somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্ধকারের আলো

০১ লা মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক.
হার্ট-বিট ভীষণ বেড়ে যাচ্ছে। বুকের মাঝখানে কেউ যেন হাতুড়ি দিয়ে দ্রিম দ্রিম করে মারছে। আরেকটু হলেই হার্টটা বুক চিড়ে বেড়িয়ে আসবে। মাথাটাও ভীষণ ঘুরছে। সেই সঙ্গে ঘুরছে পুরো পৃথিবীটা। দু’চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। হাত দুটি ভয়ংকরভাবে কাঁপছে। পা দু’টোকে মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে ভারি বস্তু। এই বুঝি আমি ভূতলে লুটিয়ে পড়লাম। আলোর পৃথিবীটা ধীরে ধীরে অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। আমি কিছুই ভাবতে পারছিনা, কিছুই না...। অনেক কষ্টে অডিটোরিয়ামের দেয়ালটা ধরে থপাস করে সিঁড়িতে বসে পড়লাম। কিন্তু আমার এমন হচ্ছে কেন? কোন কারণে?? ও একটি ছেলের সাথে বসে আছে। তাতে আমার খারাপ লাগছে কেন? না না, বসে থাকলে খারাপ লাগবে কেন? ওর ওটাকে শুধু বসে থাকা বলা যাবেনা। ও গত চার পাঁচ বছরে আমার সাথেও এমন ঘনিষ্ঠভাবে বসেনি। দূর, কি ভাবছি, ও ঠিক মতোই বসেছে, আমি দূর থেকে কি দেখতে কী দেখেছি কে জানে? হয়ত ওর কোন বন্ধুর সাথে বসে আছে। সামনে ওর ফোর্থ ইয়ার ফাইনাল, হয়ত পরীক্ষা সংক্রান্ত কোন কথাই বলছে। না সে কি করে হয়, ওর ফ্রেন্ড হলেতো আমি চিনতাম। আইনের ওর ব্যাচের প্রায় সবাইকেই চিনি। তাহলে ঐ ছেলেটা কে? আত্মীয়-স্বজন এমনকি ওর আপন ভাইও হতে পারে। না না, তাহলে তো ও আমাকে বলত। কয়েকদিন আগে ওর এক কাকা এসেছিলেন, সেটা তিন দিন আগেই ও আমাকে বলে রেখেছিল। আর তার থাকা-খাওয়া, ঘুরা-ফেরা এমনকি বিদায় দেয়া সব আয়োজনই আমাকে করতে হয়েছিল। তাহলে কে এই ব্যক্তি? দূর, এত না ভেবে তার সামনা-সামনি গিয়ে পরিচিত হলেই ত পারি। কিন্তু ও তো আমাকে বলেছিল চারটার বাসে ঝিনাইদহ যাবে। এখন তো বিকাল সাড়ে চারটা, তাহলে ও এখানে কী করছে? আমাকে জানতেই হবে। যাই একটু উঁকি মেরে দেখি। না, আগের বার এদেরকে যতটা আন্তরিক আমার মনে হয়েছিল এবার দেখছি তার চেয়ে বেশি। বিকেলের সূর্যটা পশ্চিমে অনেকখানি ঢলে পড়েছে। মস্ত অডিটোরিয়ামটা ওদের মাথায় বিশাল ছাতা হয়ে ছায়া দিচ্ছে। পূর্ব দিকে মুখ করে বসে আছে ওরা দুজন। লোকটির ডান হাত ওর পিঠের ওপর দিয়ে ডান বাহু কিংবা তারও পরে চলে গেছে। অশান্ত দখিনা বাতাস ওর চুলগুলো উড়িয়ে লোকটার মুখের উপর ফেলছে। সেও দারুণ আদরে চুলগুলোকে সাজিয়ে দিতে ব্যস্ত। লোকটির সাথে তার সম্পর্ক বুঝতে আমার আর দেরি হলনা। এমন সময় কুচকুচে কালো একটি নিশান গাড়ি এসে থামল ওদের কাছাকাছি। ভেতর থেকে কাল চশমা পরা একটা লোক এগিয়ে গেল তাদের দিকে। সে তাদেরকে কিছু একটা বলল, কিন্তু কি বলল বুঝতে পারলামনা। তারপর লোকটা ওঠে দাঁড়ালো। আর তার হাত ধরে ওঠে দাঁড়াল শ্যামা, শামসুন নাহার শ্যামা। দুজন গাড়িতে গিয়ে বসল। ছোট্ট একটি শব্দে স্টার্ট নিয়ে গাড়িটি চলে গেল আমার দৃষ্টির আড়ালে, আরও আড়ালে, অনেক আড়ালে। আমার কেমন লাগছে জানিনা, তবে শুধু এটুকোই বুঝলাম, কেউ যেন আমার বুকের মাঝখান থেকে হৃৎপিণ্ডটা ছিনিয়ে নিয়ে গেল।

দুই.
