somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রতিটি শিশু মানুষ হোক আলোর ঝর্নাধারায় ...

০২ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যুগে না চাইলেও অনেক খবর চোখে পড়ে। গতকাল তেমনি এক খবরে চোখ বুলিয়েছিলাম। বাবার কাছে চাইনিজ খাবে বলে আবদার করেছিল ঢাকার বনশ্রীর দুই ভাই বোন। চায়নিজ রেস্তোরাঁ থেকে আনা সেই খাবার খেয়ে ঘুমানোর পর দুই ভাইবোনের আর ঘুম ভাঙ্গেনি।অথচ ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকেরা বলছেন হত্যা। মূল সত্য আসলে কী তা এখনো কেউ জানেনা।

পুলিশ এ ঘটনায় বাবা-মাসহ কাউকেই সন্দেহের বাইরে রাখছেন না। দুই সন্তানের মরদেহ মর্গে রেখে বাবা-মায়ের গ্রামের বাড়িতে চলে যাওয়ায় এবং মামলা না করায় এ ঘটনা নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের পর জানা গেছে শিশু দুটিকে খুব সম্ভবত গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। এমন হতে পারে, শিশু দুটির মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। দুজনেরই জিব কামড়রত অবস্থায় ছিল। গলার মাঝখানে ও চিবুকে নখের আঁচড় ছিল ও চোখে রক্ত জমাট বেঁধে ছিল। সাধারণত কাউকে গলা টিপে হত্যা করলে জিব কামড়রত অবস্থায় থাকে। খাবারে ভেজাল নাকি পরিকল্পিত হত্যা তা জানা খুব জরুরী।

মিডিয়াতে চোখ পড়লেই শিশু হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ ইত্যাদি খবর শুনে সবাই আৎঁকে উঠছি।প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও শিশু নির্যাতন ও নির্যাতন পরবর্তী হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি এ ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।শিশুদের নির্যাতনে এক শ্রেনীর মানুষ যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছে। যেন দেশব্যাপী চলছে শিশু নির্যাতন ও শিশু হত্যার মহোৎসব। লাকশামে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়া শিশুকে হত্যা করা হয়েছে, হবিগঞ্জের সুন্দ্রাটিকি গ্রামে খেলতে যাওয়া ৪টি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে, কুমিল্লায় দুইটি শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। গত ৫ জানুয়ারি এক দিনেই দেশে ছয় শিশুকে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে গাজীপুরের টঙ্গীতে চোর সন্দেহে মোজাম্মেল হককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ঢাকায় রানা নামের এক শিশুকে বিষ খাইয়ে হত্যা করে তার সৎ বাবা। নিখোঁজ হওয়ার দুই মাস পর ২৮ জানুয়ারি মিঠাপুকুরে একটি জমির গর্ত খুঁড়ে পুলিশ শিশু রাহিমুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে। ৩০ জানুয়ারি মুন্সিগঞ্জের সদরে মালির পাথর এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে নীরব নামের এক মাদ্রাছাত্রের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।এভাবে প্রতিদিনই কোন না কোন শিশু হত্যার খবর আমাদের চোখে পড়ছে।‘আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) প্রতিবেদনে প্রকাশ ২০১৫ সালে দেশে ১৩৩ শিশু হত্যার শিকার হয়েছে। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের মতে শুধু ২০১৬ তেই এ পর্যন্ত ৪৯টি শিশু হত্যা করা হয়েছে। অবুজ শিশুরা কেন এরকম অবস্থার শিকার হচ্ছে তা আমার বোধগম্য নয়।

গতবছর সবচেয়ে আলোচিত ছিল সিলেটে শিশু সামিউল আলম রাজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা।নির্যাতনকারীরা শিশুটিকে পেটানোর ২৮ মিনিটের ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়৷যা দেখে দেশের মানুষ স্তম্ভিত হয়েছিল৷ কতটা অসুস্থ মানসিকতার পরিচয় জানান দিয়েছিল আমাদের সে ঘটনা। আমার কাছে মনে হয় সেই শুরু শিশু হত্যার খবর বড় করে মিডিয়ায় আসার।(সত্যিকার অর্থে শিশু নির্যাতন, হত্যা বরাবরই হয়ে এসেছে। আমি হয়ত সে ঘটনার পর একটু বেশি নজর দিয়ে আসছি)।
আমরা কোথায় আছি? আমাদের পরিবারের, শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে আদৌ কি কেউ ভাবে? আমরা নিজেরাও কি ভাবি?এতটা অস্থির সময়ের মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি যে হত্যাকারী সন্দেহে আমরা বাবা-মাকেও তালিকার বাইরে রাখছি না। একটা সমাজের, দেশের কতটা অবক্ষয় হলে এমনটা হয়!আজকের শিশুরা আগামীকালের সমাজের, দেশের হাল ধরবে। তাদের কোন অসুস্থ সময়ের দিকে আমরা ঠেলে দিচ্ছি প্রতিদিন?

এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান;
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তূপ-পিঠে।
চলে যেতে হবে আমাদের।
চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ-শিশুর বাসযোগ্য ক’রে যাব আমি-
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।

সেই কবে কবি সুকান্ত এই মর্মস্পর্শী কবিতা লিখে গিয়েছিলেন। আমরা কি পেরেছি এ কবিতার মর্ম উপলব্ধি করতে? পৃথিবীকে বাসযোগ্য করার বদলে ধংসস্তুপে পরিনত করে যাচ্ছি আমরা। এ থেকে পরিত্রানের উপায় বের করতে হবে যত দ্রুত সম্ভব।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৪৪
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাইনারি চিন্তাভাবনা থেকে মুক্তি: পূর্ণাঙ্গ তুলনার ধারণা এবং এর গুরুত্ব

লিখেছেন মি. বিকেল, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৩০



সাধারণত নির্দিষ্ট কোন বস্তু যা শুধুমাত্র পৃথিবীতে একটি বিদ্যমান তার তুলনা কারো সাথে করা যায় না। সেটিকে তুলনা করে বলা যায় না যে, এটা খারাপ বা ভালো। তুলনা তখন আসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যাড গাই গুড গাই

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

টান

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১১ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২২


কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর
বিচ্যুতি ঠেকা‌তে ছু‌টির পাহাড়
দিগন্ত অদূর, ছ‌বি আঁকা মেঘ
হঠাৎ মৃদু হাওয়া বা‌ড়ে গ‌তি‌বেগ
ভাবনা‌দের ঘুরপাক শূণ্যতা তোমার..
কোথাও স্ব‌স্তি নেই আর।
:(
হাঁটুজ‌লে ঢেউ এ‌সে ভাসাইল বুক
সদ্যযাত্রা দম্প‌তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরী

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৯

স্বল্প আয়ের লক্ষ্যে যে স্কিলগুলো জরুরীঃ


১। নিজের সিভি নিজে লেখা শিখবেন। প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করার অভ্যাস থাকতে হবে। কম্পিউটারের দোকান থেকে সিভি বানাবেন না। তবে চাইলে, প্রফেশনাল সিভি মেকারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×