আমি তোমাকে মানুষের নামান্তরে কোন কদর্য প্রানীরুপে চাইনি-
চেয়েছি ভোরের শিশিরভেজা সাদা-কমলার বেশে সজ্জিত সরল-স্নিগ্ধ শিউলি ফুলের মত,
রাতের অযাচিত কর্মব্যস্ততার ক্লান্তির ফাঁকে-ফোকরে চেয়েছি কাঁধে হাত রেখে বলবে, “ ঘুমাবে না? ”
নয়তো উন্মাতাল বাতাসে উড়ন্ত চুলগুলো সযত্নে বেনী বেঁধে দেবে নিজের হাতে।
আমি তোমাকে মানুষের নামান্তরে কোন নৃশংস প্রানীরুপে চাইনি-
চেয়েছি মাঝেমধ্যে শার্টের বুকপকেটে পুরে একমুঠো বেলী ফুল আনবে আমার জন্য,
সকালের মিষ্টি আলোয় ঘুম ঘুম চোখে এক কাপ চা হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলবে, “ দেখো তো মিষ্টি হয়েছে কিনা? ”
নয়তো হঠাৎ পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আয়নায় মুখ দেখবে আমাদের দুজনের।
আমি তোমাকে মানুষের নামান্তরে কোন স্বার্থপর প্রানীরুপে চাইনি-
চেয়েছি আষাঢ় মাসে বৃষ্টি-বাদলের দিনে ব্যাঙ্গের ডাক আর সোঁদা মাটির আপন ঘ্রানের মত,
মাথায় লাল টুকটুকে নতুন ওড়না জড়িয়ে দিয়ে বলবে, “ আমার পাগলীটাকে তো পরীর মত দেখাচ্ছে ! ”
নয়তো ঘুমন্ত এই আমিটার কপালে পরম স্নেহে ঠোঁট বুলিয়ে দেবে আলতো করে।
আমি তোমাকে মানুষের নামান্তরে কোন ঘৃণ্য প্রানীরুপে চাইনি,
চেয়েছি যানবাহনে সয়লাব রাস্তায় আমার আঙ্গুল ধরে রাখবে শক্ত করে, যেন হারিয়ে না যাই,
পরম মমতা দিয়ে বানানো উলের সোয়েটারটা দেখে অবাক হয়ে বলবে, “এটা সত্যি আমার জন্য বানিয়েছো?”
নয়তো জ্বরতপ্ত চুলের ফাঁকে পানি ঢালবে অবিরাম আর হাত বুলিয়ে দেবে সারারাত।
সত্যিই, আমি তোমাকে মানুষের নামান্তরে কোন অমানুষরুপে চাইনি...