এমনিতে অসহ্য গরম। তারপর চার তলার রুম গুলো একটু বেশিই গরম হয়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর। চার পাশের দেয়ালগুলো সারা দিন উত্তাপ সংগ্রহ করে রাতের বেলা অকৃপণভাবে বিলাতে থাকে। আর লোডশেডিংটাও হয় ঠিক সে সময়। তাই এ সময় কারো পক্ষে রুমে অবস্থান করা সম্ভব নয়। কিন্তু আমি অবলীলায় জিন্স, টি শার্ট, আর কেডস পরে শুয়ে আছি। বিকেলের ঘটনাটি আমার সব অনুভূতিকে ভোতা করে দিয়েছে। আমার শীত-গ্রীষ্ম, ঠাণ্ডা গরমের কোন অনুভূতি নেই। মোবাইল ফোনে সময় দেখলাম, রাত আটটা। ভাবলাম এতক্ষণে নিশ্চয়ই শ্যামা ফিরে এসেছে। ওর ফোনে রিং দিলাম। ও এয়ারটেল ব্যবহার করে। ব্যবহার করেনা আমিই করাই। ওর আর আমার এয়ারটেল সিম দুটি মেইন-গেট থেকে আমিই কিনে দিয়েছিলাম। আমাদের দুজনের নাম্বারে মাত্র দুটি ডিজিট ব্যবধান। আমার শেষ দুটি ডিজিট ৬৯ আর ওর ৭০। ফোন দিলাম। অটো রিপ্লাই আসল- “দুঃখিত, আপনার ডায়াল কৃত নাম্বারটি এখন বন্ধ আছে, কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করুন, ধন্যবাদ। The number you dialed is switched off.” বাংলালিংকে ফোন দিলাম-“আপনার ডায়াল কৃত নাম্বারে সংযোগ প্রধান করা সম্ভব হচ্ছে না। অনুগ্রহ করে কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করুন। The number you are calling cannot be reached, please try again latter, thank you. গ্রামীণ ফোনে দিলাম-“আপনার কাঙ্ক্ষিত নাম্বারটিতে সংযোগ দেয় সম্ভব হচ্ছেনা, একটু পরে আবার...” এছাড়া আমিতো ওর আর কোন নাম্বার জানিনা, এমনকি ওর রুমমেটদের নাম্বারও না, তাহলে কি করব? হঠাৎ মনে পড়ল ও একটা ডিজুস নাম্বার থেকে আমায় একদিন ফোন দিয়েছিল, দেখি সে নাম্বারে ট্রাই করে, 01722…, হ্যাঁ রিং হচ্ছে, টুউউট... টুউউট... কিন্তু No answer টুট টুট। কতবার ফোন করলাম জানিনা। এক সময় ফোনের চার্জ ফুরিয়ে গেল। হাত ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলাম, রাত সাড়ে দশটা। বিদ্যুৎ অনেক আগেই চলে এসেছে, ফ্যান লাইট অফ থাকায় বুঝতে পারিনি। উঠে কোন রকমে কেডস খুললাম, গা থেকে টি শার্টটি খুললাম, ইস, কি বিচ্ছিরি দুর্গন্ধ। ঘামে সব কিছু ভিজে একাকার হয়ে গিয়েছে। জিন্স আর খুলতে পারলাম না। আমার রুম লালন শাহ হল ৪৪০, টু সিটের রুম। রুমমেট বেশির ভাগ সময়ই বাড়িতে থাকে, তাই প্রায় সব সময়ই রুমে আমি একা থাকি। ফলে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই থাকতে পারি, কিছু বলার মত কেউ নেই। ধপাস করে খাটের ওপর গিয়ে শুয়ে পড়লাম। ফ্যান অন করার কোন ইচ্ছে হলনা, শুধু ভাবছি আজ বৃহস্পতিবার, কাল শুক্রবার, পরের দুদিন শনি- রবিবার কি যেন একটা সরকারি ছুটি। তিন দিন, তিন দিন ওর সাথে দেখা হবেনা। ও আল্লাহ আমি বাঁচবো কি করে?

