“শালার মাগিরে বিয়ে করে আমার জীবনটা ছারে-খারে গেল। ক্ষয়পোড়া মাগি, এতো কই তবু মরে না।”
রূপম শিক্ষিত ছেলে। রুচিশীল এবং মান-সম্মত। আগে কখনও এমন ভাষায় কথা বলতো না। সূচি স্বামীর দিকে একটু নীরবে তাকায়। মনে করিয়ে দিতে চায়, “তুমিই একদিন বলেছিলে, ‘তোমায় পেয়ে আমার জীবন ধন্য হলো।’ এতো সহজেই তা ভুলে গেলে?”
সূচি পিতা মাতার বড় মেয়ে। তার আরো দুই ভাই আছে। সে ছােট ঘরের মেয়ে। রূপ আর গুন দেখে চৌধুরী পরিবার একদিন তাকে বৌ করে এনেছিল। বধূবেসে সেদিনের সূচিকে লক্ষ্মী প্রতিমার মতই মনে হয়েছিল।
আট বছর গত হলো। সূচির সে রূপ এখনও ঝলসে যায়নি। সারা শরীরে যৌবন এখনও ঢেউ খেলছে। কাপড়ের ফাঁকে ফোকরে সে যৌবন এখনও নির্লজের মত উঁকি মারে। সেদিকে তাকালে যেকোনো পুরুষের শরীর তরাস করে কেঁপে ওঠে। একটা পাওয়ার বেদনায় তার সারা বুকের মাংস থর থর করে কাঁপে। এতোরূপ †যŠবন থাকতেও সূচি আজ সবার চক্ষুশূল। †কউ তাকে †চাখে †দখে না। তার সমস্ত রূপ †যŠবন †যন বৃথা। সন্তান না হলে সকল নারীরই রূপ †যŠবন মূল্যহীন। সংসার চায় সন্তান। সন্তান হলো সংসারের সুখের ?িকানা। সূচির †স ক্ষমতা †নই। সংসারের †কউ তাকে †চাখে †দখতে পারে না।
সূচি সব কিছু ভুলে বাবার বাড়ি চলে যাবে কিন্তু তার দুঃখে মা-বাপও দুঃখে দীর্ঘঃশ্বাস †ফলবে। মা-বাবা †য আদর দিয়েছে তার বিনিময়ে †স তাদের কষ্ট দিতে চায় না। সব দুঃখ †স সবার অলক্ষে নীরবে সয়ে †যতে চায়। †স তার †চাখের চলে আর কাউকে †ভজাতে চায় না।
সারা দিন তার †কান কথা †নই। শুধু কানটা বধির হলে আরো ভালো †হাত। সকল যন্ত্রণা মুছে †যত। বাবা তাকে আদর করে লক্ষ্মী বলে ডাকতো। এরা অলক্ষ্মী বলে অনাদরে গাল ছাড়ে। বাবা বলতো, ওর ধনে জনে ভরে থাকবে। এরা বলে ওর জন্য সংসারটা ছারে খারে †গল। †কানটা সত্য?
