ডাঃ ইবরার, মেডিকেল কলেজ হসপিটালের তরুন ডাক্তার ।। পোস্ট মর্টেমে ইতোমধ্যে বেশ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন ।। গতকাল রাতে একজন বিষ খাওয়া রোগী এসেছিলো, নাইট ডিউটির ডাক্তার ওয়াশ করার আগেই বিষ তার কাজ সেরে ফেলেছে । রাতেই ৩ টার দিকে মারা যায় রোগী ।
ইবরার ডিউটির পরও হাসপাতালেই ছিলো রাত ৮ টা পর্যন্ত । ওনার বোন এর সাথে । বড় বোন ইশা অসুস্থ, ভর্তি এই হাসপাতালেই ৩ তলায় ডাক্তারদের জন্য সংরক্ষিত ওয়ার্ডে । একটা ছেলে আছে , রাফিন, ৩ বছর বয়স । বায়নার শেষ নেই, লেগে লেগে আসা কথাগুলো শুনতেই ভালো লাগে, প্রশ্নেরও শেষ নেই , ইবরার ও খুব আদর করে । রোগী নেয়ার ট্রলি দেখে বায়না এগুলো চড়াতে হবে । রাতে সারা হাসপাতাল এই ট্রলি তে চড়িয়ে তবেই বাসায় ফিরতে পেরেছে সে ।।
তার যাওয়ার কিছু পরেই নাকি এই বিষ খাওয়া রোগী এসেছিলো , ডাঃ রফিক ওয়াশ করেছিলেন ।। রফিক সাহেবে ইবরার এর সরাসরি শিক্ষক , সকালে ডাঃ রফিক, ইবরার কে পেয়ে লাশ টা বুঝিয়ে দিয়ে চলে যান । ইবরার প্রতিদিন এসে আগে বোনের সাথে দেখা করে, কিন্তু আজ আর হলো না, তবুও, ভাবলো , মর্গে লাশ টা রেখে তারপর ইশার সাথে একটু দেখা করেই কাজে হাত দিবে ।।
মর্গে যাওয়ার পথে আবাসিক মেডিকেল অফিসার শাহিনের কাছ থেকে চাবি নিয়ে আসার জন্য লাশ টা রুমের সামনে রেখে ঢুকে ।।
চাবি নিয়ে মর্গে ঢুকে যেই না বাতি জ্বালাতে যাবে , তখনই দেখে, সাদা কাফনের নিছে কি যেনো নড়ছে, আর লাশের পেটের দিকে কাপড়ের উপর থেকে অস্বাভাবিক প্রশস্ত লাগছে ,।।
ইবরার খুব সাহসী ছেলে ।।
চিকন ঘাম দিতে শুরু করেছে ডাক্তারের , নড়াচড়া করছে কি যেনো থেমে থেমে , আবার খচখচ শব্দ ও শোনা যাচ্ছে, কিছুটা হাড্ডী চাবানোর মতো ...।হার্ট বিট বেড়ে গেছে প্রচুর, প্রচন্ড ভয় হচ্ছে তার
পোস্ট মর্টমের অস্বাভাবিক ঘটনা শুনেছে সে অনেক। কিন্তু এমন কিছু সে শোনেনি...
হঠাত করেই হিহিহি শব্দ শুনলো সে,
এইবার আর নিজে কে ধরে রাখতে পারলো না সে, ভয়ে দৌড় দিতে যাবে সে, দরজায় ধাক্কা খেয়েই পড়ে গেলো সে, দেখতে পেলো একটা হাত বের হচ্ছে সাদা কাফনের নিচে থেকে ।। অজ্ঞান হয়ে গেলো ইবরার ।।
পরে জ্ঞ্যান ফেরার পর বোন ইশার পাশের বেডেই নিজেকে দেখতে পেলো ইবরার , জ্ঞান ফিরেই জানতে চাইলো কি ঘটেছিলো ওখানে , যা শুনলো নার্স ফাতেমা আর বোন ইশার কাছ থেকে, শুনে আবারও অজ্ঞ্যান হয়ে গেলো সে ।
ওইদিন মর্গের চাবি নিতে ঢুকার সময়ই রাফিন তার মামাকে দেখে ট্রলী ঠেলে নিচ্ছে, রাফিন নাস্তা আনার জন্য ওর বাবার সাথে বের হয়েছিলো। "আব্বু,মামা ওওওকানে", বলেই বাবার হাত ছেড়েই দোউড় দেয় ইবরার এর কাছে । ওওর বাবা ও দেখেছে ইবরার কে, তাই আর বাঁধা দেয় নি ছেলে কে। রাফিন যেয়ে সোজা ওইট্রলি তে উঠে লাশের পাশে সুয়ে যায় , কাফনের নিচে, হাতে ছিলো চিপ্পসের প্যাকেট ।। ফোনে কথা বলতে বলতে মর্গে ঢোকায় লাশের অস্বাভাবিকতা খেয়াল করেনি ইবরার ।। এর মধ্যে ইবরার যখন দরজায় ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায়, তখন রাফিনের চিপসও পড়ে যায় , চিপসের জন্যই হাত বাড়িয়েছিলো রাফিন, , পড়ে রাফিন তার মামার চিৎকার শুনে কান্না করতে থাকে, আর এই কান্নার শব্দ শুনেই দারোয়ান মফিজ মর্গে যেয়ে ইবরারকে অজ্ঞান অবস্থায় পায় ।। এই দুষ্ট রাফিনকে তারপর থেকে চোখে চোখে রাখা হয় ।।