তিন.
আজ শনিবার। ক্যাম্পাস বন্ধ, কোন তাড়া নেই, তাই ইচ্ছে করেই শোয়া থেকে উঠছিনা। গত দিনটি ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে দীর্ঘ আর কষ্টকর দিন। কিভাবে কাটিয়েছি আমি বলতে পারবনা। প্রায় সারাদিনই শ্যামার নাম্বারে ট্রাই করেছি। পাইনি। ওর সাথে পরিচিত হওয়ার পর এমন কোন দিনই যায়নি ওর সাথে কথা বলা ছাড়া। কোন শুক্রবার তো না-ই। আজকের দিনটিও হয়ত যাবে। কিন্তু কেন যেন গত কালের মত এত খারাপ আজ লাগছেনা। আমি বিষয়টা অনেকখানি মেনেই নিয়েছি। তার পরেও কেন যেন ফোনের দিকে নজর দিলাম। দেখলাম দুটো ফোনই চার্জের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। প্রথমে এয়ারটেল সিমের নকিয়া ২৭০০ ক্লাসিক সেটটা ওপেন করলাম। জানি শ্যামাকে ফোনে পাবনা তার পরেও রুটিন মত ওর সবগুলো নাম্বারে বেশ কয়েকবার করে ডায়াল করলাম। কিন্তু ফলাফল গত দিনের মতই। যাহোক, চার্জে রেখে গ্রামীণ সিমের নকিয়া ১১০০ অন করলাম। সঙ্গে সঙ্গেই ফোনটা বেজে উঠল। নাম্বারটিও আমার কেমন যেন চেনা চেনা মনে হল। আরও একবার ভালভাবে দেখলাম। হ্যাঁ, এই ফোনতো আমার মায়ের। ঠিক মা’র ফোন নয়, মা’র কোন ফোন নেই, ফোন যেটি আছে সেটি বাবার কাছেই থাকে। দরকার হলে বাবাই ফোন করেন। মা সেই সুযোগ খুবই কম পান। তাই মা পাশের বাসার চাচীর ফোন থেকে মাঝে-মধ্যে ফোন করেন। আসলে মা সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে প্রায়ই ফোন দেন। মা ওই সময়টায় ফজরের নামাজ পড়ে, কুরআন তিলাওয়াত করে কিছু অবসর পান। তার পর রান্না-বান্না করতে যান। আমি মা’র ফোন খুব একটা রিসিভ করতে পারতাম না। পারতাম না না, করতামনা। কারণ ঐ সময় আমার ডিউটি ছিল, ফোন করে শ্যামার ঘুম ভাঙ্গানো। আমি ঘুম থেকে ওঠার পর ফোন করে ওর ঘুম ভাঙ্গাবো, ও উঠে ফ্রেশ হয়ে এসে ফোন ব্যাক করবে। তারপর দুজনে সারা রাত কী স্বপ্ন দেখেছি তা নিয়ে আলোচনা করব, দিনের কর্মসূচী ঠিক করব, কী দিয়ে সকালের নাস্তা করব তা ডিসাইড করব, কোন পোশাক পরে বের হব তা চুজ করব ইত্যাদি। এর মাঝে যদি ও আমার ফোন ওয়েটিং পেত তাহলে ভীষণ রেগে যেত। তাছাড়া এ সময় সে ছাড়া আর কারো সাথে কথা বলতে আমারও ভাল লাগতনা। ঐ দিকে মা ফোন করেই যেত। বেশির ভাগ সময় ধরতামনা। মাঝে মাঝে ধরলেও খুব কড়া ভাষায় শাসাতাম-“তোমার দেখি আক্কেল-জ্ঞান কিছু নেই। সারা রাত পড়ার পর এই মাত্র ঘুমালাম তুমি আর ফোন করার সময় পেলেনা।” মাঝে মাঝে বলতাম কিছুক্ষণ পর আমার টিউটোরিয়াল, এখন রাখ পরে কথা বলব। পরে আর কথা বলা হয়ে উঠতোনা। তার পরেও মা কখনো পাশের চাচীর ফোন দিয়ে, কখনো অন্য কোন ফোন দিয়ে ফোন করেই যেত। মার ফোনে পাছে শ্যামার সাথে কথা বলা বিঘ্নিত হয়, তাই