somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সবুজের ছোয়া পেতে বিপ্লব উদ্যানে

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যারা ভাবছেন, বিপ্লব উদ্যান নিয়ে লেখার কি আছে? তাদের বলতে চাই, ভাই এটা আমি, আপনি সবাই চিনি। কিন্তু চট্টগ্রামের এই পার্ক এর নাম লিখে গুগলে সার্চ দেন। কয়টা রেফারেন্স পাবেন আপনি? চট্টগ্রামের অনেক জায়গা নিয়ে অনেক লেখা আছে। কিন্তু ৩৬ বছরের পুরনো এই পার্কটি নিয়ে তেমন কোনো ভালো লেখা বা নিউজ নেই। যেসব আছে তাও অনেক সংক্ষিপ্ত। তাই যারা চট্টগ্রামের বাইরে। বিশেষত তাদের কাছে পরিচিত করানোর জন্যই এটি নিয়ে লেখা।




সবুজের ছোয়া পেতে বিপ্লব উদ্যানে


নগরীর ইট-পাথরের দালানকোঠা আর ব্যস্ত পথেঘাটের মধ্যে সবুজের ছোয়া পেতে একটুকু গাছগাছালিপূর্ণ জায়গা খোঁজে নগরবাসী। নগরীতে কোলাহলপূর্ণ স্থানগুলোর মধ্যে একেবারে শহরের মধ্যিখানে এমনি একটি স্থান দুই নাম্বার গেটের বিপ্লব উদ্যান। প্রতিদিনই বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় তিন শতাধিক মানুষ এখানে সময় কাটাতে আসেন। পার্কটির তত্ত্বাবধানে আছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নগর পরিকল্পনা বিভাগ।

দুই নাম্বার গেটের মহাসড়কের পাশেই এর অবস্থান। বাইরে থেকেই দেখা যায়, বাগানের ভেতরের গাছগুলো সযতনে ছাটানো। গাছগুলোর মাঝে গোলাপ, গাদা, চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, সূর্যমুখীসহ কয়েক প্রজাতির ফুলও আছে। এছাড়া আম, জাম, কাঁঠাল, নারিকেল, আমলকি, পেয়ারা’র মতো ফলজ গাছের পাশাপাশি আবার গীতচন্দন, ফণিমনসা ও নানা রকমের ঔষধি গাছও রোপন করা হয়েছে।

পার্কে প্রবেশের জন্য তিনদিকের সীমানায় আছে তিনটি প্রবেশমুখ। পার্কের ভেতরের ছোট ছোট সড়কের পাশে রয়েছে ল্যাম্পপোস্ট। রাতে পার্কে হাটতে বা বেড়াতে কোনো সমস্যা না হওয়ার জন্যই এই ল্যাম্পপোস্টগুলো। পার্কের একেবারে মাঝখানে রয়েছে একটি স্বাধীনতা ভাস্কর্য।

১৯৭৯ সালের ১৯ এপ্রিল স্থাপিত হয় পার্কটি। এই স্থানটিতেই নাকি বিপ্লবের মূলমন্ত্র নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হযেছিলো। তাই পার্কটির নামকরণ করা হয় বিপ্লব উদ্যান নামে। পার্কে বিনামূল্যে প্রবেশ করা গেলেও পার্কের প্রবেশাধিকার খুলে দেয়া হয় বিকাল চারটায়। রাত আটটা বাজতেই বন্ধ করে দেয়া হয় পার্কটি। পার্কের গাছগুলোর দেখাশোনা করেন ছয়জন মালি। পার্কের নিরাপত্তা রক্ষায় চারজন নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োজিত আছেন।

