সুরা ইমরানের ১৮৫নং আয়াতে বলা আছে 'কুল্লু নাফসিন'। নাফসিন শব্দের অর্থ হলো, প্রাণ, রক্ত, ব্যক্তিত্ব, মানুষ, মন এবং মাওত শব্দের অর্থ হলো- মৃত্যু, মরা, শ্বাসরোধ ও ধ্বংস। এখন প্রশ্ন হলো, কোরানের ঐ আয়াতে আল্লাহ নফস শব্দটি দ্বারা আল্লাহহ কোন অর্থকে বোঝাতে চেয়েছেন। এখন যদি বলি মন বা মনের অভ্যন্তরে মানুষের স-প্রবৃত্তিগুলোকে জাগ্রত করে সকল কু প্রবৃত্তিগুলোকে ধ্বংস বা তাদের মৃত্যু ঘটিয়ে মানুষ কলুষ মুক্ত হয়ে পবিত্র হয়ে উঠবে, তাহলে ভাবনাটা অবান্তর বলে মনে হয় না। কারণ সুরা রোমের ১১নং আয়াতে আল্লাহ বলছেন, "আল্লাহই প্রথমবার জন্মদান করেছেন, পরে দ্বিতীয়বারও তিনি জন্মদান করাবেন, অতঃপর তাঁর নিকটে ফিরে যেতে হবে।" কত সুন্দরভাবে ছন্দ যেন মিলে যাচ্ছে। সু-প্রবৃত্তিকে জাগ্রত করে কু-প্রবৃত্তিকে ধ্বংস করে কলুষ মুক্ত হয়ে পবিত্র হওয়া, অর্থাৎ পবিত্র হলেই সে আল্লাহর নিকটস্থ হতে পারবে। তাহলে প্রাণের মৃত্যুটা কোথায় গেলো?! আসলে কোরানে মৃত্যু জনিত বিষয়ে যত জায়গায় বলা আছে তা সম্পূর্ণরূপে রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
মৃত্যু যেহেতু একটি অমিমাংসীত বিষয়, সেহেতু মৃত্যুর ব্যপারে সুনিশ্চত সিদ্ধান্ত কোনভাবেই আসা সম্ভব নয়। যতক্ষন না মানুষ মৃত্যুর কারণ জানতে পারছে ততক্ষন তা অমিমাংসীত সিদ্ধান্ত হিসাবেই গণ্য হবে। যদি মানুষ প্রকৃত অর্থে মৃত্যুকে রোধ করে না পারে তখনই কেবল বলা যেতে পাতে, মৃত্যু অবধারিত। কারণ এজগতে অসংখ্য সমস্যা আছে, সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে তত্ত্ব গঠন করা যেতে পারে, তত্ত্বে প্রাপ্ত উপাদান দ্বারা সমস্যা সমাধানের উকরণ এজগতে লাভ করাও সম্ভব, প্রাপ্ত উপকরণ প্রয়োগে সমস্যার সমাধানও সুনিশ্চত করা সম্ভব। অতএব আল্লাহ যদি মানবের সেবার তরে এই সৃষ্টি জগত সৃষ্টি করে থাকেন, তাহলে নিশ্চয় মানবের সবচেয়ে কঠিন সমস্যা সমাধানের সকল উপাদান এই সৃষ্টি জগতে নিশ্চয় রয়েছে যা দ্বারা একদিন মানুষ ঠিকই তাদের মৃত্যুকে রোধ করতে পারবে। নচেৎ আল্লাহর প্রতিশ্রুতি যেমন তাঁর সকল মাখলুকাত মানবের জন্য সৃষ্টি, কথাটা ভ্রান্ত বলে পরিলক্ষিত হবে। আমরাও চাই না আল্লাহ মিথ্যাবাদী হোক। তাই মানুষ মৃত্যুকে জয় করে অবশ্যই মৃত্যুঞ্জয়ী হয়ে প্রমান করবে, আল্লাহ সর্বত সতত।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