আমি আরেকটি ফোন কিনি। ফোন কেনার টাকার ব্যবস্থা অবশ্য মা-ই করেছিলেন। গত ছুটিতে বাড়িতে গিয়ে মাকে কাঁদো কাঁদ গলায় বলেছিলাম, “মা, সামনে আমার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা, অনেক টাকার বই লাগবে” মা কিছুই না জানতে চেয়ে বললেন, “কত টাকা”। বললাম “হাজার পাঁচেক।” মা যাওয়ার সময় আমার হাতে তার গলার চেইনটি ধরিয়ে দিয়ে বললেন, “তোর বাবা যেন না জানতে পারে।” পরে সে চেইনটি আমার এক বন্ধুর কাছে সাত হাজার টাকা বিক্রি করে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায় ফোন কিনেছিলাম, আর বাকি টাকায় দুজনে মন ভরে চাইনিজ খেয়েছিলাম। মা ফোন করে ডিস্টার্ব করতে পারেন, তাই তাকে এই নাম্বাটি দেইনি। মাকে আজ সে নাম্বার থেকে ফোন ব্যাক করলাম।“–হ্যালো, কেমন আছস বাবা” কথাটা শুনতেই আমার মনের ভেতর কেমন যেন করে উঠল। মা যেন আমার সব কিছু দেখতে পাচ্ছেন। আর যাই হোক মার সাথে মিথ্যে কথা বলা যাবেনা। –এইতো মোটামুটি, মা। –“তা বাবা ফোন দিলাম ধললি না যে, পড়ায় ব্যস্ত আছিলি বুঝি?” জ্বী মা, ব্যস্ত ছিলাম তবে পড়ায় নয়, তা যাহোক মা, প্রতিদিন বাবার ফোনে আমি ফোন করব। সকাল বেলা ফোন করে আমি তোমার ঘুম ভাঙ্গবো। তুমি উঠে নামায পড়ে আমার জন্য দোয়া করবা।” –“তোর লাইগা তো বাপ সবসময়ই দোয়া করি। মনোযোগ দিয়া লেহাপড়া কর, সকাল বেলা ঠিক-ঠাক মত খাইয়া নিস। – “ওকে মাম্মি, বাই বাই” –“কী বললি” –“কিছু না মা, ভাল থেক।” অনেক দিন পর মার সাথে প্রাণ খুলে কথা বললাম। মনটা অনেক হালকা হয়ে গেল। ওঠে খেতে গেলাম।

চার.
আজ রবিবার। আজও ছুটি। দুটি দিন গত হল ওর সাথে কোন কথা বলা ছাড়া। খুব একটা খারাপ লাগছেনা। নাস্তা শেষে টেবিলে এসে বসলাম। মনটা বেশ ফুরফুরে। ওর কথা আর বেশি মনে পড়ছেনা। হঠাৎ নজর গেল টেবিল ক্যালেন্ডারের ওপর। দেখলাম ১৫ মে তারিখটি লাল কালিতে গোল করে দাগ দেয়া আছে। সেটা ছিল শ্যামার অষ্টম “কান ফোঁড়ানো বার্ষিকী” । এভাবে ওর প্রথম শাড়ি পড়া দিবস, হলে উঠা দিবস, অভিমান দিবস, অভিমান ভাঙ্গানো দিবস, ইত্যাদি শত রকম দিবস আমার ডায়েরিতে লেখা আছে। প্রত্যেক দিবসেই আমি ওকে আমার সাধ্যের চেয়েও ভাল এবং বেশি কিছু দিতে চেষ্টা করতাম। টাকা-পয়সা নিয়ে আমাকে অবশ্য ভাবতে হত না । সে ব্যবস্থা আমি আগেই করে রেখেছিলাম। কম্পিউটারের কাজ-কর্ম মোটামুটি ভাল জানা থাকার পরেও বাবাকে বলেছিলাম কম্পিউটারের উপর একটা কোর্স করা প্রয়োজন। টাকা লাগবে প্রায় হাজার বিশেক। বাবা একটি গরু বিক্রি করে এককালীন আমাকে দশ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিয়েছিলেন আর প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে বেশি পাঠাতেন। সেই