somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তারপরও ব্লগিং করবেন?

২০ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এরশাদ সাহেব জীবনে অনেক পীরের মুরিদ হয়েছেন। অনেক হুজুরের দোয়া নিয়েছেন মাথা কাঁত করে। কপ্টার শফির দোয়া নেয়া তাই এরশাদ সাহেবের জন্য কোন নিউজ না। আলেম-ওলামাদের ১৩ দফার প্রতি তার সমর্থনও তার চরিত্রর সঙ্গে খাপে খাপ মিলে যায়। কাজেই এটা হওয়াই খুব স্বাভাবিক ছিল। এরকম চরিত্রের লোকরাই ১৩ দফার সবচেয়ে বড় সমর্থক হয়। কপ্টার শফি এরশাদের জন্য লম্বা দোয়া করেছেন। ভবিষ্যতে তিনি মদিনা সনদের স্বপ্ন দেখানোঅলাদের জন্যও লম্বা দোয়া করবেন। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। ইসলামও রাজনীতির বাইরে কিছু না। ইসলামেও তাই শেষ কথা বলে কিছু নেই।

কপ্টার শফির দোয়া নিয়ে এরশাদ এবার ধারনা করি পার্লামেন্টে গিয়ে অপজিশনে বসবে। হাসিনা মদিনা সনদ করবে তাহলে কার সঙ্গে? মদিনার ইহুদী-খ্রিস্টানদের সঙ্গে মুসলমানদের নবী মুহাম্মদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। হাসিনাও শফি বাবুনাগনরীদের সঙ্গে চুক্তি করবে ১৩ দফা অনুসরণ করার জন্য। এরকম মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে। এরশাদের শফির দোয়া নিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা আর হেফাজতের হঠাৎ ইস্তেকাফের অংক মিলে না যে। বাকী থাকে বিএনপি জামাত। বিএনপি আপাতত সেফহোমে। ছেলের রায়ে খুশি হয়ে নির্বাচনে যেতেও পারে খালেদা। সেক্ষেত্রে গেইম প্লান কিছুটা চেঞ্জ হতে পারে। বিএনপি প্রধান বিরোধীদল, এরশাদ আবার মহাজোটে। বোতলের লেবেল শুধু পাল্টে যাবে ভেতরের মাল একই থাকবে। আর জামাত সম্ভবত বুড়ো রাজাকার আল বদরগুলোর মায়া কাটাতে এখন প্রস্তুত। আপাতত নিষিদ্ধ-টিসিদ্ধর হাত থেকে বাঁচতে পারলে তারা আর কিছু চায় না। আমেরিকা এসে সেই অভয় দিয়ে গেছে কিনা শীঘ্রই জানা যাবে। তবে সবচেয়ে ভাল অবস্থানে থাকবে হেফাজত। দেশ চালাতে হলে ১৩ দফাকে সবার মাথায় রাখতেই হবে। ১৩ দফার সবগুলো বাস্তবায়ন করতে না পরলেও দফাগুলো কিছু কিছু বাস্তবায়ন করে মোল্লাদের খুশি রাখতে হবে। বাংলাদেশে মোল্লারা এক ফ্যাক্ট। অদূর ভবিষ্যতে মোল্লারা রাষ্ট্র ও প্রসাশনে, সেনাবাহিনীতে সর্বচ্চ প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হবে। তখন “সর্বচ্চ শরীয়া পরিষদ” টাইপের কিছু খাড়া করতে পারলে তারপর বাংলাদেশের গায়ের উপর বড় করে সেঁটে দেন “গণপ্রজাতন্ত্র” “ধর্মনিরপেক্ষতা” “সমাজতন্ত্র”- মোল্লাদের তাতে কিচ্ছু যায় আসে না।

আওয়ামী লীগ এখন সবচাইতে ধর্মপ্রাণ দল। ইসলামের খেদমতে তারা যে অতীতে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে সেই ফিরিস্তি এখন দিতে শুরু করেছে। সবচেয়ে বেশি মসজিদ মাদ্রাসা তারা করেছে। আলেম ওলামাদের সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। (আফসুস তবু হুজুররা তাদের চিনলো না!)

বিএনপির-জামাত-হেফাজতময় বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে “আওয়ামী মুসলিম লীগেই” ফের ফিরতে হবে। পাবলিক ইসলাম চায় তারা কি করবে? পাবলিক যা খাবে তাদের তাই খাওয়াতে হবে। তাহলে কি দাঁড়ালো? “আমরা সবাই ভাই ভাই, নাস্তিক ব্লগারের ফাঁসি চাই!” (শ্লোগানের জন্য ব্লগার রানার কাছে কৃতজ্ঞতা)।

শাহবাগ এখন ৭৩ ফিকরায় বিভক্ত। সবাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় তবে নিজেদের মত করে। আছে পরস্পর ছাগু ট্যাগ মারার আত্মঘাতি খেলা। এন্টি শাহবাগী এই সুযোগে এখন ঝাঁকে ভিড়ে গিয়ে কপ্টার শফির ১৩ দফার একটি (নাস্তিক ব্লগারের ফাঁসি চাই) জোড়েসোড়ে উচ্চারিত করছে। সব কিছু মিলিয়ে কোথাকার জল কোথায় গড়াচ্ছে?

“ছাগু” এক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ স্রেফ! আর কিছু না। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। কাজেই ছাগুদের ব্যাপারেও শেষ কথা বলে কিছু নেই। যারা ছাগুদের “আঁতুরঘর” চিহ্নিত করেছিল সেই “নাস্তিক ব্লগার” এখন রাজনীতির হাওয়া বদলে সবার কমন শত্রু। তারা ছাগু জন্মের “আঁতুরঘর” নিয়ে কাজ করেছে, তারা বার বার বলেছে ছাগু উৎপাদন কারখানায় নজর না দিলে ছাগু উৎপাদন অব্যাহত থাকবেই। এটাই কাল হয়েছে। কারণ ছাগুদের সঙ্গে বিরোধ রাজনৈতিক কিন্তু “ ছাগু আঁতুরঘরে” ঢিল পড়লে তাদেরও অনুভূতিতে আঘাত লাগে। আর এখন এই হাওয়া বদলের দিনে তো সব ভাই ভাই, কাজেই “নাস্তিক ব্লগারের” ফাঁসি চাইতে দ্বিধা নেই। তাই নির্বাচন পরবর্তী “নাস্তিক ব্লগাররা” ব্লগিং করবেন কি করবেন না আগে থেকে ভেবে রাখুন...।

নিজের কথা বলতে পারি, আমি আশাহত হইনি। এসব মাথায় রেখেই লিখেছি। মধুচন্দ্রিমা করতে তো আর ব্লগে আসিনি। কোন দলের হয়ে দালালীও করতে আসিনি। অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ মানস তৈরিতে যদি একটুখানি অবদান রাখতে পারি তো শত “ট্যাগ” গায়ে জড়াতেও রাজি আছি।
১৫টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×