somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তাজুল ইসলাম মুন্না
সাংবাদিকতা নিয়ে পড়ালেখা করছি। পাশাপাশি অনলাইন জার্নালিস্ট হিসেবে কাজ করছি দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডে। ব্লগে ফেরার ইচ্ছা বহুদিনের। একদিন হয়তো হুট করে আবারও রেগুলার হয়ে যাবো।

...সায়েন্স ফিকশন: টাইলাটিনে কয়েক মাইক্রোমাইক্রোন...

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাল ৭০৮৯৩... আন্তঃগ্যালাক্টিক যোগাযোগ মডিউল থেকে স্পষ্টভাবে অ্যান্ড্রোমিডার প্রতিনিধি ভল্টের উদ্দেশ্যে মিল্কিওয়ের প্রতিনিধি তৃণার ক্ষুব্ধ কন্ঠ শোণা গেলো, "আমাদের সমস্যা মানে? মিল্কিওয়ে থেকে আমরা অক্সিজেনের উপর নির্ভরশীল প্রাণীরা গত এক হাজার বছর ধরে নিয়মিত আপনাদের অ্যান্ড্রমিডার মিথেন নির্ভর প্রাণীদের মিথেন গ্যাস সরবরাহ করে আসছি। বিনিময়ে আপনারা আমাদের দিচ্ছেন কোটি কোটি গ্যালন অক্সিজেন। হঠাৎ করে আপনারা স্বাভাবিক যেকোনো মৌলের পারমানবিক সংখ্যা এবং গঠন বদলে মিথেন তৈরি করার সক্ষমতা অর্জন করেছেন বলে আমাদের অক্সিজেন দেওয়া বন্ধ করে দেবেন? আবার বলবেন সমস্যা আমাদের? পেয়েছেন টা কি! মজা নাকি হ্যা?"
ভল্টের ত্রিমাত্রিক প্রতিবিম্বটায় কিছুক্ষণের জন্য ভয়ের চিহ্ন দেখা গেলেও সে দ্রুত সেটা সামলে নিলো। সহজে মিল্কিওয়ের সাথে কোনোপ্রকার বিরোধে যাবার ইচ্ছে আপাতত তার নেই। সে জানে যে মিল্কিওয়েকে প্রতিনিধিত্ব করছে হোমো সেপিয়েন্স নামের একটি প্রাণী। এই বিশ্বভ্রক্ষ্মান্ডের সব গ্যালাক্সিকে রাজত্ব করে চলেছে এই হোমো সেপিয়েন্সরাই। তাদের কাছে এমন সব প্রযুক্তি রয়েছে যে তারা চাইলে মূহুর্তের মাঝেই বিশালাকৃতির ব্ল্যাকহোল তৈরী করে পুরো সৃষ্টিজগতকে সংকুচিত করে ফেলতে পারে। মিল্কিওয়ের ত্রিসীমানায় যাতে কোনোপ্রকার অবৈধ যান চলাচল করতে না পারে সেজন্য তারা পুরো গ্যালাক্সিকে ট্রিনাপিনের[1] একটি অদৃশ্য জাল দিয়ে ঘিরে রেখেছে। এরকম ক্ষমতাশীল একটা সম্প্রদায়ের সাথে বিরোধে যাওয়ার ফলাফল কিছুতেই ভালো হতে পারে না। তাই সে কাঁপাকাঁপা কন্ঠেই বললো, "ক্ষমা করবেন মহামান্য তৃণা। আমি আসলে এটা বোঝাতে চাইনি। আপনারা নূন্যতম অক্সিজেন ব্যবহার করে বেঁচে থাকার মতো প্রযুক্তি তৈরি করেছেন। আপনারা আপনাদের দেশের অতিরিক্ত অঙ্গাণুগুলোকে বাদ দিয়ে মস্তিষ্ককে সংকুচিত করে এতো ক্ষুদ্র করেছেন যে এক মাইক্রোলিটার অক্সিজেন দিয়ে আপনারা কয়েক বছর অনায়াসেই পার করে দিতে পারেন। আমি শুধু বলছিলাম যে..." বাধা আসলো তৃণার পক্ষ থেকে। আগের মতোই রাগাণ্বিত কন্ঠে বললো, "আমরা অক্সিজেন ব্যবহার কমাতে পারছি নাকি বাড়াতে পারছি তা নিয়ে আপনার এতো মাথাব্যথা কেনো? ওহ! আপনাদেরতো আবার মাথাই নেই। যা আছে তার কথাই বলি, আপনাদের সমস্যাটা কি? আমরা অক্সিজেন কতোটুকুন ব্যবহার করছি না করছি সেটা আমাদের ব্যাপার। আপনারা সরবরাহ কমানোর মতোন কথাতো বলতে পারেন না।"