টাকার কারণেই ওকে আমার মানসম্মত কোন গিফট দিতে সমস্যা হতনা। সে কোন দিনই আমার কাছে কিছু চাইতনা। আমি অনেকটা ঝোর করেই তাকে দিতাম। দেয়ার পর সে অবশ্য বেশ খুশিই হত। এইতো কিছু দিন আগেও গিয়েছিল আমাদের প্রথম দেখা হওয়া দিবস। দিনটি ছিল ৪ঠা মার্চ। বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল মাঠে খেলা হচ্ছিল আইন ও ইংরেজির মধ্যে। আমাদের ইংরেজির ছেলেরা আইনের সমর্থকদের ব্যাপকভাবে টিজ করছিল। আইনের কিছু মেয়ে আমাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের ছেলেরা বলে উঠল, “ভুয়া, আইন ভুয়া”। আমি দুষ্টামি করে বললাম “সব ভুয়া না একটা ভাল আছে”। একথা বলতেই ও আমার দিকে তাকাল, আমিও তাকালাম, চোখে চোখে কি যেন কথা হল, সে মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেল। আমিও ওকে ফলো করতে থাকলাম। এর পর ওরা গিয়ে দাঁড়াল একজন পেয়ারা বিক্রেতার কাছে, আমিও সেখানে গেলাম। সাহস করে বললাম-“চলুন পেয়ারা খাওয়া যাক।” ও বলল “আমি একাতো খাবনা, আমার বন্ধুদের সবাইকে নিয়ে খাওয়াতে হবে”। তাই হোক। সবাই মিলে মজা করে পেয়ারা খেলাম। সাথে টুকটাক কথা বার্তা। হঠাৎই ও বলল “আপনার ‘যখন তোমার কথা মনে পড়ত’ কবিতাটি আমার অনেক ভাল লেগেছে”। “-তাই নাকি আপনি কি করে দেখলেন?” আমি জানতে চাইলাম। - আমার এক বান্ধবী ওই কাগজটাতে লিখেছিল, তার লেখা পড়তে গিয়েই আপনার কবিতাটি নজরে আসে, কবিতাটি আমার ও তার দুজনের বেশ পছন্দ ছিল, আর সেই একদিন আপনাকে আমাকে দেখিয়েছিল”। এভাবেই পরিচয়, তার পর ফোন নাম্বার বিনিময়, সারা রাত গল্প করা আরও কত কি! ও সময় ও থাকতো কুষ্টিয়ার হাউজিংয়ে, ওদের বাড়িতে। ও সময় ওর সাথে খুব একটা দেখা করতে পারতাম না। দুজন দুজনার ক্লাস ব্যস্ত। দৈনিক দু-পাঁচ মিনিটের বেশি কথা বলা সম্ভব হতনা। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম হল ছেড়ে দিয়ে কুষ্টিয়া শহরে থাকব। বাবা প্রায়ই বলতেন-“ইউনিভার্সিটি লাইফে হলে থাকার কোন বিকল্প নেই। হলে থেকে না পরিস, বসে বসে ঘুমবি, তবু অনেক কিছু শিখতে পারবি”। আমি সেই শেখা কে শিকায় তুলে চলে গেলাম কুষ্টিয়া। ও অবশ্য প্রথম প্রথম নিষেধ করেছিল, পরে আমি যাওয়াতে অনেক খুশি হয়েছিল। এর পর প্রায় বিকেলেই দুজনে ঘুরে বেড়িয়েছি গড়াই নদীর তীর, হেঁটেছি লালনের আখড়াতে, দেখেছি রবী ঠাকুরের কুঠি বাড়ি। এভাবে আমি ওর সাথে তখন খুব দারুণ সময় কাটাচ্ছিলাম। ওর যে কোন প্রয়োজনে ছুটে যেতাম আমি। ও না চাইলও ওর বিভিন্ন কাজে লাগার চেষ্টা করতাম আমি। সেটা হতে পারতো ওর আইসক্রিম খেতে ইচ্ছে করেছে, সাথে সাথেই আমি ছুটছি আইসক্রিম নিয়ে, এমনকি মাঝরাতে ও, কখনো ও সালাদ তৈরি করতে