somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপরূপ অন্য আলোয় প্রাপ্তির জন্মদিন /সুনীল সমুদ্র

০৫ ই নভেম্বর, ২০০৬ রাত ৯:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছু কিছু দিন থাকে -যাকে আলাদা করে ডায়রীর পাতায় লিখে রাখতে হয়। কিছু কিছু মুহুর্ত থাকে -যা নিজে থেকেই স্মৃতির খুব গভীর সোপানে গিয়ে-শক্ত করে আনন্দ অনুভূতির বাসা বাধে। আমার খুব কষ্টের দিনে আমি এইসব অপরূপ স্মৃতির দিন থেকে কিছু আনন্দ ধার নেই।আমার খুব অসহায়ত্বের দিনে আমি এইসব স্মৃতির ঔজল্য থেকে আবার বেঁচে ওঠার আলোকজ্জল ক্ষীপ্র অনুপ্রেরণা পেয়ে যাই -খুব অনায়াসেই।

এই বিশেষ দিনগুলোকে আমি তাই অনেকসময় ক্যালেন্ডারের পাতায় বিশেষ রং-এর কালি দিয়ে চিহ্নিত করে রাখি। এই বিশেষ দিনগুলোকে আমি হৃদয় ক্যাসেটে রেকর্ড করে রাখি -ঝংকৃত শব্দের সোনালী উচ্ছাসে অথবা নিঃশব্দ আবেগের রূপোলী মৌনতায়। তারপর ? তারপর হয়তো একদিন দেখা যায় -আকাশ অন্ধকার হয়ে যাওয়া এক বর্ষণমুখর বিকেলে সেই বিশেষ তারিখটার উপর হাত বোলাতে বোলাতে আমি ভাবছি ---আচ্ছা, এই দিনটাই তো? তাইনা? হ্যা, ঠিক এই দিনটাই.... ঠিক এই দিনটাতেইতো।.... কি আশ্চর্য্য, ঠিক এই দিনটাতেই...। ....


হ্যাঁ, তেমনি এক দিন কাটলো গত ৩১শে অক্টোবর। তেমনি এক উজ্জল স্মৃতির সন্ধ্যা বুকে নিয়ে ঘরে ফিরেছি রাত প্রায় এগারোটায়। দিনটা একেবারেই ব্যতিক্রমী ছিল-কারণ সেটি ছিল ইতিহাস হয়ে যাওয়া আমাদের প্রিয় প্রাপ্তিসোনার অপরূপ জন্মদিন। এ জন্মদিন যেন সেই পুরনো সত্যটাই নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেয়- আসলে সকল শক্ত অস্ত্র অথবা মন্ত্রের চেয়ে শুধু শুভাকাংখী মানুষের ভালবাসাই সবচেয়ে শক্তিশালী- সবচেয়ে মূল্যবান এক অবলম্বন- পৃথিবীজোড়া অসংখ্য মানুষের ভালবাসা আর শুভ-প্রত্যাশায় সিক্ত হয়ে কী ভীষণ দৃপ্ততায় ক্যান্সারের অশুভ করাল গ্রাস উপেক্ষা করে প্রাপ্তি বারবার ফিরে পায় এমন আনন্দের উৎসব- অপরুপ জন্মদিনের !


শুধু কি দিনটাই অসাধারণ ছিল? না- সেই অসাধারণ দিনের সূর্য অস্ত শেষে ব্লু-লেগুনের সন্ধ্যার সেই মুহূর্তগুলোও সব একেবারেই অনন্য আবেগের ছিল-কারণ সেখানে স্পর্শ ছিল সামহয়্যার ইন ব্লগের প্রখর মেধাময়, প্রাঞ্জল ও সেনসেটিভ লিখিয়ে ব্লগারদের আবেগ আপ্লুত হৃদয়স্পর্শী প্রাণের।

