মৃত মানুষ নিয়ে কিছু লেখা আসলে সব সময় সুন্দর নাও হতে পারে। তাই আমি সাধারনত মৃতদের নিয়ে লেখা থেকে বিরত থাকি। তারপরও কিছু কিছু মৃত্যু আমাদেরকে ভাবায়, আমাদেরকে শেখায়, আমাদেরকে চক্ষুষমান করে তুলে।
আজ বর্তমান সরকারের সমাজ কল্যান মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি....রাজিউন) বহু বিতর্কিত এই মানুষটি সর্ব প্রথম বিতর্কিত হয়েছিলেন গত ৫ জানুয়ারীর অনৈতিক নির্বাচনের পর গঠিত মন্ত্রীসভার একজন সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহনের পর। তিনি সেদিন বলেছিলেন " হু ইজ বিএনপি, বিএনপি উইল বি ডিমলিশড" , বিরোধী দল দমনের প্রতি ইংগিত করে বলেছিলেন "‘শ্যুট অ্যাট সাইট (দেখামাত্র গুলি)’ এছাড়াও আরো নানা রকম বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন যেখানে সেখানে আদব কায়দা বিহীন হয়ে বিড়ি খেয়ে এবং হাস্যকর নাচ-গান করে।
যে মানুষটি গতকালও ছিলেন প্রবল ক্ষমতাশালী, শক্তিধর ও বলশালী। প্রশাসন যার কথায় উঠত বসতো, যখন যাকে খুশী ইচ্ছামতো অপমান, গালাগালী, পুলিশ দিয়ে হেনস্থা, গ্রেফতার, নির্যাতন করাতেন সেই মানুষটি আজ হঠাৎ করে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়ে নিলেন। এটা এমন এক বিদায় যে বিদায়ের মাধ্যমে হিসেব কষা যায় কি করেছেন এতো দিন। দ্বিতীয় সুযোগ মিলেনা নিজেকে শোধরানোর, কিংবা ভুল ভ্রান্তির জন্য ক্ষমা চাওয়ার।
হায় মহসিন আলী। আপনি বলেছিলেন বিএনপি উইল বি ডেমলিশড, আপনি বলেছিলেন হরতালকারীদের দেখা মাত্র গুলি করে মেরে ফেলতে, কিন্তু আপনার জিবদ্দশায় বিএনপি ডিলমিশ হয়ে যায়নি। আপনার মৃত্যর পরও মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অবিচারের বিরুদ্ধে, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে এবং একদিন বিজয়ী হবেই। আজ যেমন করে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা অন্যায্য ভ্যাট বিরোধী আন্দোলন করে বিজয়ী হয়ে অনৈতিক সরকারের গালে চপেটাঘাত করে বাড়ি ফিরছে। এমন করেই একদিন সব সংগ্রামীরা বিজয়ী হবে।
তাই জীবিত সকল রাজনীতিক ও প্রভাবশালীদের প্রতি অনুরোধ, জিবন একটাই, এই জিবনের ইতি আছে। একদিন আমরা সবাই মহসিন আলীর মতো এই মায়ার পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবো। সেদিন মানুষ হিসেব কষবে আমি কি করেছি। বিচারের সেই দাঁড়িপাল্লায় সিদ্ধান্ত হবে আমি ভালো ছিলাম, না খারাপ ছিলাম। ক্ষুদ্র এই জিবনে মানুষের অধিকার হরন করে, মানুষকে নির্যাতন করে, মানুষের সাথে অন্যায়-অবিচার করে কি লাভ বলুন? একদিন আমাদের সবাইকে মহসিন আলীর ভাগ্য বরন করতে হবেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০৯