বাধা পেয়ে ভল্ট স্পষ্টতই বিরক্ত হলো। বিরক্তি চেপে রাখার পূর্ণ চেষ্টা করেও তার ত্রিমাত্রিক প্রতিবিম্বে বিরক্তিটা স্পষ্টভাবে ধরা পড়লো, "মহামান্য তৃণা, আমাদের নতুন এই প্রযুক্তিটার পেছনে প্রচুর পরিমাণে শক্তির প্রয়োজন পড়বে। আপনাদের মিল্কিওয়ের নক্ষত্রগুলোর মতো আমাদের নক্ষত্রগুলোর এতো বেশি আয়ূও নেই। হয়তো আর কয়েক হাজার বছর পর আমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবো। দয়া করে আমার কথাটা বোঝার চেষ্টা করুন। এখন যদি আমরা আপনাদের কয়েকটা অক্সিজেন বোঝাই কার্গো না পাঠিয়ে সেটা ব্যবহার করে মিথেন আর আমাদের নক্ষত্রগুলোর জন্য হাইড্রোজেন তৈরি করতে পারি তাহলেই কেবলমাত্র আমাদের পরবর্তী প্রজন্মরা টিকে থাকতে পারবে। আপনারা মৃত্যুকে জয় করেছেন, অক্সিজেনের উপর নির্ভরশীলতাকে এতোটা কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। আপনাদের ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন জীব পৃথিবীর মতোন একটি ছোটো গ্রহতে বসবাস করতে পারে। আপনারা প্লিজ একটু দেখুন না আমাদের সহায়তা করতে পারেন কিনা।"
সরাসরি ভল্টের এমন অসহায়ত্ব দেখে তৃণা একটু ঠান্ডা হলো। "দেখি আমি বাকিদের সাথে কথা বলে কি করতে পারি।" বলে সে আন্ত:গ্যালাক্টিক যোগাযোগ মডিউলটা বন্ধ করে দিলো। পুরো কথপোকথনে সময় লাগলো মাত্র কয়েক মাইক্রোমাইক্রোন[2]। যোগাযোগ মডিউল বন্ধ করে .০০০০০০০০০০০১মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের থলথলে মস্তিষ্কটাকে ট্রান্সপোর্টারে করে কৃত্রিম মানবসৃষ্ট গ্রহ টাইলাটিন থেকে ৫৫০লাইনিং[3] গতিতে বৃহস্পতির দিকে নিয়ে যেতে লাগলো। ৫৫৫০ বছর আগে বৃহস্পতিতে হওয়া আলোচনা সভায় ৫৫৫০ বছর পরে পুরো মিল্কিওয়েজুড়ে অক্সিজেন নিয়ে যে স্বল্পতাটা তৈরি হবে সেই ব্যাপারটা সেখানে তাকেই উপস্থাপন করতে হবে।
[1]-> ‪#‎ট্রিনাপিন‬: অদৃশ্য একটি সম্প্রসারণশীল পদার্থ যেটি পুরো গ্যালাক্সিজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং সেই গ্যালাক্সির বাইরের যেকোনো উপাদান গ্যালাক্সিতে প্রবেশ করামাত্রই সেটাকে ধ্বংস করে দিতে পারে।
[2]-> ‪#‎মাইক্রোমাইক্রোন‬-> সময়ের ক্ষুদ্রতম একক। এক মাইক্রোসেকেন্ডের এক হাজার ভাগের এক ভাগ।
[3]-> ‪#‎লাইনিং‬ গতি: ১লাইনিং = আলো ১০ বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে।
[[[জীবনে প্রথমবারের মতোন ইউনিক সায়েন্স ফিকশন লেখার একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। কাহিনী কারোর মাথার উপ্রে দিয়া গেলে আমি কিছুই জানি না। আর দয়া কইরা কেউ এই গল্পে ক্যালকুলেটর নিয়া হিসাবে বসবেন না।]]

ইতিপূর্বে ফেসবুকে স্ট্যাটাস আকারে প্রকাশিত
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৭
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×