somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈদ মোবারক ও কিছু অপ্রিয় কথা

১০ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চাঁদের গাড়ির অতিক্রম হওয়া দেখতে যে সময়টু মিলে সেটুকুই প্রবাসীর ঈদ।
দেখুন, ফোকাস মাইরা লাভ নাই। এই যে আমরা কিউট বা লাভলী মার্কা ছবি ব্লগ ও ফেবুতে আপলোডাই, হেইডা সবার সাথে তাল দেওয়া বা নিজেদের জাহির করার একটা ভ্রম মাত্র। যারা এটা ধরতে পারেন না, তারা সত্যিকারের ভ্রমেই থাইকা যান। আর যারা ধরতে পারেন, তারা অন্যদের সমর্থন আদায়ের মাধ্যমে শান্তনা খোঁজেন। কিন্তু বাস্তবতা উল্টো ফ্রেমে না দেখালেও জীবনে ঠিকই থেকে যায়।
এসব শুনলেই আপনারা শান্তনা মারাইবেন। মজার বিষয় হচ্ছে, প্রবাসীরা নিজেরাই নিজেদেরকে শান্তনা দিতে পারে, আপনাদের শান্তনা পাওয়ার চাইতে ঢের। বিশ্বাস না হইলে চেষ্টাইতে পারেন। সুতরাং আপনারা শান্তনা না দিলে, শান্তনা তৈরির কারখানাটা সচল থাকবে একটু বেশি।

আমি ব্যক্তিগত ভাবে প্রবাসীদেরকে দেওয়া অনেক লক্ববগুলোর ব্যবহার দেখে রেগে যাই। এই যেমন রেমিট্যান্স যোদ্ধা। এটার সত্য মিথ্যা আমার রেগে যাওয়া বা আপনাদের প্রশংসার বুলি হওয়ার উপর নির্ধারণ করে না। যেমন সত্য মিথ্যার উর্ধ্বে মুক্তিযোদ্ধাদের স্থান। মুক্তিযোদ্ধাদের নাম করে যেমন দেশটারে বিরান করে খেয়ে আসছে বাংলাদেশের ধারাবাহিক সরকারগুলো, তেমনি কাম কাজ না করে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের প্রশংসা করে আপনারা খেয়ে যাচ্ছেন রাষ্ট্রীয় সময়।

দেখুন, আকামে ব্যস্ত থাকার ফাঁকে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স যোদ্ধা বলার মাধ্যমে আপনারা সেই কাজটাই করছেন, যে রমজানে একটি রোজাও না রাখার পর ঈদের জামাতে প্রথম সাড়িতে ইমামের সাথে তাকবির দিয়ে আদায় করছে রমজানের হক! আপনি এমন ব্যক্তির সাথে কোলাকুলি করে কখনো প্রশান্তি ফিল করতে পারবেন না। বিপরীতে আপনি নিশ্চয়ই সেই ব্যক্তির সাথে কোলাকুলি করতে প্রশান্তি ফিল করবেন, যে পুরো রমজান কাটিয়েছেন রমজানের পূর্ণ হক আদায়ের মাধ্যমে।

এখন আবার আপনি বইলেন না, ভাই দেশে তো কাজ নাই। একটা সত্য ঘটনা বলি, ক'মাস পূর্বে কোম্পানিতে নতুন এক পাকিস্তানি জয়েন করেছিল। তার সাথে কথা বলে জানতে পারলাম, সে অনেক মাস অপেক্ষার পর অনেক কষ্টে এই কাজ ম্যানেজ করেছে। সে কিছুদিন কাজ কন্টিনিউ করার পর আমাকে বলল, ভাই আমি এই কাজ আর করবো না। আমি তার সমস্যা জানতে চাইলে বললো, টাকা কম। আমি পরামর্শ দিতে গিয়ে বললাম, এখানে কাজ করার পাশাপাশি অন্য কাজের ব্যবস্থা করে তারপর ছেড়ে দিও। সে প্রতিউত্তরে কী বলেছিল জানেন? সে বলেছিল, তালাশ সে আল্লাহ মিল যাতা, এ কাম তো হাত-কা ময়লা হায়। আপনে দু'আ করবা।
আমাকে তার বাঙালি হওয়ার স্বাদ অপূর্ণ রেখেই বিদায় নিতে হয়েছিল সেদিন। তার কিছুদিন পর সে জানিয়েছিল, সে খুব ভালো টাকার বিনিময়ে নিয়মিত কাজ করছে। অথচ এই আমাদের শহরেই অনেক বাঙালি ভাইকে কাজ খোঁজার বাহানা করতে দেখা যায়। ঈদের দিনে কোলাকুলির ফাঁকেও চাকরি খোঁজেন। এটা খারাপ কিছু না। ভালো। তবে এর চেয়ে ভালো নিজেকে যোগ্য করে তুলার পাশাপাশি নিজে নিজের কাজ অনুসন্ধান করা। এখন বাংলাদেশ নিয়ে জানাতে গেলে বলতে হয়, বাংলাদেশের পরিবেশ দু'তিন বছরে এতো পরিবর্তন হয় নাই যে, হঠাৎ কাজের খুব অভাব। সর্বদা শিক্ষা ব্যবস্থা ও সরকারকে দোষারোপের বাহিরেও নিজে কিছু করার চেষ্টা করা যায়। আমি সরকারের প্রশংসা করছি না। দেশে অবস্থান কালে সরকার আমার জন্য কিছু করে দিবে বা সমাজ আমাকে দাঁড় করাবে তেমনটা আমি আশা করিনি। ক্ষেত্রবিশেষে আমি বাধাগ্রস্তও হয়েছি। তবু কিছু করতে পেরেছিলাম আলহামদুলিল্লাহ। আপনারাও চেষ্টা চালিয়ে যান আত্মশক্তির সাথে। এই ক্ষুদ্র লেখাটারে মোডিভেশনাল ডায়লগ বইলা আপনি এড়িয়ে যেতে পারেন বা আমায় উল্টো কিছু নসিহত করতে পারেন। কিন্তু আপনার চিন্তাকে মুক্ত করার দায় আপনার নিজের।

ছবি: ফেবু
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×