প্রাণের এই অফুরান স্পর্শকে আমি বরাবর কবিতার মতোই ভালবাসি- বিশুদ্ধ আবেগের এই প্রাণোচ্ছল প্রকাশকে আমি বরাবর -ধরে রাখতে চাই- অনিঃশেষ স্মৃতির অপরুপ মণিকোঠায়। তাই ছুটে গিয়েছিলাম সব ব্যস্ততা উপেক্ষা করে।কে যেন ভেতর থেকে বারবার ঠেলে ঠেলে বলছিল- সুনীল , তুমি কি বুঝতে পারছোনা , এতো সেই প্রাপ্তির জন্মদিন যার জন্য ২৩শে জুনের আয়োজন নিয়ে তুমি লিখেছিলে সেই কান্নাভেজা রচনা- প্রাপ্তির পরশ প্রার্থনায় প্রত্যয়ী পতাকাতলে পুনর্বার-এতো সেই প্রাপ্তি- যার ছবি প্রথম পাতা থেকে নামিয়ে ফেলার আহ্বানের বিরুদ্ধ ব্লগারদের সম্মিলিত উচ্চকিত প্রতিবাদের মুহূর্তে- তাদের সাথে একাত্মতা মিশিয়ে- তুমিও লিখেছিলে এক দীর্ঘ প্রতিবাদী কবিতা-কোথায় রাখবে তুমি সরিয়ে প্রাপ্তিকে , আর কতদূর?

এভাবেই প্রাপ্তিকে ঘিরে -দিনের পর দিন-সামহয়্যার ইন ব্লগ রাজ্যে তোমার ভালবাসার শিকড় গ্রথিত হয়েছে অনেক গভীরে -আর আজ-তারই জন্মদিনে তুমি যাবে না? তা কি করে হয়?

এই প্রাপ্তিতো অনেক কষ্ট শেষে ফিরে পাওয়া অপূর্ব অপরূপ এক প্রাপ্তি- এই প্রাপ্তিতো মৃত্যুঞ্জয়ী সংগ্রাম করে ফিরে পাওয়া- ভোরের নতুন আলোয় উদ্ভাসিত-অনন্য অসাধারণ এক প্রাপ্তি- এই এমন এক প্রাপ্তির জন্মদিনে তুমি তার স্বর্গীয় মিষ্টি হাসির অপরূপ আহ্বান অবহেলায় উপেক্ষা করে পড়ে থাকবে দূরে-একা একা? তা কি করে হয়?

ঠিক সন্ধ্যা ছটায় ফাইনাল ডিসিশান নিয়ে নিলাম -যেতে হবে - যেতেই হবে-- যেভাবেই হোক --যতো ব্যস্ততা, যতো কাজই থাকুক- আর স্থানটি যতো দূরেই হোক--আমি অবশ্যই যাবো।...টিকাটুলী থেকে আগারগাও এর তালতলা- খুব দীর্ঘ এক পথ-- হোক,তবু আপত্তি নেই --পথ, যতো দীর্ঘই হোক--পথ, যতো বাধাপূর্ণই হোক--প্রাপ্তি, তবু তুমি অপেক্ষা করো, আমি আসছি....।

আমি যখন ব্লু লেগুনে পৌছালাম, তখন রাত আটটা। খুব টেনশান লাগছিলো, হয়তো দেরী করে ফেলেছি খুব। না জানি প্রাপ্তির কেক কাটা শেষ। না জানি প্রাপ্তিমণির ফু দিয়ে মোমবাতী নেভানোর অপূর্ব দৃশ্যটা ক্যামেরাবন্দী করার মূল্যবান সুযোগটা মিস করলাম!

কিন্তু নাহ্। থ্যাংকস গড। তখনো প্রাপ্তির কেক কাটা শুরু হয়নি। আমি ভেতরে পা দিতেই চতুর্দিক থেকে সবাই সমস্বরে বলতে লাগলো - অনেক অনেক দিন বাচবেন আপনি -এইমাত্র আপনার কথাই বলছিলাম। অনুষ্ঠানে পা দিয়েই -নিজের অনেকদিন বাচার ব্যাপারে এমন তীব্র আশ্বাসবাণী শুনে মনটা চট করে খুব ফুরফুরে হয়ে গেল। নিজেকে ধমক দিয়ে বললাম-ধুৎ, ব্লাডপ্রেশার নিয়া হুদাই চিন্তায় মইরা যাও মঝে মাঝে।....এতো মানুষের অকৃত্রিম ভালবাসার ব্যাপারটা উপরওয়ালা নিশ্চয়ই কিছুদিন কিছুটা কনসিডার করবেন......। হা, হা, হা।...
প্রথমেই দেখতে লাগলাম কাকে কাকে আগে থেকেই চিনি আর কে কে নতুন এসেছে, আগে দেখি নাই....। নতুনদের মধ্যে পরিচিত হলাম সাকিব আল মাহমুদ-এর সাথে।.. খুব পিচ্চি একটা চেহারা-- কিন্তু চোখ দুটো যেন সারাক্ষণ বলতে থাকে- অনেক কিছুই বলতে পারি- শুনতে চাইলে শোন....।... পরিচিত হলাম হামিদুর রহমান ছিদ্দিকীর সঙ্গে..তিনিও নতুন...তার চাপদাড়ির আড়ালে ডেডিকেটেড লেখকের ছাপ...। আমি এভাবে দুএকজন নতুন ব্লগারের সাথে পরিচিত হয়েই দৌড়ে গেলাম- প্রাপ্তির দিকে।..

