টেক্সাস শহরের আহমেদের বয়সটা সম্ভবত আমাদের ছোটবেলার হিরো "তিন গোয়েন্দা" দের মতোই। তবে আহমেদের আবিষ্কারের নেশাটা তীব্র। সেই নেশা থেকেই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে সার্কিট-টার্কিট কিসব দিয়ে একটা আ্যালার্ম ঘড়ি তৈরি করে ফেললো। কি দুর্দান্ত একটা বিষয়। ১৪ বছরের একটা বালক মাত্র ২০ মিনিটে তার অব্যবহৃত পেন্সিল বক্সের মধ্যে একটা আ্যালার্ম ঘড়ি তৈরি করে ফেলেছে। প্রচন্ড আবেগ আর উচ্ছাসের সাথে সদ্য তৈরি করা ঘড়িটি শিক্ষকদের দেখাতে নিয়ে গেলো।
বিপত্তিটা ঘটলো এখানেই। ১৪ বছর বয়সী আহমেদের জানার কথা না যে পৃথিবীটা তাদের মতো সরল নয়। এই বয়সী একটা ছেলের জানার কথা নয় যে মুসলিম মানেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী, এমনকি বাংলাদেশের মতো মুসলিম অধ্যুষিত অনেক দেশেও। ইসলামিক টেররোরিজমের রংচটা বিজ্ঞাপনে আজ পৃথিবী শিশু, নারী, মানুষ ও সন্ত্রাসীদের আলাদা করে চেনেনা। আল কায়েদা কিংবা আইসিসদের মতো অসভ্যদের কারনে আজ সব মুসলিমকে সন্দেহের চোখে দেখা হয়। আর সেখানে যদি কোন বাক্সের ভিতরে নতুন কোন আবিষ্কার নিয়ে কোন মুসলিম চলা ফেরা করে তো অবস্থা কি হতে পারে তার সামন্যতম বোধ আমাদের থাকলেও আহমেদের বয়সী কিশোরদের থাকার কথা নয়। তাই স্বভাবতই তার শিক্ষকরা বিশ্বাস করলেন না এটা একটা ঘড়ি। তারা হয়তো বিশ্বাস করতে পারছেন না একটা মুসলিম শিশু ধ্বংস ছাড়া আর কি কিছু করতে পারে? তারা তাদের পক্ষপাতদুষ্ট চিন্তা থেকে পুলিশ সদর দপ্তরে ফোন করলেন। মুহুর্তের মধ্যেই পুলিশ চলে আসলো পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্র সন্ত্রাসী কে ধরতে। স্কুল ঘিরে ফেলে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে দাগী আসমাীদের মতো গ্রেফতার করা হলো অত্যন্ত অমানবিক ভাবে। পিতা মাতাকে জানালো না কেউ, না স্কুল কতৃপক্ষ, না পুলিশ কতৃপক্ষ। একটি রুমে বন্দি করে ইন্টারোগেট করা হলো তাকে। এই ধরনের ইন্টারোগেশন কেমন হতে পারে, কেমন প্রেশার দেয়া হয়েছে নিশ্চয় অনুধাবন করতে পারছেন। পুলিশের এই বর্বরতা দেখে বিশ্ববাসী স্তব্ধ হয়ে গেলো। আহমেদে তার গ্রেফতার ও ইন্টারোগেশনের অভিজ্ঞতা বর্ননা করেছে এই ভাবে, "It made me feel like I wasn't human. It made me feel like a criminal." আর তার পিতার অভিযোগ, His father Mohamed Elhassan Mohamed, who is originally from Sudan, said his son had been mistreated because of his name "and because of 11 September.
আজ সারা বিশ্বে টুইটার ঝড় উঠেছে এই অন্যায় আচরনের জন্য। মুসলিম বিরোধী মনোভাব এবং ঘৃনার বিরোদ্ধে। ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে। ইন্টারনেটে হাজার হাজার মানুষ শেয়ার করছে #IStandWithAhmed তারপরও কি আমরা মুসলমান এমনকি মুসলমান নামধারী ও বেশধারীরা নিরাপদ থাকতে পারবো বলে মনে করেন কি?
আহমেদের আবইষ্কার নিয়ে কিছু জনপ্রিয় পোস্ট, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে:
বারাক ওবামা'র টুইট
মার্ক জুকারবার্গ ও গুগুল এর পোস্ট
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১০