আগেই বলে নেই, আমি মনে করি এমন কিছু কিছু মানুষ থাকে যাদের বন্ধু ভাগ্য বলতে কিছুই থাকেনা, আর আমি সেই হতভাগাদের একজন। প্রতি বছর বন্ধু দিবস আসে যায়। কোনো কোনো বছর কোনোকোনো বন্ধুর আমাকে মনে পড়লে বন্ধু দিবসে ফোন দেয়। আমি অবশ্য এই দিবসটি তেমন পালন করি না। আসলে আমার মনে টানে না। এ জীবনে উল্লেখ যোগ্য বন্ধু বলতে আমার স্ত্রী ছাড়া তেমন কেউ নেই। খেলার সাথী, স্কুল, কলেজ কোনো লেভেলেই তেমন কারো সাথে বন্ধুত্ব হয়নি। অনেকটা হতে দেইনি। কারন ছোটোবেলা থেকে অনেক হোচট খেয়েছি এই বিষয়ে।
শিশু বয়সে খেলতে খেলতে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে, সেরকম আমারও ছিলো। সমবয়সী না হলেও দল বেঁধে মার্বেল, ক্রিকেট, ব্যাট মিন্টন সহ বিভিন্ন খেলা খেলতাম। ছোটো বেলা থেকেই খেলাধুলাতে আমি খুব একটা বেশি ভালো না। দেখা যোতো মার্বেল খেলতে গেলে ঠকিয়ে আমার কাছ থেকে মার্বেল নিয়ে যেতো, আমি তো তখনও বুঝতাম না ঠকানো জিনিসটা কি, কিন্তু এদিন ঠিকই বুঝে ফেলেছি। দেখা যেতো ব্যাটমিন্টন খেলতে গেলে আমাকে মাঠের বাইরে বসিয়ে রেখে আমার ব্যাট দিয়ে খেলতো। একদিন আমার ব্যাট একজন বড় ভাই, যে বন্ধু্ও ছিলো সে ভেঙ্গে ফেললো। বকাতো বাসায় শোনা লাগতো আমার। তাই দেখাগেলো খেলাই বাদ দিয়ে দিলাম। সবচেয়ে ভালোছিলো একা একা ঘুড়ি উড়ানো।
যখন প্রাইমারী স্কুলে পড়ি তখন এক বন্ধু ছিলো নাম মিহির, খুবই স্বচ্ছল পরিবারের সন্তান। সে একদিন আমাদের বাস আসলো, তারপর তার বাসায় গিয়ে বললো যে সে আর আমাদের বাসায় আসবে না। কারন হলো আমাদের বাসায় তখন গরু পালন করা হতো, সে নাকি গন্ধ পায়। আমি ঠিক করলাম যে আমিও তার বাসায় যাবো না। এরকম বন্ধু আমার দরকার নেই। আসলে মিহিরের চোখ বরাবরই উপরের দিকে সে সব সময় স্বচ্ছল পরিবারের ছেলে-মেয়েদের বন্ধু বানাতো। ওই টুকু বয়সে সে গরীব বড়লোক বুঝতো যা আমার মাথায় ঢুকতে আরও বেশ কিছু বছর লেগে গিয়েছিলো। কিন্তু কেনো সে আমার সাথে বন্ধুত্ব করতে চাইতো বুঝতাম না, হয়তো পড়ালেখায় আমি তার থেকে এগিয়ে ছিলাম বলে।
( হয়ত চলবে.... )
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১০ সকাল ১০:১৯