২৬) অপেক্ষা তাহার জন্য
যখন সূর্য্যটা পশ্চিম আকাশে
ডুবতে শুরু করেছে
তখন জাহাজের ডেকে বসে
আকাশের দিকে তাকিয়েছিলো সে।
সমুদ্রের পানিতে ভেসে যাচ্ছিলো
ওর চিন্তার ছাঁয়ারা।
কথাহীন হয়ে বসে ছিলো ও অনেকক্ষন।
এবার সমুদ্রে এসে ওর এমন হচ্ছে।
কাজ শেষ হলে কেবিন এ এসে বিশ্রাম।
বাকি সময়টুকু ডেকে বসে
পানির দিকে তাকিয়ে ভাবনাদের ভেলা ভাসানো।
আকাশের মেঘগুলো ছুঁয়ে দিয়ে
ইচ্ছের তরী ভাসানো।
অনেকদিন হয়ে গেলো।
মাটির পৃথিবী ছেড়ে পানির এই জীবনযাপন।
শেষ যেবার মাটির পৃথিবীতে ছিলো.....
ওর প্রিয়তমা নারীর সাথে দেখা হয়েছিলো।
মেহেদীর কারুকাজ ছিলো তার দু'হাতে,
আঙুলে হীরার দ্যূতি।
ও বলে এসেছিলো আসবে।
ছয়টা মাস পর ই।
আজকের সূর্য্যটা ডুবলো
অপেক্ষার দীর্ঘ সিঁড়ি বেয়ে।
কাল ভোরে জাহাজটা যখন
তীরে পৌছুবে।
হাতে একগুচ্ছ সাদা গন্ধরাজ নিয়ে
পড়নে ঢাকার তাঁতের লাল শাড়ী,
কপালে সূর্য্য লাল টিপ।
ওর জন্য বুকের মধ্যে ঢিপ ঢিপ প্রতিক্ষা নিয়ে
অপেক্ষার দীর্ঘ এক পথ হয়ে আছে সে।
ওর ভালোবাসার মানস প্রতিমা।
গুনে গুনে বিশটা চিঠি এসেছে ওর কাছ থেকে।
নানান বন্দর ঘুরে।
কথারা এসেছে মুখর বলাকা হয়ে।
সেই সব চিঠি অজস্রবার পড়েছে ও।
মানুষের বুকের মধ্যে কথার পায়রা থাকে।
মানুষের চোখের মধ্যে সমুদ্রের বিশাল নীল থাকে।
মানুষের ঠোঁটের ভাঁজে সীমাহীন সৌরভ থাকে।
মানুষের কানের লতিতে দারুন উষ্ণতা থাকে।
মানুষের দু'হাতের মধ্যে পরম বন্ধুত্ব থাকে।
মানুষের পুরো আমিত্ব জুড়ে কত মহাদেশ থাকে।
এই দারুন মেয়েটার সাথে দেখা না হলে ওর
জানা হতোনা।
জানা হতোনা ভালোবাসার রাজ্যটা এত সুন্দর।
আজকের সূর্য্যটা ডোবার সাথে সাথে নিজের মধ্যে
দারুন একটা অস্হিরতা অনুভব করে ও।
অপেক্ষার শেষ রাতটা আজ র্নিঘুম কাটবে ।
ও নিশ্চিত জানে
ওর প্রিয় মানুষটাও আজ একবার ও
চোখের পাতা বুজবেনা
কাল সকালে ওরা একসাথে সুর্য্য ওঠা দেখবে
হাতে হাত রেখে
সমুদ্রের কিনারায়।
(আজকের আনন্দর দিনে সবাইকে সবাইকে শুভেচ্ছা....)
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ৭:৩৮