যার সন্তান †নই তার সংসার †নই। সংসার যদি না হবে তবে তার এতো রূপ গুণের স্বার্থকথা †কাথায়? প্রতিদিন তার রূপের লাবণ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। আঁচলের ভাঁজে ভাঁজে তার †যŠবন খসে পড়ে তবু কমে না। †স তাকে এতো †ঢকে রাখে তবু †চাখ দুটো তা †ভদ করে চলে যায় বহু দূর। সূর্য †যমন প্রতিদিন আলো দান করে কিন্তু তার †জ্যাতি কমে না। সূচিও ?িক †তমনি। প্রতিদিন রূপের জলসা করে †যন নিজেকে সাজিয়ে রাখে।
আজকাল রূপম তার সাথে †কান কথা বলে না। শুধু গালি গালাজ করে। সেদিন রাতে সূচি বলল, “তুমি শুধু এ রাত আমার কথা †শান। আমার মনের সব কথা বলে আমি চলে যাব। আমার মনের সব কথা আমি বলতে চাই। আমাকে আমার ব্যথা †থকে মুক্তি দাও আমি †তামাকে মুক্তি †দব। আমি ইচ্ছে করে বন্ধ্যা হইনি কিন্তু তুমি ইচ্ছে করে আমার সাথে অবিচার করছো।
তোমার †সই ভালোবাসা †কাথায় †গল রূপম? তুমি বলতে †তামার †চাখে রঙিন স্বপ্ন ঝিলিক †দয়। †কাথায় হারালো আমার †স দুচোখের স্বপ্ন? আমি †তামাকে ভালোবাসি। †তামার সুখের জন্য আমি †তামাকে মুক্তি দিতে চাই। কিন্তু তুমি বলো, আমি †কাথায় যাব? এ ঘরইতো আমার সত্যিকারে ?িকানা।
আমাদের সন্তান †নই †স †দাষ আমার একার হলেও দুঃখ কি †তামার একার? তুমি কি জানো সন্তান †বদনায় আমার বুকটা জ্বলে জ্বলে অঙ্গার হয়ে আছে। সন্তান হলো মাতৃত্বের পূর্ণ সম্মান। তুমি হয়তো বিয়ে করলেই সন্তান পাবে। কিন্তু আমি কি তা †কান উপায়ে পাব? তুমি বলো, আমি †কান উপায়ে তা †পতে পারি। যদি তার জন্য আমি আমার জীবন বিসর্জন দিতে না পারি তবে তুমি †য সাজা †দবে আমি তার †কান প্রতিবাদ করবো না।
আমি আরেকটা বিয়ে করতে পারব না। আমার যতই রূপ †যŠবন থাক না †কন †কান পুরুষ যদি জানতে পারে আমি মা হতে পারব না †স আমাকে পায়ে †?লে দেবে বুকে জড়িয়ে †নবে না। আমি †তামাকে মুক্তি দিয়ে যাব কিন্তু ক্ষমা করতে পারব না। আর আজকের রাতটা তুমি আমাকে ধার দাও। আমি যাতে সারা জীবন †বঁচে থাকতে পারি তার কিছু স্মৃতি নিয়ে যাই।
তুমি আমাকে মনে করবে না জানি। তবু যদি †কান দিন আমাকে মনে পড়ে †তামার জানালার গ্রীলে ধরে দূর নীলিমায় তাকিয়ে †থকো। †তামার †বদনাকে আমি শান্তি দিয়ে যাব। †কবল সান্ত¦না নয় তুমি সুখও খুঁজে পাবে।
একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করি, †কান দিন সকালে ঘুম †থকে †জগে যদি †দখ, †তামার অবিচারের অপরাধ নিয়ে †য দুটি †চাখ †তামার পানে নীরবে তাকিয়ে থাকতো সামান্য কিছু পাওয়ার আশায় †স †নই। তুমি কি সুখী হবে?”