গেছে শসা নেই, শুনতে পাওয়া মাত্রই শসার ব্যবস্থা করেছি। আমার এরকম পাগলাটে আচরণে প্রথমত ও রাগ দেখালেও কার্যত দারুণ খুশি হত এবং মিষ্টি করে একটি হাসি দিত। তার ঐ হাসির জন্য আমি পৃথিবীর যেকোনো কিছু করতে পারতাম। এই দিকে বাবার কানে চলে গেল আমার কুষ্টিয়া যাবার খবর। তাতে বরং ভালই হল বাবাকে বোঝালাম “হলে লেখা পাড়ার পরিবেশ নেই, সারাদিন কেবল রাজনীতি আর আড্ডা। ইংরেজি তো আর পাঁচটা সাবজেক্টের মত নয় সারা দিন অনেক পড়তে হয়। তাই হল ছেড়ে শহরের মেসে চলে এসেছি। এই ফাঁকে বাবার কাছে আরও বেশি টাকার পাঠানোর দাবি পৌঁছে দিলাম। ও ছিল আমার ফাস্ট, সেকেন্ড, থার্ড সব সাবজেক্ট। পড়াশোনাটা ছিল ফোর্থ সাবজেক্ট, নন ক্রেডিট। এভাবে কোন রকমে সেকেন্ড ইয়ার ফাইনাল শেষ করলাম। টের পেলাম রেজাল্ট আউট হওয়ার পর। পজিশন থেকে বহু দূরে ছিটকে পরে শেষ যাত্রায় কোন রকম পাশ করলাম। কিছু দিন পর ওর আইনের দ্বিতীয় বর্ষ চূড়ান্ত ফলাফল বের হল। ও হল ১ম শ্রেণীতে দ্বিতীয়। পড়াশুনার প্রতি অত্যন্ত আগ্রহী হয়ে উঠল। আর তাই সে সিদ্ধান্ত নিল হলে উঠবে। তাই আমাকে বাধ্য হয়েই কুষ্টিয়া জীবনের ইতি টানতে হল।

পাঁচ.
আজ বুধবার। গত পাঁচ দিনে ওর সাথে আমার কোন কথা বা দেখা সাক্ষাৎ হলনা। খবর নিয়ে জানতে পারলাম ও ক্যাম্পাসেও আসছেনা। কেন জানি আমার মনে হল ও যেখানে আছে ভাল আছে। তাই এর চেয়ে বেশি কিছু জানতে ইচ্ছে হলনা। ক্যাম্পাস থেকে হলে আসলাম। দুপুরের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যাব। এমন সময় আমার ফোন বেজে উঠল। ফোনের রিংটোন শুনেই আমার মনের ভেতর কেমন যেন করে উঠল। তাড়াতাড়ি ফোন বের করলাম। নাম্বার টি দেখে আমার দু’চোখ দিয়ে অশ্রুর বন্যা বয়ে যেত লাগল। ফোন করেছে আমার ছোট বোন। আমার প্রাণ প্রিয় ছোট্ট দিদি মনি। ও গত এক বছরে আমাকে কখনো ফোন করেনি। হয়ত রাগ করে। আর আমিও কখনও ওর সেই রাগ ভাঙ্গাতে যাইনি। গত বছর মে মাসে ওর বিয়ে হয়েছে। বিয়ের তারিখটা বাবা এমনভাবে ঠিক করেছিলেন যাতে আমি ওর বিয়ের সময় ঠিকঠাক মত থাকতে পারি। বাবার বড় ছেলে হিসেবে আমার একমাত্র বোনের জন্য অনেক কিছু করার ছিল। বর পক্ষের সাথে আলাপ করা, আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত দেওয়া, অনুষ্ঠানের আয়োজন করা, বোনকে তুলে দেয়া আরও কত কি। মা অসহায়ের মত বসে আমার পথ পানে চেয়ে থাকতেন। বাবা ফোন দিতেন –“তোর তো ক্যাম্পাস ছুটি হয়ে গেছে, আর বিয়ের মাত্র সাতদিন বাকি, তুই তাড়াতাড়ি আয়। বাবার সেই আকুল আদেশ আমি অবলীলায় অগ্রাহ্য করলাম। আমি বাবাকে বিরক্তির সাথে বললাম, “আমি পড়াশোনায় অত্যন্ত বিজি। আপনি যেভাবে পারেন সামলে নেন। তাছাড়া আমি এসে কি করব বিয়ে