ব্লগে যখন কিছু লিখি, অনুভব করি যেন আমি আমার কথা গুলো ছড়িয়ে দিচ্ছি, যা দিনের পর দিন জমে জমে মনের আকাশটাকে অন্ধকার করে দেয়। লেখাগুলোর কাছে আমি কিছু চাই না, আমি জানি ওরা কতগুলো বোবা অক্ষর। তবু ওদের মাঝে আমার জন্য ভালবাসা খুঁজে পাই। ওরা আমার কথা অন্তত শোনে, বোঝে কি না জানি না। বুঝুক বা না বুঝুক আমি ওদের সাথে কথা বলি, ওরা আমাকে নিরাশ করে না। আশাহতের বেদনায় বার বার নীল করে দেয় না। এই বা কম কি!
আমার কথাগুলোর শোনার মত কাউকে আমি এক মুহুর্তের জন্য পাই না, এখন আর বলবারও ইচ্ছা হয় না। হতে পারে আমি কাউকে আমার কাছে ঘেষতে দেই না। এক সময় আমার ধারনা ছিল পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষের জন্য অন্তত একজন থাকে যে হয় সব অস্ফুট বেদনা, অব্যক্ত কথার সঙ্গী। রূঢ় বাস্তবতা আমারকে শিখিয়েছে এসবই ভ্রম ছাড়া কিছু নয়। সবাই তার নিজের, কেউ কারো নয়। তা হোক সে বাবা-মা, ভাই-বোন, বন্ধু কিংবা ভালবাসার মানুষ। কেউ নিঃস্বার্থভাবে ভালবাসে না।
একটা জিনিস আছে যে নিঃস্বার্থভাবে ভালবাসা দেয়। কেউ সেটাকে ভালবাসলে সেও নিঃস্বার্থভাবে ভালবেসে যায়। আমার পৃথিবীটা আগে অনেকটাই বইময় ছিল। দিন রাত বইয়ের মাঝে ডুবে থাকতাম। স্কুলের পড়া শেষ করে বাকি সময় ডুবে থাকতাম বইয়ের মাঝে। সেই রাজ্যে যথেষ্ট প্রশান্তি ছিল। তবু বাস্তবতার গ্লানি যে কখনও আঘাত হানত না তা না। প্রশান্তির উৎস হিসেবে তাও ছিল বই। বই যে জীবনের সবথেকে ভাল বন্ধু হয়ে উঠতে পারে সে উপলব্ধি তখনও ছিল, তবে এখন সেটা অনেক তীব্র হয়ে প্রকাশিত হচ্ছে।
অনেক দিন হল কলেজে যাই না পড়তেও বসি না। ইচ্ছে হয় অনেক দূরে কোথাও চলে যাই। এখন বইয়ের মাঝে ডুবে থাকি। কিছু ভাল লাগে না রোগের মাঝেও বই আমাকে যে প্রশান্তি দেয় তা স্বর্গীয় বলাই ভাল। আজকে সমরেশ মজুমদার আর সিডনি শেলডেন এর বেশ কয়েকটা বই কিনলাম। কয়েকদিনের আহার জুটে গেল।
শেষে কিছু কথা : প্রায় ৭-৮ মাস আগে ডায়েরীতে কয়েকটা লাইন লিখেছিলাম, "ডায়েরীটার যদি কোন অনুভূতি থাকত নিশ্চয়ই সেও এতদিনে আমার উপরে বিরক্ত হয়ে যেত।" এখন নিজেই ডায়েরীটাকে বিরক্ত করা বন্ধ করে দিয়েছি। আজকে এই কথাটা ব্লগের জন্য রইল। হয়ত সে একদিন বিরক্ত হবে, সেদিন ডায়েরীর মত সেও আমার থেকে দূরে চলে যাবে, আমিই দূরে ঠেলে দেব। আমার হাত থেকে মুক্ত হবে ব্লগটা। মাঝে মাঝে মায়ার টানে দূর থেকে এসে দেখে যাব হয়ত।
পৃথিবীতে মানুষ একা আসে, একা যায়। তার মাঝে কিছুটা সময় একা না থাকার অভিনয়। তাই মাঝের সময়টাও একা থাকার অভ্যাস করাই ভাল।
এই শেষ লাইনগুলো কেন লিখলাম জানি না।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১১ রাত ২:৩১