টেবিলের এক কোণে সে আনমনে খেলা করছিলো। আমি চতুর্দিকে ঘুরেঘুরে তার কয়েকটি ছবি তুললাম। চায়নীজ রেস্তোরার আলোর অপর্যাপ্ততার ভেতর ছবি ভাল উঠবেনা জেনেও - প্রাপ্তির এই এতোটুকু স্মৃতিও একদিন মুক্তোর কণার মতো স্মৃতিতে জ্বলজ্বল হয়ে ভাসবে জেনে-অন্ধকার প্রেক্ষাপটেই তুললাম তার হাস্যোজ্জ্বল কয়েকটি ছবি।...

সারিয়াকে আগের মতো দেখালেও রাগ ইমনকে প্রথমে চিনতে পারিনি।২৩শে জুনে যেমন দেখেছিলাম- সে তুলনায় অনেক বদলে গেছেন। অবশ্য পরিবর্তনগুলো সব পজেটিভ দিকেই। সারিয়ার সাথে আজ আমার কথা হয়েছে কম। সে বোধহয় ব্যস্ত ছিল নানা দিকে। নাকি আমিই খেয়াল করিনি? টেবিলের এক কোণায় ভাবী সহ বসে ছিলেন কালপুরুষদা। কালপুরুষদার সেই স্বভাবসুলভ হাসি, সেই অমায়িক-আন্তরিক আলাপচারিতা।...আমি সেখানে গিয়ে তাদের পাশে বসলাম।

পুরনো পরিচিতদের মধ্যে সুইটবয় আবু সালেহ আর আরাফাত রহমান এর সংগে কথা হল। আবু সালেহ নাকি আমার লেখায় মন্তব্য লিখতে ভয় পায়--হাসতে হাসতে ও বলছিলো......। আমার চোখ খুব ধানসিড়ি কে খুজছিলো, একসময় বুঝলাম-তিনি আসেননি।

এসেছিলেন অন্য একজন, নামেই যার তেজোদ্দীপ্ত পরিচয়-সেই অকুতোভয় সাংবাদিক- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক অমূল্য যতো রচনার সাহসী রচয়িতা- অমি রহমান পিয়াল-হাত বাড়িয়ে দিয়ে যার হাত ছুয়ে ফেলে মনে হল -ছুয়েছি একাত্তরের অগ্নি অনুভব-ছুয়েছি মুক্তিযুদ্ধের আগুনঝরা যতো দিন- আর বাংলামায়ের লুকানো যতো ক্ষোভ....।

সেই পিয়াল যখন আমার কবিতার প্রতি তার পছন্দ আর ভাললাগার কথা বলে- তখন আমার সমস্ত চেতনা খুব সচেতন, সজাগ হয়ে জেগে ওঠে-ভীষণ দায়িত্ববোধ আকড়ে ধরে আমাকে-ইচ্ছে জাগে আজকেই আরো ভাল করে আরেকটি নতুন কবিতা লেখার।

প্রাপ্তির মাকে আগে দেখলেও বাবাকে কখনো দেখিনি। আজ দেখলাম। প্রাপ্তি কেক কাটার সময় তারা গিয়ে পাশে দাড়ালেন।মোমের আলোয় উদ্ভাসিত হলো কেক। প্রাপ্তি ফু-দিয়ে মোমবাতী নেভাবে।... তেমনি এক মূহূর্তে প্রাপ্তির চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়া এক অপার্থিব আলোর মধ্যে আমি যেন দেখতে পেলাম -তার পাশে এসে দাড়িয়েছে সাদিক মোহাম্মদ আলম, এসেছে আস্ত মেয়ে , এসেছে শাহানা, হযবরল, ধূসর গোধূলি, ঝরা পাতা, দূরের কন্ঠস্বর, গোপালভার.... অনেক দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসা শুভাকাংখী যতো অজস্র ব্লগার।...