রূপম †কান জবাব দিল না।
সকালে রুপমের ঘুম ভাঙ্গতে †দরী হলো। কারণ, অনেক রাত্রে ঘুমিয়েছে। ঘুম †থকে †জগে †দখল আজ তার শিয়রে ব্রাশে †পস্ট এবং জলের জগ †নই। নীরবে একাকী একটু খুঁজল কিন্তু †কাথায় পাওয়া গেল না। অনেক †খাঁজ খবর নিল তবুও না।
সূচি একটা হাসপাতালে কাজ নিল। কাজে তার মন বসে না। তাছাড়া সবাই তার দিকে তাকিয়ে থাকে। এ রূপ †যŠবন তার কাল হয়ে দাঁড়াল। নিজে †চাখ বুজে অন্যের †চাখ আড়াল করতে লাগল।
সূচি একাকি একটা রুম নিল। রুমটা †ছাট্ট কিন্তু সাজানো †গাছানো। তার রূপের মত প্রস্ফূটিত হয়ে আছে। †কান কিছুর জন্য তাকে বাইরে †যতে হয়না। রাতের অধিকাংশ সময় কাটে তার দক্ষিণ-পূর্ব পাশের জানালায় দাঁড়িয়ে। এ জানালায় দাঁড়ালে তার মন অনেকটা শান্ত হয়। †চাখে †ভসে ও?ে অনেক কিছু। †সই রাত †সই সব দিনগুলি। বাবা-মা ভাইদের মুখ। †সই †সানালী দিনগুলি। বাবাকে মাঝে মধ্যে চি?ি †লখে। ?িকানাবিহীন চি?ি। কখনও দূরের ডাকঘরের গিয়ে চি?ি †পাস্ট করে।
আরো চার বছর কাটল। সুচির দিন শেষ হয়ে আসছে। এখন এক রকম দিন †কটেই যায়। †স আগে রাত্রে ডিউটি নিতো না এখন †নয়। অনেক কিছু মানান সই হয়ে †গছে। †সদিন রাতে ডাক্তার কমলেশ তাকে বিয়ের প্রস্তাব করল।
“দেখুন, আপনার বাচ্চা-কাচ্চা হয়না আর আমারও হবে না বলে আমার স্ত্রী আমাকে †ছড়ে চলে †গছে। আর বিয়ে করতে চাইনি। করণ, যাকে বিয়ে করব †সই চলে যাবে। কিন্তু আপনি.. ..।”
ডাক্তার বাবু, আমার স্বামী আমাকে ত্যাগ করলেও আমি তাকে ত্যাগ করিনি।”
“ধরে †রখে কি লাভ?”
“যার স্বপ্ন ভাঙ্গে তার সুখ হয় না। এখন আমি আমার মনে একটা †বদনা নিয়ে †বঁচে থাকি। অন্যের মাঝে নিজেকে হারালে আমার †স †বদনা এলো †মলো হয়ে যাবে। এখনও সব কিছু ভাগ্য নিয়ে ভাবী। অন্য কারো মাঝে হারালে এ ভাগ্য আমাকে কষ্টের মাঝে †?লে †দবে। আমি অনেক কিছু †ভবে এখনও সান্ত¦না পাই।”
“যার †য †বদনা নাই †স তার ব্যথা †বাঝে না। আমি এতোকাল ভাবছি মহিলারাই খারাপ আর তুমি ভাবছো পুরুষেরা। আসলে পরিস্থিতিতে সবাই সমান।”
“আমার কাছে আপনি একজন ভিন্ন †লাক।”
“আমার কাছে তুমিও।”
“আপনার স্ত্রী †যমন ফিরে আসবে না আমার স্বামীও। তবু, আমার স্বামী আমার কাছে চিরদিনে ঈশ্বর।”
সূচি চলে †গল। কমলেশ বাবুর প্রতি তার শ্রদ্ধা †বড়ে †গল। কারণ, কমলেশ বাবুও তার মত একজন দুঃখী।
সূচি এখন আবার রাত্রে ডিউটি বাদ দিল। রাতটা †স শুধু রূপমকে নিয়ে ভাবতে চায়। †স ভাবনার ভাগ †স কাউকে দিতে চায় না। কমলেশ বাবু তার †কামল মন হয়তো একদিন †ফঙ্গে †ফলতে পারে। কিন্তু †স সুযোগ †কাথায়?
