তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সহায়তায় আন্তর্জাতিক এনজিও, ওয়ার্লডফিস এর অর্থায়নে কৃষি পুষ্টি এক্সটেনশন প্রকল্প (এএনএপি)বরিশাল অঞ্চলে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে সফল হন।
উদ্ভাবিত ইফকাস পদ্ধতি সম্পর্কে ড. হক বলেন, বরিশাল অঞ্চলের পুকুর পাড়ে প্রচুর গাছপালা থাকে। এ সমস্ত গাছ পুকুরের পানিতে ছায়া তৈরি করে সূর্যালোক অনুপ্রবেশে বাধা প্রদান করে। এতে পুকুরে মাছের উৎপাদন ও পুকুর পাড়ে সবজি উৎপাদন নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে পুকুরে সূর্যালোক পড়ে সে অঞ্চলে সবজি উৎপাদনের একটি সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, পুকুর পাড়ের ছায়াময় প্রকৃতি এবং জলে সূর্যালোক এক্সপোজার এলাকা বিবেচনা করে, একটি নতুন বিশেষ জল-
ভিত্তিক এই গবেষণাটি পরিচালনা করা করি। সেখানে খাঁচায় ও পানিতে মাছের জন্য যে খাবার দেয়া হয় তাতে নাইট্রোজেনাস ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ তৈরি হয়, যা মাছের বৃদ্ধির জন্য ক্ষতিকারক কিন্তু উদ্ভিদের জন্য চমৎকার সার। তিনি বলেন, ইফকাস কাঠামোতে সবজির মাদায় ব্যবহৃত পুকুরের কাদায় যে জৈব সার থাকে তা উদ্ভিদের জন্য একটি উৎকৃষ্ট সার।
ইফকাস পদ্ধতি :
একটি ৯ বর্গমিটার আয়তনের লোহার বার দিয়ে তৈরি ফ্রেমকে ভাসিয়ে রাখার জন্য কাঠামোটির চার কোণে ফ্লোট বসানোর জন্য
চারটি খাঁজ রাখা হয়। স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত প্লাস্টিকের কন্টেইনার দিয়ে তৈরি ফ্লোট ইফকাসকে ভাসিয়ে রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়। লোহার ফ্রেমের অনুপ্রস্থ বরাবর দুটি ফ্লোটের মাঝে সবজি রোপনের জন্য একটি করে মাদা তৈরি করা হয়। সেখানে পুকুরের
শুকনো কাদা, গোবর ও অন্যান্য জৈব সার মিশিয়ে দেয়া হয়। মাদাটির নিম্নাংশ পুকরের পানিতে লেগে থাকার কারণে পানি থেকে উদ্ভিদ সার বস্তু সহজে গ্রহণ করতে পারে, এতে করে উদ্ভিদের জন্য কোন সেচের প্রয়োজন হয় না। কাঠামোর উপরিতলের গঠন বরাবর সবজি গাছ বেয়ে চলার জন্য বাঁশের
ফালি দিয়ে একটি মাচা তৈরি করা হয়।
চাষীদের পছন্দ অনুযায়ী লতানো সবজি, পুকুরের পানি থেকে পুষ্টি শোষণ করতে পারবে এরকম জাতের সবজি মাদায় রোপন করা যায়। জালের খাচার ভেতর মনো-সেক্স তিলাপিয়ার পোনা ১০০ ঘনমিটার হারে মজুদ করে ভাসমান খাদ্য প্রয়োগ করে ইফকাসের বাইরে পুকুরের অবশিষ্ট অংশে সাধারণ কার্প চাষ কৌশল অনুযায়ী রুই-কাতলা চাষের জন্য ব্যবহৃত হয়।
গবেষণার প্রথম চক্রের (জুলাই-অক্টোবর, ২০১৩) শুরুতে ৯ টি পরিবারের সঙ্গে গবেষণায় নারীদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক ছিল।
ড. হক বলেন, ইতিমধ্যেই কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এ প্রযুক্তিটি সম্প্রসারণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। শুধু তাই নয়, প্রযুক্তিটি এখন নেপালের দুটি জেলাতে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সৌজন্যেঃরাইজিংবিড

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