মোমের আলো নিভে গেল। প্রাপ্তির কেক কাটতে শুরু করলো। আমার হঠাৎ মনে হল-কোথা থেকে যেন বৃষ্টি শুরু হল ঢাকার আকাশে। এমন ঝমঝমে বিপুল বৃষ্টি- আজ অবধি কেউ প্রত্যক্ষ করেনি। আনন্দের অপরূপ এমন বরিষণ - আজ অবধি কেউ - এমন আবেগ দিয়ে হৃদয়ে বাধেনি। । কোথা থেকে যেন আনন্দ-আবেগ আর উচ্ছাস এসে মুহুর্তে ভাসিয়ে নিতে চাইছে নগরী।

হ্যাপী বার্থডে টু ইউ.... হ্যাপী বার্থডে টু ইউ..... হ্যাপী বার্থডে টু ডিয়ার প্রাপ্তি, হ্যাপী বার্থডে টু ইউ....। একটি অসামান্য প্রফুল্ল শুভকামনার আনন্দ সংগীতে যেন ভরে উঠলো ঘরটা।...

এরপর খাওয়াদাওয়ার টেবিলে পরিচয় হল-অতিথিদের মধ্যের আরো একজনের সাথে । যতদূর মনে পড়ে মিরপুর বাঙলা কলেজের শিক্ষিকা তিনি। দীর্ঘকাল বিভিন্ন মিডিয়ায় পারফর্ম করেছেন। চেহারাটাও চেনা চেনা লাগছিলো। নামের প্রথম অংশ- ক্রিষ্টিন। খুব সুন্দর করে কথা বলেন। শেষে গানও শুনিয়েছেন চমৎকার।

আমি চিৎকার করে করে খাওয়ার টেবিলে দূরবর্তী অবস্থানে বসা সবার সাথে কথা বলছিলাম বলে খাওয়ার দিকে আমার ততোটা মনযোগ ছিলনা। ব্যাপারটা খেয়াল করেই বোধহয় আমার পাশে বসা কালপুরুষদা খুব যত্ন করে করে খাবারের প্রতিটি আইটেম আমাকে বেড়ে দিচ্ছিলেন। ব্যাপারটা এখন যতোবার ভাবি, মনে মনে ভীষণ লজ্জিত হয়ে যাই। কোথায় খাবার পরিবেশনে আমার উচিত ছিল উনাকে এবং ভাবীকে সাহায্য করা, তা না করে --আমি নিজেই ......। যাক, কালপুরুষদা বড় হৃদয়ের মানুষ, আশাকরি আমার ছোটখাটো ভুল ত্রুটির জন্য তার ক্ষমা আমি পাব।


খাওয়াদাওয়ার অনেক পর দেখা মিললো আমাদের জায়ান্ট ব্লগার কৌশিকদার। কৌশিকদা নিজেও হয়তো জানেন না, আমি তাকে এ ব্লগের সেরা পাচজন লেখকের মধ্যে একজন হিসাবে ভীষণ শ্রদ্ধা করি। তার মধ্যে খুজে পাওয়া দুর্দান্ত এক আধুনিকতা, প্রখর মেধা -সেইসঙ্গে যে কোন উদ্যোগে অসামান্য ডেডিকেটেড সিনিসয়ারিটি ও সততার ছোয়া সবসময়ই আমাকে মুগ্ধকরে। একধরনের বলিষ্ঠ নেতৃত্বদানের গুণও তার মধ্যে খুজে পাই -যা মনে করিয়ে দেয়-আগামী দিনে ব্লগারদের যে কোন সুন্দর প্রচেষ্টার আন্দোলনকে বাধ ভেঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বটি সম্পন্ন করা তার দ্বারাই সম্ভব। কৌশিকদা খুব যত্ন করে সবার সাথে কুশল বিনিময়ে মগ্ন হলেন।

আমি এগিয়ে গেলাম দেরীতে আসা আরেকজন প্রমিনেন্ট ব্লগার অন্যমণস্ক শরৎ এর দিকে- আধুনিক কবিতা লেখায় যার অত্যন্ত পরিপক্ক হাত-- প্রায়শঃই তাকে আবিদ আজাদ অথবা শামসুর রাহমানের যোগ্য উত্তরসূরী হিসাবে আমাদের সামনে উপস্থাপিত করে। ...শরৎ বরাবরের মতোই খুব হাসিখুশী-- খুব আন্তরিক ভাবে কথা বলছিলেন। বললেন তার নোকিয়া এন-৭০ মোবাইলে বাংলার সাপোর্ট দেয়া সম্ভব কিনা - সেই বিষয়ে কিছু কথা।

