ভিওআইপি ব্যবসার খুটিনাটি
যেখানে শেষ করেছিলাম সেখানে থেকে শুরু করছি।
কয়েকলাখ মিনিট টার্মিনেট করা হাজার হাজার ডলার কামানো শুনতে যতটুক সহজ মনে হয় আসলে তত সোজা না ।
প্রথমেই আপনাকে যন্ত্রপাতি কেনার ঝামেলা পোহাতে হবে। বাংলাদেশের টার্মিনেশনে কুইন্টাম কোম্পানীর ইকুপমেন্ট সবচে বেশী ব্যভার করা হয়।
২০০২-২০০৩ এর দিকে কাষ্টমসের লোকজন এসব চিনতো না। আর এটা আমদানী করার উপরও বিধিনিষেধ চলে এলো। অনেক ঝামেলা পোহাতেন প্রথম প্রথম যারা আমদানি করেছেন। পরের দিকে অবশ্য বিভিন্ন বড় বড় আইএসপিতে খোলাখুলিই বিক্রি হতো ।
এরপরের ঝামেলা ছিলো ফোন লাইন যোগার করা । ভিওআইপি ব্যবসায়ীরা প্রথম প্রথম টি এন টি সংযোগ নিতেন । নামে বেনামে এই সংযোগ গুলো নেয়া হতো । পরের দিকে মোবাইল জনপ্রিয় হয়ে সাথে সাথে নানা ধরনের টেলুলার জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে । এই টেলুলারে সিম ভরে ল্যান্ড লাইনের মতোই এগুলো ব্যাভার করা যেতো।
এখন সরাসরি ডিজিটাল ই ওয়ান সংযোগ নিয়ে টার্মিনেশন করা হয় ।
এগুলো যোগার করাও ঝক্কির কাজ ।
সবচে বড় বাধাটা ছিলো ভালো টার্মিনেটর পার্টনার যোগার করা। যেহেতু সরকার তখনো এই ব্যবসাটাকে চেনেনি। সম্পূর্ন বিশ্বাসের উপর
হাজার হাজার ডলারের মিনিট বাকি দিতে হতো পার্টনার দের।
ভিওআইপি ব্যবসা করেছেন আর বৈদিশিক পার্টনার টাকা মেরে দেয় নি এমন খুব কম লোক ই আছেন।
পার্টনার যোগার হলেও ব্যান্ডউইথ পুরো মাসের জন্য কিনতে হতো।
৮ লাইনের একটা সেটাআপরে জন্য মোটামুটি ৪০০০০টাকার ব্যান্ডউইথ লাগতো। মিনিট পাওয়া না গেলে এই টাকা পুরোই জলে।
এরপরের সমস্যা ছিলো কম্পিটিশন । প্রচুর লাভ হওয়ায় অনেকেই ব্যবসাটা শুরু করেন। ফলে দেখা যায় বাকী দিয়েও ক্যারিয়ার(টেলিকম টার্ম মানে যে মিনিট/কল পাঠায়/গ্রহন করে) মন মর্জির উপর রেট নামতো। রেট উঠতো খুব কমই । সব সময়ই নিম্মমুখী ছিলো রেটের গতি।
সবশেষে ধরপাকরের ভয় তো ছিলোই ।
তারমানে দেখা যাচ্ছে চুলের আগাতে দাড়িয়ে ব্যবসা করতে হতো ভিওআইপি ব্যবসায়ীদের ।
এরপর কারেন্টের উৎপাত / ব্যান্ডউইথের উৎপাত তো ছিলোই ।
এটা এমন একটা ব্যবসা এক সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হবার কোন উপায় নেই । একবার মেশিন বন্ধ হলে তিন চার দিনের জন্য বসে থাকতে হয়।
কারন কোন ক্যারিয়ার কল ড্রপ করতে চায় না।
পরবর্তীতে সরকারের সাথে প্রেমালাপরে ব্যাপারে আলোচনা করা হবে ।