আরো চার বছর কাটল। সূচি আবার রাত্রে ডিউটি নিল। রূপমের কথা অনেকটা মন †থকে ঝলসে †গছে। তবে অন্য পুরুষের কথাও তার হৃদয়ে এখন †দালা দেয় না। কিন্তু †স রাত সূচির জীবনে গুরুত্বপূর্ণ রাত হয়ে দাঁড়াল। †য কমলেশ বাবু †নই বলে †স রাত্রে ডিউটি নিল রাত্রে †সই কমলেশ বাবুকে রিং করে আনল। সূচি রোগীর শিয়রে নীরবে বসে আছে। কমলেশ বাবু এলে বলল, “ডাক্তার বাবু, ওকে বাঁচান। ও আমার স্বামী রূপম।”
ডাক্তার স্যালাইন ও কয়েকটা ইনজেকশান দিল। †রাগী তবু নীরব। ডাক্তার বলল,“কিছুক্ষণ পর †রাগীর জ্ঞান ফিরবে। ওর বড় †সবা যতেœর প্রয়োজন।”
সূচি সারা রাত রূপমের শিয়রে বসে রইল। সকালে রূপমের জ্ঞান ফিরল। রূপমের জ্ঞান †ফরা †দখে সূচির গড়িয়ে যাওয়া †চাখের জল মুছে †ফলল। নীরবে তাকিয়ে তাকল রূপমের দিকে। এ †চাখে আজও †কান অভিযোগ নেই।
সূচি ডাক্তারকে বলে রূপমকে নিয়ে এলো সুচির †সই †ছাট্ট রুমে। সূচি †কান দিন স্বপ্নেও ভাবেনি এ কথা। কারণ, এ ভাবনা অবান্তর।
“কেমন লাগছে এখন?”
রূপম একটু বড় †চাখে তাকাল।
“না না। আজ আমার †বঁচে থাকার জন্য †কান স্মৃতি করে রাখতে †তামাকে আনিনি। †তামার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু বলও না। †তামার †কমন লাগছে?”
“ভালো।”
রূপম নীরবে সূচির দিকে কাতায়।
“তুমি গালি-গালাজ কর, খারাপ কথা বলো তবুও তোমার কথা আমি শুনতে চাই। কিছু বলো। কত দিন †তামার কথা শুনি না। কতদিন আমি জানালার আড়ালে দাঁড়িয়ে সারা রাত কাঁদিনা।”
রূপম তবু নীরব। সূচির †সসব দিনের দিকে তাকিয়ে আছে।
“বলো রূপম। †তামার জন্য আজও আমি সারা রাত দরজার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে পারব একটুও †চাখের জল †ফলব না। বলো রূপম, আজও †তামার জন্য আমি খাটের নীচে শুয়ে থাকবো শীতের কাপড় চাইব না।”
“তুমি আমার কাছে কি চাও সত্য করে বলো।”
“তোমাকে ধরে রাখার মত ক্ষমতা ভগবান আমাকে †দয়নি। †য সন্তানের অভাবে তুমি আমাকে ত্যাগ করেছে †স সন্তানও আমি চাই না। আমি †তামাকে চাই রূপম। আমি †তামাকে চাই।”
“কিন্তু।”
“আমি বুঝি তা, যাদের জন্য তুমি আমাকে †ছড়েছো তাদের †ছড়ে আমাকে গ্রহন করতে পারবে না। কিন্তু আমি তাদের ছাড়তে বলছি না।”
“সূচি †কবল তুমি একা ভালোবাসতে পারে না। আরো †কউ পারে।”
“জানি।”
“জানো না। তুমি জানো না, আমি আজও বিয়ে করিনি।”
“কেনো?”
“জানি না।”
সূচির সব প্রশ্ন নীরব হয়ে †গল। রূপমের দিকে নীরবে তাকাল। দুই গাল †বয়ে গড়িয়ে †গল অশ্রু বিন্দু। রূপম আস্তে আস্তে উ?ে বসল। সূচির কাঁধে ভর করে দাঁড়াল। সূচি বুকের সাথে জড়িয়ে ধরল রূপমকে। তারপর উচ্চস্বরে †কঁদে উ?ল।
০৭.০৯.২০১৪ইং
তেঁতুলিয়া, কাশিয়ানী, †গাপালগঞ্জ।