ওদিকে কেউ কবিতা গান শুরু করছিলোনা বলে আমি হতাশ হয়ে যাচ্ছিলাম। এমন একটা অনুষ্ঠান কবিতা-গানের স্পর্শ ছাড়াই শেষ হয়ে যাবে- তা কি করে হয়? আমি তাই দ্বিধা না করে নিজেই শুরু করলাম....। আবৃত্তি করলাম--প্রাপ্তিকে নিয়ে পোষ্ট করা আমার সেই--- কোথায় রাখবে তুমি সরিয়ে প্রাপ্তিকে , আর কতদূর?--কবিতাটি। আবৃত্তির মুহুর্তে অবশ্য খেয়াল করছিলাম -আমাদের অনুষ্ঠানের মোষ্ট ইয়াং জেনারেশন ব্লগার সাকিব, আবু সালেহ, আরাফাত-এরা সবাই ততোক্ষণে চলে গেছে...। মনটা খারাপ হয়ে গেল। হায়! ইয়াং জেনারেশান না থাকলে আমার আবৃত্তির প্রশংসা করবে কে?

ওরা নাই বলে যেন অনুষ্ঠানটা ঠিক প্রাণ পাচ্ছিলোনা। অবশ্য ক্রিষ্টিন যখন গান ধরলেন, তখন একটি অসামান্য মুগ্ধতা আমাদের আচ্ছন্ন করে ফেললো। তার গাওয়া গানটি বহুবার শোনা খুব ভালো লাগা একটি গান-কিন্তু কিছুতেই তার প্রথম লাইনটা এখন মনে পড়ছে না।

রাগ ইমন গাইলেন -মন জাগ মঙ্গললোকে- শুনে মনে হল রবীন্দ্রনাথের গানের জন্যই তৈরী হয়েছে তার গলা। অপূর্ব এক মুগ্ধতার আবেশে আচ্ছন্ন হলাম আমরা।

রাত হয়ে গিয়েছিল অনেক। নইলে হঠাৎ শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠান হয়তো আরো চলতো কিছুক্ষন। কিন্তু উপায় নেই। সবাইকেই পাড়ি দিতে হবে দূরের পথ। তাই বিরতি দিতে হল এ অপরূপ আনন্দযজ্ঞে।

বাসায় ফেরার জন্য আমি যখন সিএনজি-তে উঠে বসলাম--তখন সত্যি সত্যিই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি নেমেছে ঢাকার আকাশে। চারিদিকে কেমন একট শীত শীত আবহাওয়া। ভাবলাম আজ অক্টোবরের শেষ দিন। কাল থেকে শুরু হবে নভেম্বর। শীতের আগমণী সাজ তো শুরু হবেই।

আগারগাও থেকে টিকাটুলী । দীর্ঘ এক পথ। টের পাচ্ছিলাম-প্রাপ্তির মিষ্টি হাসি, প্রিয় ব্লগারদের অপরূপ আলাপচারিতা আর তাদের স্বর্ণালী স্মৃতি বারবার আবেগতাড়িত করে তুলতে চাইছে আমাকে। তবে কি এমন আবেগতাড়িত এক মূহুর্তেই কোন এক গীতিকার লিখেছিলেন- এ শুধু গানের দিন -এ লগন গান শোনাবার?

গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মৃদু মন্দ হাওয়ায় অপরূপ অনুভবের মধ্যে বারবার মনে পড়ে যাচ্ছিল রাগ ইমন এর গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীতের সেই কয়েকটি অনন্য লাইন-

মন, জাগ মঙ্গললোকে.....
অমল অমৃতময় নব আলোকে
জ্যোতিবিভাসিত চোখে।

হের গগন ভরি জাগে সুন্দর, জাগে তরঙ্গে জীবনসাগর-
নির্মল প্রাতে বিশ্বের সাথে জাগ অভয় অশোকে....।



সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০০৬ রাত ১২:২২
২১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুহূর্ত কথাঃ সময়

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



সামুতে সবসময় দেখেছি, কেমন জানি ভালো ব্লগাররা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়! যারা নিয়মিত লেখে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রচণ্ড নেগেটিভ স্বভাবের মানুষ। অন্যকে ক্রমাগত খোঁচাচ্ছে, গারবেজ গারবেজ বলে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×