ম্যানহাটনের যে বারান্দায় সুপ্তি, দু হাত দিয়ে চোয়ালে ভর দিয়ে একেবারে ফুটফুটে বাবু হয়ে যেতো,,,,
সেই বারান্দায় আজ শুনশান নিরবতা। এ বারান্দায় কেউ আর পায়চারি ও করে না, বই হাতে নিয়ে হেটে হেটে সেমিস্টার পরীক্ষার আগের রাতে চা হাতে নিয়ে পড়াশোনা ও করে না, বাবুও হতে আসে না কেউ।।
....
কিন্তু পাশের বাসার সুপ্ত ঠিকই এখনো তার জানাললার পর্দার ফাঁকে দিয়ে তাকিয়ে থাকে,,। বাই দা ওয়ে, সুপ্তর আসল নাম কিন্তু সুপ্ত না, ওর আসল নাম সিমান্ত। সুপ্তির সাথে মিলিয়ে নিজের নাম রেখেছে সুপ্ত। আমরা বন্ধুরা তাকে বুঝিয়েছি কতবার, একই রকম নাম ভাই বোনের হয়, বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড এর হয় না।। আমরা তাকে সুপ্তির ভাই বলেও ক্ষেপাতাম।। ...
...
সুপ্তিরা বাড়ি বিক্রি করে চলে গেছে কয়েক মাস আগে,, সুপ্ত এখনো সুপ্তির জন্য পাগলামি করে উঠে হুটহাট।
সুপ্তিদের বাড়িটা ভেংগে ফেলা হবে, নতুন এপার্টমেন্ট হবে।। সুপ্ত ওইদিন ডেভলপার কোম্পানির ম্যানেজারের সাথে দেখা করে এসেছে। ওই বাড়িটার বারান্দাটা কিনতে চায় সে, যে স্মৃতি তার মনের যাদুঘরে বন্দী, সেই স্মৃতি সে বাস্তবেও রেখে দিতে চায়।
কোম্পানির ম্যানেজার না কি তাকে পাগল বলে তাড়িয়ে দিয়েছে।।
.....
ও বলতে ভুলে গেছি, সুপ্তির পুরো পরিবার চলে গেলেও সুপ্তি কিন্তু এখনো রয়ে গেছে...
...
বারান্দাটার নিচেই ছোট্ট করে একটা জায়গায় সে থাকে, মাঝেমাঝে নাকি সুপ্তর সাথেও কথা হয় আজকাল।। সুপ্ত আমাদেরকে এসে বলেও আবার সব।।
...
...
কিন্তু আমরা তো জানি এ সম্ভব নয়, গত জুনে অজানা এক জ্বরে সুপ্তি দুইদিন রক্ত বমি করে মারা যায়, বারান্দার নিচেই ষোড়শী সুপ্তির সমাধি।। ভালো আছে সে, সুপ্তের আদরে।।