল দেশের জিডিপি। বলা হল দেশের জিডিপি রেকর্ড ছাড়িয়েছে। দেশের অর্থনীতিতে এসেছে জোয়ার, জলোছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন, সুনামী!! কিন্তু গত কয়েকদিনের আলোচনা থেকে আমরা জানি এটা শুধু ধনীদের উন্নতি, গরীব আরো বেশি গরীব হয়ে চলেছে দিন দিন। জিডিপিতে এইসব ধরা পরছে না। অর্থাৎ, এটা অর্থনীতিবিদদের ভাওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।

এত সব কিছুর ভিতরে মুসা না হয় নিজের নাম ফুটানোর জন্য একটু প্রতারণা করলই। তাতে এত হাউকাউ-এর কি আছে? তারচেয়ে এভারেস্ট জয়ের মাধ্যমে দেশের নামটাও একটু ফাটল। কি বলেন??
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×