কনস্ট্রাকশন সাইটে বড় একটি বিল্ডিংয়ের সামনে কাজ করছে আব্দুল্লাহ। বিচিত্র ধরনের শব্দের উত্স তার চারদিকে।
বিল্ডিংয়ের পাঁচ তলায় আব্দুল্লাহর সুপারভাইজার দাঁড়ানো। কিছুক্ষণ নিবিষ্ট মনে আব্দুল্লাহর কাজ দেখলেন তিনি। বেশ পরিশ্রম করছে আব্দুল্লাহ।
কি মনে করে পকেট থেকে এক টাকার একটি কয়েন বের করলেন সুপারভাইজার ভদ্রলোক, পরক্ষনেই ওপর থেকে ছুঁড়ে মারলেন কয়েনটি আব্দুল্লাহর দিকে।
নির্ভুল নিশানা, আব্দুল্লাহর ঠিক সামনে পড়ল কয়েন।আশেপাশে দু'/তিনবার তাকালো সে। কয়েনটি কোথা থেকে এলো-- ঠিক বুঝে উঠতে পারল না। কিছুটা অবাক হলেও কয়েনটি কুড়িয়ে নিয়ে পকেটে রাখল আব্দুল্লাহ।
কিছুক্ষণ পরে একটু দুই টাকার কয়েন পেল আব্দুল্লাহ। আরো কিছুক্ষণ পরে পাঁচ টাকার কয়েন। সবগুলো কয়েন আব্দুল্লাহর পকেটে আশ্রয় পেল।
এদিকে সুপারভাইজার আশা করছিলেন, কয়েন পেয়ে আব্দুল্লাহ একটু খুঁজে ঠিক ঠিক বের করতে পারবে কে ওপর থেকে কয়েন ফেলছিলেন। ওপরের দিকে তাকালেই আব্দুল্লাহর সাথে জরুরি কিছু কথা বলতেন তিনি।
এক টাকার, দুই টাকার এবং পাঁচ টাকার কয়েন দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে না পেরে সুপারভাইজার ভদ্রলোক একটি ছোট ইটের টুকরো খুঁজে নিলেন। এবার ওপর থেকে কয়েনের বদলে ছোট টুকরোটি মারলেন তিনি। ইটের টুকরো গিয়ে পড়ল ঠিক আব্দুল্লাহর মাথায়।
আব্দুল্লাহ এবার আশেপাশের সাথে ওপরের দিকেও তাকালো। তাকিয়ে দেখল তার সুপারভাইজার দাঁড়িয়ে আছেন।
"সুপারভাইজার সাহেব বোধহয় কিছু বলতে চাইছেন আমাকে"-- আব্দুল্লাহ ভাবলো। আব্দুল্লাহ সুপারভাইজার সাহেবের সাথে কথা বলা শুরু করলো।
উপরের গল্পটির সাথে আমাদের জীবনের ভয়ংকর মিল কি খুঁজে পেয়েছেন?
সৃষ্টিকর্তা প্রতিনিয়ত আমাদের বিভিন্ন নেয়ামত দিয়েই যাচ্ছেন, দিয়েই যাচ্ছেন। আমরা সেগুলো ঠিক ঠিক ভোগ করছি। কিন্তু একটু ভেবে কিংবা খুঁজে এই নেয়ামত্গুলোর উত্স আমরা খুঁজে দেখবার প্রয়োজন বোধ করিনা, নেয়ামতদাতার শোকরও করা হয় না। গল্পের আব্দুল্লাহর মতো আমরা ভাবি-- এই নেয়ামত বোধহয় আমার প্রাপ্যই ছিল।
তারপর হঠাত করেই ছোট একটি ইটের টুকরো এসে আঘাত করে আমাদের মাথায়। আমরা এই ইটের টুকরোকে তখন "বিপদ" নাম দেই। আমরা দ্রুত "বিপদ" নামের এই ইটের টুকরো প্রেরণকারী খুঁজতে থাকি। একসময় বুঝতে পারি, পরম করুণাময়ই "বিপদ" দিয়েছেন। তখন সব ভুলে গিয়ে, যে কোন উপায়ে তাঁর সাথে যোগাযোগের দিকে মনে দেই; তাঁকে ডাকতে থাকি!
আফসোস! আমরা যদি প্রথম থেকেই জানতাম কে এই নেয়ামতদাতা!
কিছুটা হলেও কৃতজ্ঞতা জানাতে পারতাম তাঁকে।
পাদটিকা:
এই আর্টিকেলটি আজকে একটি ই-মেইলে পেয়েছিলাম পরে খুব ভালো লাগলো। ইংরেজিতে ছিল, বাংলায় রূপান্তর করে শেয়ার করার ইচ্ছে করলো খুব।
আমার "ভয়ংকর টাইপের" অনুবাদের জন্য অতিশয় লজ্জিত।
#JavedKaisar