তো আর আমার হচ্ছেনা”। আমি বাড়িতে থাকাকালে যে বোন আমাকে রেখে একবেলা খাবার খেত চাইতনা, যে ভাইয়া বলতেই অন্ধ ছিল সে বোনটির জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমি যাচ্ছিনা এজন্য আমার ভেতরে কোনরূপ দুঃখবোধ অথবা অপরাধ-বোধ কাজ করেনি। কারণ শ্যামা। ওর তখন থার্ড ইয়ার ফাইনাল শেষ। অনেক পড়াশোনা করেছে, এবার একটু রিলাক্স করবে ঘুরা-ফেরা করবে আর এমন সময় আমি না থাকলে কি চলে? ফোনটা রিসিভ করলাম। –“হ্যালো ভাইয়া, ভাল আছিস? –“হুম ভাল, তোর কি খবর” –“ভাইয়া তুই কি পড়াশুনায় খুব বিজি? –“কেনরে বুবু? –“না মানে গত সামার ভেকেশনে তো আসতে পারিসনি, পড়াশুনায় অনেক বিজি ছিলি; এবার কি আসতে পারবি আমার প্রথম বিবাহ বার্ষিকীতে?” কথাগুলো আমার বুকে বিষাক্ত তীরের মত এসে বিধল। –“শোন আমি যতই বিজি থাকিনা কেন ছুটি হওয়া মাত্রই তোর বাড়িত চলে আসব। তোদের ক্ষেতের কাঁচা মরিচ আর তোর হাতের ডিম ভাজি দিয়ে ভাত খাব”।

ছয়.
আজ শুক্রবার। সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসলাম। বিগত সাতটি দিনে নিজেকে অনেক গুছিয়ে নিয়েছি। শ্যামা সংক্রান্ত কোন ব্যস্ততা না থাকায় নিজের প্রতি অনেক বেশি মনোযোগ দিতে পেরেছি। এলোমেলো পড়ার টেবিলটা গুছিয়ে ফিটফাট করেছি। ভাল না লাগলে মার সাথে কথা বলেছি; বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আড্ডা মেরেছি। শ্যামা শ্যামা করতে করতে আমি এক সময় একদমই বন্ধুহীন হয়ে পড়েছিলাম।পুরাতন বন্ধুদের সাথে নতুন করে যোগাযোগ করছি, কথা বলছি, আড্ডা মারছি। তখন বুঝতে পারলাম, কি দারুণ একটা ব্যাপার আগে কি মিসইনা করেছি। আলো ভেবে কালোর পেছনে ছুটেছি। ব্যাংকে কিছু টাকা ছিল, আর একটি ভাল টিউশনি পেয়েছি। তারা এ্যডভান্স হাজার দুয়েক টাকা দিয়েছে। তা দিয়ে মায়ের চেইনটা যে বন্ধুর কাছে বিক্রি করেছিলাম তার কাছ থেকে ফেরত নিলাম। আমার দুটি ফোনের কোন দরকার নেই। এর একটি মাকে দিয়ে দেব। এসব ব্যাপার যখন মনের সমুদ্রে ঝড় তুলছিল তখ্নই ঠিক তখনই মা ফোন দিলেন। মার সাথে কথা বললাম –“মা আমার কম্পিউটার ট্রেনিং শেষ, বাবাকে বল আর বাড়তি টাকা পাঠাতে হবেনা, আর তোমার জন্য একটি ফোন আর আরেকটি বিশেষ জিনিস নিয়ে আসছি”। ছোট বোনকে ফোন দিলাম –“লক্ষ্মী বোন আমার, আমি কিন্তু এবার সবার আগে তোর বাসায় আসব, ডিম কিন্তু আগে আগে ভেজে রাখবি। এখন আমার অনেক ভাল লাগছে। মনে হল মহাসমুদ্রের মাঝখানে ডুবতে ডুবতে একখানি তক্তায় জীবন ফিরে পেলাম। আমি আর ডুবতে চাইনা, আমি বাঁচতে চাই, বাঁচার মতো বাঁচতে চাই। জীবনে অনেক ভুল করেছি, আর নয়, সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিতে চাই। বাবা তোমার সাথে অনেক