somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বই রিভিউ: “ঢাকার বাইজি উপাখ্যান”, লেখক আরিফ নজরুল

০৬ ই নভেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছোটবেলায়, পরীক্ষার আগে কিংবা কোনো কিছু মুখস্থ করার সময় আমি একই জিনিস বারবার পড়তাম। একটা উদাহরণ দিই—“সাগর কাকে বলে” এর সংজ্ঞা মুখস্থ করব। ধরুন, বইতে লেখা আছে— “কয়েকটি নদী বা জলধারা একত্রে মিলিত হয়ে যে বিশাল জলরাশি সৃষ্টি করে এবং যা শেষে সমুদ্রে মিশে যায়, সেটাকে ‘সাগর’ বলা হয়।”

আমি যখন এই সংজ্ঞাটা মুখস্থ করতে বসতাম, তখন ঠিক এইভাবেই করতাম, জোরে জোরে—
“আয়াআআআ কয়েকটি নদী বা জলধারা একত্রে মিলিত হয়ে…”
“আয়াআআআ কয়েকটি নদী বা জলধারা একত্রে মিলিত হয়ে…”
“আয়াআআআ যে বিশাল জলরাশি সৃষ্টি করে…”
“আয়াআআআ কয়েকটি নদী বা জলধারা একত্রে মিলিত হয়ে যে বিশাল জলরাশি সৃষ্টি করে…”
“আয়াআআআ এবং যা শেষে সমুদ্রে মিশে যায়, সেটাকে ‘সাগর’ বলা হয়।”
“আয়াআআআ কয়েকটি নদী বা জলধারা…”
“আয়াআআআ কয়েকটি নদী বা জলধারা একত্রে মিলিত হয়ে…”
এইভাবে মুখস্থ করতাম। আমার ধারণা, ছোটবেলায় আমরা প্রায় সবাই এই স্টাইলেই, তবে নিজের মতো করে মুখস্থ করতাম।

বইয়ের রিভিউ করছি—এর মধ্যে মুখস্থের গল্পটা কেন এলো, ভাবছেন নিশ্চয়ই? আসলে আমি যে বইটা নিয়ে লিখছি, সেটাই এমন একটা বই—মনে হবে, লেখক যেন পাঠককে মুখস্থ করানোর মিশনে নেমেছেন।

বইটার নাম “ঢাকার বাইজি উপাখ্যান”, লেখক আরিফ নজরুল।

ইতিহাস নিয়ে আমার বরাবরই একটা টান আছে। তাই ইতিহাসের বই কেনার আগে আমি সবসময় লেখকের পরিচয় দেখি। কিন্তু এই বইটা আমাকে ভীষণ হতাশ করেছে। একই কথা, একই তথ্য—৭ থেকে ৮ বার! সত্যি বলতে, পাঠক হিসেবে একসময়ে বিরক্তি ধরে যায়।

যারা বইটি পড়েছেন, তারা হয়তো বলবেন—একেক জায়গায় বাইজিদের প্রসঙ্গে একটু একটু বদল আছে, তাই পুনরাবৃত্তি মনে হয়েছে।আমি যদি সেই যুক্তি মেনে নিই, তাহলেও বলব—বইটির ইতিহাস আর উপস্থাপনা ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের।

বাইজিদের নাম ধরে, সময় ধরে, অঞ্চল ধরে বলা যেত—এখানে এমন, ওখানে তেমন। তাহলে বইটা হতো তথ্যসমৃদ্ধ, মনোগ্রাহী। কিন্তু লেখক সেই কষ্টটুকু নেননি। মনে হয়েছে, যত্রতত্র থেকে তথ্য এনে কপি-পেস্ট করে দিয়েছেন। নিজের ভাষা বা নিজস্ব ভাবনা খুব একটা ধরা পড়ে না।

রকমারিতে দেখলাম—maximum not verified purchaser রা বইটাকে ৫ রেটিং দিয়েছেন। তারা কি “বিরিয়ানি রিভিউয়ার”? কে জানে! কিন্তু verified purchaser দের মন্তব্যগুলো একটাই কথা ঘুরেফিরে বলেছে—একই তথ্য বারবার এসেছে।

এই লেখকের আরও অনেক বই আছে—বেশিরভাগই ইতিহাসধর্মী। কিন্তু এটা ছিল তাঁর লেখা আমার প্রথম পড়া বই, আর তাতেই অভিজ্ঞতা ভালো হয়নি। সোজা কথা—এই লেখকের পেছনে আর টাকা খরচ করতে চাই না। যদিও আমার মতো একজন পাঠক বই পড়ুক বা না পড়ুক, তাতে লেখকের তেমন কিছু আসে যায় না।

রকমারিতে আমার রেটিং ছিল—১।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৭
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×