একের পর এক হুঙ্কার দিয়েই যাচ্ছে মোদি। গতকাল মোদি বললেন অবৈধ বাংলাদেশীদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নতুন বিভাগ খুলবেন। সবাই ভেবেছিলো ভোটের রাজনীতিতে কত কথাই না বলতে হয়, চেয়ারে বসলে সব ঠিক হয়ে যাবে। ক্ষমতায় যেই আসুক না কেন পররাষ্ট্র নীতিতে তার কোন প্রভাব পড়বে না এরূপ নানা ভাব-গম্ভীর, সান্ত্বনা বাক্যে বলে বেড়াচ্ছেন রাজনীতিবিদ ও রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা। মোদির গুড বুকে নাম লেখাতে ব্যস্ত দুই নেত্রী। অথচ খুব সহজ কথাগুলো আমরা এখনও বলতে পারেনি। মোদির মুখের উপর কথাগুলো বলার সময় কি এখনও আসেনিঃ
বিশ্বের সবচেয়ে বেশী রেমিটেন্স সংগ্রাহক দেশ ভারত। বাংলাদেশ হচ্ছে তার ৫ম শীর্ষ রেমিটেন্স সরবারহকারী দেশ। AUE, USA, SA, Uk and then BD. ২০১২-১৩ অর্থ বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত রেমিটেন্স হচ্ছে ৩৭১৬ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে অবস্থিত ৫ লক্ষ অবৈধ ভারতীয় নাগরিক যারা অধিকাংশই কাজ করে আমাদের আরএমজি সেক্টরে ও কিছু এনজিওতে তারা অবৈধভাবে এই টাকা পাঠায়। (Click This Link)
পক্ষান্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবে বাংলাদেশ যে সমস্ত দেশ থেকে রেমিটেন্স সংগ্রহ করে তার প্রথম ১৮ টি দেশের তালিকায় ভারতের নাম নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিভাগে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে জেনেছি ১২-১৩ অর্থ বছরে ভারত থেকে রেমিটেন্স এসেছে মাত্র ৩.৮ মিলিয়ন ডলার। ১৩-১৪ অর্থ বছরের প্রথম ৬ মাসে এসেছে মাত্র ১.৫ মিলিয়ন ডলার।
মোদি যে অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসন বন্ধের জুজু তুলছে তার চেয়ে প্রায় ১ হাজারগুন বড় সমস্যা বাংলাদেশে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসন। রেমিটেন্সের হিসাব তাই বলে। মোদি আবার বেশি চিন্তিত বাংলাদেশী মুসলমান অভিবাসী নিয়ে। বিজেপির কাছে ভোটের তকমায় এটি একটি লোভনীয় ও আকর্ষণীয় ইস্যু; কিন্তু বাংলাদেশের একটা পাগলেও বোঝে বাংলাদেশ থেকে অভিবাসিত ৯৯.৯৯ শতাংশ মানুষই হিন্দু। সামান্য কিছু ব্যতিক্রম হিসেবে দু’ চারটি মুসলিম পরিবার থাকলেও থাকতে পারে।
তিস্তা ইস্যুর কারনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ তার জীবদ্দশায় এই প্রথমবারেরমত উপলব্ধি করেছে, নিজ স্বার্থের বাইরে ভারত কখনো বন্ধুত্ব পাতায় না, এমনকি ৭১-এও যে সাহায্য করেছে তা তাদের নিজ স্বার্থেই। সেটা যাই হোক বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশের কাছে ভারত যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ভারতের কাছে তার চেয়ে হাজার গুণ বেশি গুরুত্ব বাংলাদেশের, সেটা বলাতো দূরের কথা বোঝার সাহসও হয়না রাজনীতিবিদদের।
আমাদের নেতাদের এখন মেরুদন্ড সোজা করে মোদির মুখের উপর বলার সময় এসেছে,
‘মোদি তুমি যতই লাফাও শুধু রেমিটেন্সের জন্যই নয় ভারতের অখন্ডতা ও সুষম উন্নয়নের স্বর্থেই তোমাদের বিচি কিন্তু আটকা পড়া বাংলাদেশের কাছে’!