মিথ্যে বলেছি, বাবা কান ধরলাম আর কোন দিন এমন কাজ করবনা। বাবা আমি আবার তোমার সেই ছোট্ট খোকা হতে চাই। এসব কথা যখন ভাবছিলাম তখন ফোনের ভাইব্রশনে সম্বিত ফিরে পেলাম। ফোন করেছে। শ্যামা ফোন করেছে। আমি একটুও চমকালাম না, অবাকও হলাম না। যার ফোনের জন্য আমি একসময় পাগল প্রায় ছিলাম, যার ফোন আমার কাছে সবচেয়ে দামী ছিল; সেই শ্যামার ফোন রিসিভ করার আমার কোন ইচ্ছে হলনা। ফোন কেটে গেল। সে আবার ফোন করল। এবার ধরলাম, ঐ প্রান্ত থেকে উচ্ছ্বাসিত কণ্ঠে এক নাগাড়ে বলে যেত থাকল – “এই থাকিস কোথায়? ফোন ধরিসনা কেন? জানিস দারুণ একটা ঘটনা ঘটে গেছে। তোকে জানাতে আমার একদমই মনে ছিলনা। শোন, দারুণ ব্যাপার বুঝলি? ফেসবুকে পরিচয়; তার পরদিন দেখা; সাত দিন প্রেম; তার পর বিয়ের সিদ্ধান্ত। জানিস ছেলেটা সহকারী জজ, গতবার নিয়োগ পেয়েছে। দেখেতে যে কী হ্যান্ডসাম। জানিস, ঢাকায় ওর ফ্লাট আছে, আছে গাড়িও। শোন, আগামী ১৫ তারিখ শুক্রবার আমাদের বিয়ে। তোর কিন্তু অনেক কাজ। ঠিক সময়ে চলে আসবি, একদমই ভুল করবিনা যেন”। ওর কথা শুনে আমার ভাল অথবা খারাপ কিছু লাগলনা শুধু বললাম, “অনেক ভুল করেছি শ্যামা আর না। দুঃখিত আমার পক্ষে তোমার বিয়েতে থাকা সম্ভব নয় কারণ সে দিন আমার বোনের ম্যারেজ এনির্ভাসারি। ভাল থেক শ্যামা, আল্লাহ হাফেজ।”

সাত.
গ্রীষ্মের ছুটি হয়ে গিয়েছে। সবাই ছুটছে ভালবাসার টানে বাড়ি ফেরার মিছিলে। আমিও আজ শামিল সেই দলে। বাসস্টান্ডে যেতে যেতে ভাবছি শ্যামার কথা। ওকে আমি কোন দিন ‘না’ বলতে পারিনি; যা চেয়েছে, যেভাবে চেয়েছে সব কিছু সেভাবেই হয়েছে। ওর সাথে চলতে গিয়ে কখন যে আমি আমার আমিকে হারিয়ে ফেলেছি তা বুঝতেই পারিনি। সেটা ছিল আমার চরম অক্ষমতা। আজ নিজের হারানো সক্ষমতা ফিরে পেয়েছি। আমার আমিত্বকে দারুণভাবে অনুভব করছি। সে সাতটি দিন শ্যামার সাথে আমার যোগাযোগ ছিলনা তখন ওর বিচ্ছেদ আমাকে কিছু মুহূর্তের জন্য অন্ধকারে ডুবিয়ে দিয়েছিল ঠিকই কিন্তু সে অন্ধকারে থেকেই বুঝলাম “আগে আমি কত ভয়ংকর অন্ধকার জীবনে ছিলাম”। ওই সামান্য সময়ের অন্ধকার আমার বাকি জীবনের জন্য আলো হয়ে এল। ওই সাতদিনে ধীরে ধীরে ফিরে পেলাম আমার চিন্তা, চেতনা, অস্তিত্ব, অনুভূতি, অহংবোধ, দায়িত্বজ্ঞান এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিচারক আমার বিবেক। বাস প্রায় ছেড়ে দিয়েছে, দৌড়ে গিয়ে কোন রকমে বাসে উঠলাম। বাস ছেড়ে দিল। শ্যামার কোন স্মৃতিই আমাকে পেছনে টেনে রাখতে পারলনা। বাস সামনে এগিয়ে চলছে, আমি দেখতে পাচ্ছি উজ্জ্বল আগামীর অফুরন্ত সম্ভাবনা, অনুভব করছি বন্দ্ত্বি থেকে মুক্তির প্রশান্তি।


০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×