পার্কে কিন্তু দর্শনীয় তেমন কিছুই নেই। যা দেখার জন্য প্রতিদিন দর্শক আসবে। কিন্তু ব্যস্ত নগরীর ধূলোময় বাতাসে একটু সবুজের দেখা, মনজুড়ানো ফুলের দেখা পেতে আর একটু অবসর সময় কাটানো বা বিকালের আবহ পেতেই শহরের মাঝখানে এই ছোট্ট পার্কটিতে আসা। পার্কে ছোট থেকে বড় নানা বয়সের মানুষের আগমন ঘটে। কেউ আসেন বিকালের ঠান্ডা বাতাসে একটু বসতে, কেউ ব্যস্ত শিডিউলের সময়টুকুর অবসর কাটাতে, কেউ বা শহরের খোলা জায়গার অভাবে ছোট বাচ্চাদের হাটানোর জন্য।

নগরীর ষোলোশহরে বাসা দুই বোন মুন্নি সাংমা আর ত্রিমথী সাংমা’র। তারা রোজ বিকালেই বিপ্লব উদ্যান পার্কে আসেন। ত্রিমথী সাংমা সুপ্রভাত বাংলাদেশকে জানান, আমরা একা আসি না। সাথে দুই ভাগ্নি বর্ষা আর দীপ্তি। আড়াই বছর বয়সের এই শিশুগুলো সারাদিন বাসায় থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে কান্না জুড়ে দেয়। বাইরে নতুন নতুন জিনিস দেখতে তারা খুবই আগ্রহী। কিন্তু শহরে ওদের হাটানোর মতো জায়গা কই? তাই রোজ বিকালে ওদের এখানে নিয়ে আসি। এখানে ছোট রাস্তাগুলোয় দৌড়াতে খুব পছন্দ করে ওরা।

প্রতিদিন বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পার্কে হেটে বেড়ান ব্যবসায়ী শেখ হামেদ হাসান। তিনি বলেন, আগে ছোটবেলায় বিকালে ক্রিকেট খেলে সময়টা কাটাতাম। এখন তো আর সে বয়স নেই। তাই প্রতিদিন বিকাল চারটা থেকে সাতটা পর্যন্ত বিপ্লব উদ্যানে হাঁটি, বসি, চা খাই, অন্যদের সাথে আলাপ করি। বাসা মুরাদপুরে হওয়ায় হেটেই চলে আসতে পারি।

পার্কে একা বসে থাকা এক যুবকের সাথে কথা বলে জানা গেলো তার নাম ইকবাল। তিনি জানালেন, ক্লাস, পার্টটাইম জব এসব শেষ হলে কোনোদিন জিইসি মোড়ের কাছাকাছি আসলেই এখানে চলে আসি। এ জায়গাটি নিরিবিলি হওয়ায় খুব ভালো লাগে। বন্ধুদের সাথে কখনো আসিনি। আসলে হয়তো সময়টা আরো উপভোগ্য হতো।

পার্কটি সম্পর্কে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শফিউল আলম সুপ্রভাতকে বলেন, চট্টগ্রামে বিনোদন কেন্দ্রের অভাব রয়েছে। তাই বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ পার্ক খোলা রাখা হয় নগরীর মানুষদের জন্য বিকালে একটু সময় কাটানো আর হাঁটাহাঁটি করার জন্য। নগরীর মানুষের জনস্বার্থের জন্যই পার্কটি তৈরি করা হয়েছিলো। দিনের বেলায় মানুষ ব্যস্ত থাকে বলে পার্ক খোলা রাখলেও তেমন একটা আসবে না তাই শুধু বিকালেই পার্ক খোলা হয়। তবে নগরবাসী যদি চায় তাহলে মেয়রের কাছে আবেদন করলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।

সুপ্রভাত বাংলাদেশ পত্রিকায় এটা নিয়ে গতকাল ১৮ নভেম্বরই একটি ফিচার নিউজ পাবলিশ হয়েছে। আমারই লেখা। তাই কোনো রেফারেন্স টানলাম না।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

http://suprobhat.com/সবুজের-ছোঁয়া-পেতে-বিপ্লব/
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×